আওয়ার ইসলাম: দীর্ঘ ৫৭ বছর ধরে বাংলাদেশে বাস করা ব্রিটিশ নারী লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হোল্টের পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রতি বছর ভিসা নবায়নের ভোগান্তি এড়াতে লুসি হেলেনের হাতে ১৫ বছরের মাল্টিপল বাংলাদেশি ভিসাসহ পাসপোর্ট তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার বিকেলে বরিশাল বঙ্গবন্ধু উদ্যানে জনসভার আগে লুসি হেলেনের হাতে ভিসাসহ তার পাসপোর্টটি তুলে দেন।
তিনি বলেন, পাসপোর্ট হস্তান্তরের সময় প্রধানমন্ত্রী ৮৭ বছর বয়সী মানবতাবাদী লুসি হেলেনের সঙ্গে কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার সময় লুসি হেলেন অভিভূত হয়ে পড়েন।
উল্লেখ্য, জন ও ফ্রান্সিস হোল্টের মেয়ে লুসি ১৯৩০ সালের ১৬ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের সেন্ট হেলেন শহরে জন্মগ্রহণ করেন। শিক্ষা জীবন শেষে তিনি ১৯৬০ সালে প্রথম বাংলাদেশ সফরে আসেন।
সে বছর তিনি বরিশাল অক্সফোর্ড মিশনে যোগ দেন এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের শিক্ষা দেন। এ সময় বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের প্রেমে পড়েন। সেই ভালোবাসার টানে তিনি আর স্বদেশে ফিরে যাননি।
লুসি হেলেন যশোর, খুলনা, নওগাঁ, ঢাকা ও গোপালগঞ্জে ৫৭ বছর ধরে কাজ করেন। ২০০৪ সালে অবসর নেয়ার পর তিনি বরিশাল অক্সফোর্ড মিশনে ফিরে আসেন। অবসর জীবনে তিনি ইংরেজি শিক্ষা দেন এবং দুস্থ শিশুদের মানসিক প্রণোদনা যোগান। পাশাপাশি দুস্থ শিশুদের জন্য সামর্থ্যবানদের কাছ থেকে তহবিল সংগ্রহ করেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধেও অসামান্য অবদান রেখেছেন লুসি হেলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি আহত মানুষের সেবা-শুশ্রুষা করেন। সে সময় যশোর ক্যাথলিক চার্চে কর্মরত ছিলেন তিনি। যুদ্ধকালে তার এই অবদানের জন্য গত ১৬ ডিসেম্বর লুসিকে সম্মাননা প্রদান করে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ।
এখন লুসির শেষ ইচ্ছা, তিনি বাংলাদেশের মাটিতেই সমাহিত হতে চান। তবে সেটি মৃত্যুর আগে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নিয়ে।
এইচজে