শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
অ্যাডভোকেট আলিফের কবর জিয়ারত ও পরিবারের পাশে হেফাজতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ  প্রাইমারি স্কুলে আলেম ধর্মীয় শিক্ষক বাধ্যতামূলক করতে হবে: মাওলানা ইসলামাবাদী বগুড়ায় ছাত্র আন্দোলনে আহত ও শহীদদের স্মরণে স্মরণসভা শেরপুরে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহিদদের স্মরণে স্মরণসভা শেরপুরে শেখ হাসিনাসহ ৫৯ জনের নামে মামলা কাল বাদ জুমা বায়তুল মোকাররমে হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে যা বললেন জামায়াত আমীর হজ নিবন্ধনের সময় বাড়ল ১৫ দিন রাষ্ট্রদ্রোহী সংগঠন চলতে দেয়া হবে না: মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী ২২৫০০ কোটি নতুন টাকা ছাপিয়ে ৬ ব্যাংককে দিল বাংলাদেশ ব্যাংক

'ইফতারির সময় আমরা বাবার আত্মার জন্য দোয়া করি'

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম : বারা ও জয়নব। দুই বোন। বয়স যথাক্রমে ৭ ও ১১ বছর। সিরিয়ার ডুমা শহরের অধিবাসী তারা। ঘর ছেড়েছে গত এপ্রিলে। এখন সিরিয়ার ইদলিব শহরে আশ্রয় নিয়েছে তাদের পরিবার।

অবশ্য সরকারি বাহিনীর ব্যারেল বোমার আঘাতে তারা তাদের বাবাকে হারিয়েছে ২০১৬ এর অক্টোবরে। হাসপাতালে তাদের চোখের সামনে তাদের বাবার মৃত্যুর হয়। এমন বহু নির্মমতার সাক্ষী এ শিশুদ্বয়।

পিতৃহীন নির্বাসিত তাদের জীবন সংগ্রাম, তাদের মৃত বাবা, মায়ের প্রচেষ্টা ও ভবিষ্যতের কথা উঠেছে এ সাক্ষাৎকারে।

-ইদলিবে তোমাদের কেমন লাগছে?
জয়নব : আমি এ শহরকে ভালোবাসি। এখানে কোনো সংঘাত ও বোমা নেই। আমরা আমাদের রুমে ঘুমাতে পারি এবং চাইলে খাবার পাই। পূর্বে আমরা ফল খেতে পারতাম না। এখানে তা পাচ্ছি।

-ডুমার কোন জিনিস তোমাদের মনে পড়ে?
বারা : আমি আমার বাবাকে মিস করি। তার চিন্তা কখনো মাথা থেকে দূর করতে পারি না। ঘুমের সময় বাবাকে বেশি মনে পড়ে। তিনি আমাকে তার বুকে জড়িয়ে ঘুমাতেন।

জয়নব : আমার বাবাকে মিস করি। তিনি আমাদের চুমু খেয়ে আদর দিয়ে ঘুম পাড়াতেন। আমরা ঘুমানোর আগ পর্যন্ত আমাদের সাথে খেলতেন। বাবা আমাদের অনেক যত্ন নিতেন এবং তিনি ছিলেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বাবা। তাকে আমার মনে পড়ে এবং পৃথিবীর কোনো কিছুই তার মতো হবে না।
আমি আমার স্কুল ও শিক্ষকগণকেও খুব মিস করি। এমন আন্ডারগ্রাউন্ডের স্কুলটিও। যেখানে আমি দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করতাম।

-ডুমায় তোমরা রমজান কিভাবে কাটাতে?
বারা : মনে পড়ে আমরা যখন ঘরে ফিরতাম মা আমাদের জন্য খাবার প্রস্তুত করতেন। আর বাবা যখন আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন ইফতার ও প্রত্যেক নামাজের সময় তার আত্মার জন্য দোয়া করতাম।

-এখানে তোমরা রমজানে কি কর?
বারা : এখানে কোনো স্কুল নেই। সারা দিন মায়ের সঙ্গে কাটাই। ঘরের কাজে তাকে সাহায্য করি। কাজ শেষে মা আমাকে কুরআন শেখান। আমরা এক সঙ্গে দোয়া করি। দিনের কিছু সময় আমি ঘুমাই এবং রাস্তায় বন্ধুদের সঙ্গে খেলি।

-তোমরা কি পর্যাপ্ত পরিমাণ ইফতার পাও?
বারা : এখানে সব কিছু পাওয়া যায়। আমার মা এখানে একটি এনজিও-তে কাজ করেন। তারা আমাদের খাবার সরবারহ। খুব বেশি পরিমাণ না। আমরা এক সামান্য পানি এবং নির্ধারিত পরিমাণ খাবার পাই। মা আমাকে সব সময় বলেন, এ খাবার ও পানীয়তেই সন্তুষ্ট থাকি।

জয়নব : এখানে যে খাবার আমাদের সরবারহ করা হয় তা মন্দের ভালো। মা আমাদের বলেন, তোমরা সেসব মানুষের কথা ভাববে যারা ইফতারের জন্য এক টুকরো রুটিও পায় না। এখানের সবাই সবার দুর্বিষহ জীবন, পরিবার, স্বাস্থ্য ও জীবনের সমস্যাসমূহের জন্য দোয়া করে। আমরা আমাদের বাবার জান্নাত লাভের জন্য দোয়া করি।

-ধর্ম বিশ্বাস তোমাদের কোনো সাহায্য করে?
জয়নব : বর্তমানে আমরা যে অবস্থার মধ্যে রয়েছি তা আমাদের বিশ্বাসী হতে ও স্রষ্ট্রায় স্থাপন করতে সাহায্য করে। আমরা যে অবস্থাতেই থাকি না কেনো? যেমন আমার বাবা মারা গেছেন। যখন এমন কথা আমাদের মনে পড়ে, আমরা হতাশ হয়ে যাই, ভবিষ্যতের কথা মনে হয় আমরা অভিযোগ না করে ভাবি এসব হচ্ছে ভালোর জন্য। আল্লাহ আমাদের কল্যাণ চান। যা আমরা লাভ করবো।

-ভবিষ্যতে তুমি কি
বারা : আমি আশা করি একদিন বাবা আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন। আমি আমার বন্ধুদের সাথে সুন্দর জীবন কাটাতে পারবো। আর লেখাপড়া করে আমি একজন অংকের শিক্ষক হবো। কারণ আমি গণিত ভালোবাসি।

সূত্র : মিডল ইস্ট আইয়ে প্রকাশিত গাজী আনতেপের সাক্ষাৎকারের আংশিক অনুবাদ করেছেন আতাউর রহমান খসরু


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ