আওয়ার ইসলাম: হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির ও জামিয়া আহলিয়া দারুল উলুম হাটহাজারীর মুহতামিম শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী ও মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী একযুক্ত বিবৃতিতে বলেছেন, ইসলামের মৌলিক পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে রমজানে সিয়াম পালন করা একটি ফরজ ইবাদত।
রোজার মাধ্যমে সংযম সাধনার লক্ষ্যই হলো তাকওয়া অর্জন। হাদীসে কুদসীতে ইরশাদ হয়েছে, আল্লাহ তা’আলা বলেন, রোজা আমার জন্য, আমি নিজেই এর প্রতিদান দেব।
রাসুল সা. ইরশাদ করেন, রমজান মাসে যে একটি ভালো কাজ করল সে একটি ফরজ আদায় করল। আর যে একটি ফরজ আদায় করল সে ৭০টি ফরজ আদায় করল।
মাহে রমাজানে ইবাদতের মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর সন্তুষ্টি র্অজন করতে সক্ষম হয়। রমজান হলো বরকতময়, কল্যাণময়, অফুরন্ত রহমতের মাস।
হেফাজত নেতৃদ্বয় বলেন, পবিত্র রমজান তাকওয়া অর্জন ও মুত্তাকী হওয়ার মাস। মুমিনগণ রোজা রেখে হিংসা, বিদ্বেষ, দুর্নীতি, মিথ্যা, জুলুম, ঠকানো, চুগলখোরী, অযথা আলোচনা, বেহায়াপনা, অন্যায় কাজসহ সব রকম পাপ কাজ থেকে বিরত থাকার চেষ্টা চালায়।
রাসুল সা. বলেন, যে ঈমানদারী ও আত্মসমালোচনার সাথে রোজা রাখবে আল্লাহ তার আগের সব গুণাহ ক্ষমা করে দিবেন। রোজা মানুষের মধ্যে আল্লাহর ভয় সৃষ্টি করে। যে কেউ ইচ্ছে করলেই লোক চক্ষুর অন্তরালে পানাহার করতে পারে কিন্তু প্রকৃত রোজাদার তা করে না একমাত্র আল্লাাহর ভয়ে।
রোজার মাধ্যমে মানুষ তাকওয়া অর্জন করে, মিথ্যা বর্জন করে এবং সত্য বলতে অভ্যস্ত করে। তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমে অপরাধমুক্ত ও দুর্নীতিমুক্ত আদর্শ সমাজ গঠন সম্ভব। আদর্শ কল্যাণময় সমাজ গঠনের প্রধান শর্ত হচ্ছে মানুষের আত্মশুদ্ধি। তাই রমজানে শিরক বিদআত এবং সকল কুসংস্কার ও অপসংস্কৃতি থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখার চেষ্ঠা করুন।
তাকওয়া অর্জন করলেই সমাজ থেকে সকল প্রকার অন্যায় অনাচার দূর হবে। কেননা মানুষের মধ্যে যদি খোদাভীতি ঢুকে পড়ে তখন সে মানুষ অপরাধ করতে পারে না।
তারা বলেন, পবিত্র কুরআন নাজিলের মাস রমজান। আল্লাহ মানুষের হেদায়তের জন্য পথনির্দেশনার বিস্তারিত বর্ণনাসহ সত্য মিথ্যার পার্থক্যকারী হিসেবে এই মাসেই কুরআন নাজিল করেছেন। তাই কুরআন নাজিলের মাস রমজানে রহমত, বরকত এবং মাগফিরাত কামনায় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ও ২০ রাকায়াত তারাবিহ জামায়াতে আদায় করা, বেশি করে কুরআন তিলাওয়াত ও নফল ইবাদত করা ঈমানদারদের জন্য অতীব জরুরী।
রমজানে কুরআন তেলাওয়াতের কারণে আল্লাহর রহমত নাজিল হয়। এতে সমাজ ও রাষ্ট্র শান্তি লাভ করে। তারা বলেন, সাধারণ রয়স্ক মুসলমানদের নামাজ বিশুদ্ধ করার লক্ষে রমজান মাসে এলাকায় সহীহ নমাজ ও কুরআন শিক্ষা চালু করা হেফাজত নেতা কর্মী এবং ওলামায়ে কেরামদের জন্য জরুরী ।
হেফাজত নেতৃদ্বয় বলেন, রমজানে মুমিনগণ একে অপরকে সাহায্য সহযোগিতা করে, গরীব দুঃখিদের দান খয়রাত করে থাকে। এতে সামাজিক বন্ধন ও ভ্রাতৃত্বের ঐক্য তৈরী হয়। সমাজ জীবনে শৃঙ্খলা ও কল্যান বয়ে আনে। সমাজের গরীব, মিসকিন, ইয়াতিম, অসহায় সাধারণ মুসলমানদের জন্য ইফতার সামগ্রী বিতরণ, ইফতার মাহফিলের আয়োজন করুন।
হেফাজত নেতৃদ্বয় সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, রমজানে দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখুন। দেশের স্বল্প আয়ের মানুষ যাতে ন্যায্যমূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় করতে পারে। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী রমজান মাসে অতি মুনাফা লাভের আশায় বাজারকে অস্থিতিশীল করে তোলার চেষ্টা করে, অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা পণ্য মজুত করে বাজারে যাতে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে না পারে তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করুন।
কঠোর ভাবে বাজার মনিটরিং করুন।ইফতারি ও সেহরীর খাদ্যপণ্যসহ সকল পণ্য ভেজালমুক্ত রাখতে তদারকি করুন।
আরো পড়ুন- রমজানের শুরুতে যে আমল করতেন আল্লামা কাশ্মীরি রহ.