মোল্লা আইয়ুব: মাহে রমজানের অন্যতম একটি আমল সলাতুত তারাবি বা তারাবির নামাজ।
আজকের সমাজে তারাবি শব্দটা শুনলেই চোখের সামনে তাড়াহুড়া আর অস্থীরতার একটা দৃশ্য ভাসে।যেন তারাবির সালাত মানেই তাড়াহুড়া করা;রুকু-সিজাদগুলো দ্রুতগতিতে সম্পন্ন করা।আর কুরআন তেলাওয়াতটা পাইভ-জি গতিতে চালানো।
অথচ সামাজকে তখনই নামাজ বলা যায়, যখন নামাজ আদায়কারী একাগ্রচিত্তে বিনয় ও নম্রভাবে মহান আলল্লাহর সামনে দণ্ডায়মান হবে।অন্যথায় তা নামাজ হিসেবেই গণ্য হবে না।
মহান আল্লাহর সামনে কীভাবে দাড়াতে হবে, পবিত্র কুরআনুল কারিমে সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে "আর তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে দণ্ডায়মান হবে বিনীতভাবে" (সুরা বাকারা;২/২৮৮)। আল্লাহ সুবহানাহ আরো বলেন " ঐ সকল মুমিনগণ সফল, যারা তাদের নামাজে বিনম্র হয়"(সুরা মুমিনুন;২৩/১-২)।
নামাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ কুরআনুল কারিম তেলাওয়াত(পাঠ)।তারাবির নামাজে এমন ভাবে তেলাওয়াত করা হয় যে, কখনো কখনো কুরআনের শব্দ বিকৃত পর্যন্ত হয়ে যায়। এমনটা হলে পুণ্যের পরিবর্তে বরং পাপ ই পাওয়া যাবে।
পবিত্র কুরআন কীভাবে তেলাওয়াত করতে হবে, তার দিকনির্দেশনাও কোরআনে আছে।মহান আল্লাহ বলেন, "আর তুমি কুরআন পাঠ কর ধীরে ধীরে,সুস্পষ্টভাবে" (সুরা মুজ্জাম্মিল;৭৩/৪)।
তাই আমাদের উচিৎ, ফরজ-ওয়াজিব-সুন্নত-নফল ও তারাবি সহ সকল নামাজগুলো বিনয়াবনত হয়ে,নম্রতার সাথে ধীরস্থিতে আদায় করা।
অন্যথায় এ সালাত হবে নিষ্ফল;অর্থক। এবং কখনো কখনো পাপের কারণ! মহান আল্লাহ তায়ালা মুনাফিকদের কপটতা সম্পর্কে বলেন, "আর যখন তারা সালাতের উদ্দেশ্যে দাড়ায়,তখন তারা অলসতার সাথে দাড়ায়,লোক দেখানোর জন্য। আর তারা আল্লাহকে অল্প ই স্বরণ করে"(সুরা নিসা;৪/১৪২)।
রাসুলুল্লাহ স. বলেন,সব চেয়ে নিকষ্ট চোর সে ব্যক্তি, যে নামাজ চুরি করে।সাহাবীগণ বললেন,ইয়া রাসুলাল্লাহ! সে কীভাবে নামাজ চুরি করে?(উত্তরে) তিনি বলেন,
সে রুকু-সিজদাহ পরিপূর্ণ ভাবে করে না (মুসনাদে আহমাদ ৫/৩১০, মেশকাত হাদীস নং ৮৮৫)।
রাসুলুল্লাহ স আরো বলেন, "কোনো ব্যক্তি রুকু-সিজদায় যে পর্যন্ত না তার পৃষ্ঠদেশ সোজা করবে, ততক্ষণ তার নামাজ যথার্থ হবে না"(সুনানে আবু দাউদ,তিরমিজি)।
সুতরাং আমাদের সচেতন হওয়া উচিৎ, যাতে আমাদের আমলগুলো যথা সম্ভব উত্তমরূপে ত্রুটিহীন করতে পারি।এবং অধিক পূণ্য অর্জন করতে পারি। আমীন!
আরো পড়ুন- রোজার সময় মুসলিমদের ছুটি নিতে বলে বিপাকে ডেনিশ মন্ত্রী