সুফিয়ান ফারাবী
এমন দেশ কী আর কোথাও পাবো?
এমন প্রশ্ন প্রায়ই মনে জাগে। কিছুক্ষণ ভেবে মনে মনে বলি, না। এমন দেশ পৃথিবীর আর কোথাও নেই। প্রাকৃতিক লীলাভূমির এই দেশ ছেড়ে পনের দিনের জন্য গিয়েছিলাম সৌদিতে। খুব উন্নত রাষ্ট্র। এতে কোন সন্দেহ নেই। অর্থনীতিতে সমৃদ্ধ একটি দেশ। আমাদের চেয়ে তাদের জেডিপি অনেক বেশী।
তাদের রাস্তাঘাট,ঘর বাড়ি সবকিছুতেই উচ্চ বিলাসিতা। সে দেশের রাস্তায় পানের পিক,থুতু ইত্যাদি ফেলা পর্যন্ত নিষিদ্ধ। ময়লা আবর্জনা তো অনেক দূরের কথা। এগুলো সেখানে ভাবাও একপ্রকার অন্যায়।
একবার হলো কি! আমি বাইতুল্লাহর কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছি।প্রচুর ভিড়। মানুষে মানুষে গাদাগাদি। আমি আস্তে আস্তে এগুচ্ছিলাম। হঠাৎ হাত থেকে আমার জোতা নিচে পড়ে গেল। তখন আমি হাজরে আসওয়াদের একদম কাছে। একবার ভাবলাম উঠিয়ে নিই। আবার ভাবলাম , নাহ! সম্ভব না। নিচু হলে নিশ্চিত পদপৃষ্ঠে মারা পরবো। তাই আর নিচু হলাম না।
বাইতুল্লাহ থেকে বের হলাম খালি পায়ে।নতুন জোতা কিনবো সেটা সম্ভব না। এখন আমাকে হোটেলে যেতে হবে খালি পায়ে। কারণ আমার পকেট নেই। আমি ইহরামের কাপড় পরা।
হাঁটা ধরলাম হোটেলের উদ্দেশে। পাঁচ মিনিট হাঁটার পর হোটেলে পৌঁছলাম। আমি বেডে বসে পা দেখলাম, দেখি ময়লা আছে কিনা!
আমি অবাক হলাম। দেখলাম, সামান্য একটু ময়লাও পায়ে ধরেনি।
বলতে চাচ্ছি আমার দেশের কথা। আমি জানি আমার দেশে খালি পায়ে দু মিনিট হাটলেও পায়ে ময়লা ধরবে। পা ধোয়া ছাড়া বউ আমাকে ঘরে ঢুকতে দিবে না। কিন্তু আমার দেশের বর্ষা ও তার আকাশ,আমার দেশের বসন্ত ও তার ফুল, আমার দেশের প্রভাত ও তার কুয়াশা, আমার দেশের জ্যোৎস্না ও তার আলো, আমার দেশের বৃক্ষরাজির সর সর শব্দ,কাক ডাকা ভোর , চড়ুই পাখির দুষ্টুমি, সর্বোপরি এদেশের মাটি ও তার মানুষ পুরো পৃথিবী খুঁজে কোথাও পাওয়া যাবে না।
এসএস
আরো পড়ুন : হাফেজদের রক্তে রঞ্জিত আল্লাহর কুরআন