অাওয়ার ইসলাম: সম্প্রতি মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে নেতিবাচক এবং বিতর্কিত বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড মেসবাহ কামাল।
এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। তীব্র সমালোচনার মুখে অবশেষে ক্ষমা চেয়েছেন অধ্যাপক মেসবাহ কামল।
এই সমালোচনার জবাবে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তার ফেসবুক স্টাটাসটি তুলে ধরা হলো।
তিনি ফেসবুকে লিখেছেন,
মাদ্রাসা শিক্ষা নিয়ে প্রফেসর ড. আবুল বারকাত ও তার সহ-গবেষকগণের লেখা একটি বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে সম্প্রতি আমি যে বক্তব্য দিয়েছি, তাতে মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থার বিরুদ্ধে আমি কিছুই বলিনি। ইতিহাসের ছাত্র হিসেবে আমি জানি যে, মাদ্রাসা শিক্ষা এদেশের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা ব্যবস্থা। তাছাড়া উপমহাদেশের প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ মাওলানা আবুল কালাম আজাদ এবং মাওলানা ভাসানী (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের পাশাপাশি যে দুজন আমার পরম শ্রদ্ধেয়) তাঁরা দুজনেই মাদ্রাসায় পড়েছেন।
মাদ্রাসা ছাত্রদের হেয় করা আমার উদ্দেশ্য ছিলো না, কেননা সকল ছাত্রই আমার কাছে সমান। বরং শিক্ষক হিসেবে আমার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার আলোকে মাদ্রাসা থেকে আসা, ব্যতিক্রম বাদে, বেশিরভাগ ছাত্রদের ভাষাগত ভিত্তির দুর্বলতার কথা বলেছি। আমাদের ছাত্রদের অনেকে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্বল ইংরেজি নিয়ে প্রবেশ করে, তখন আমরা তাদের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কিত হই। তাই মাদ্রাসা শিক্ষাকে যুগোপযোগী করা দরকার সেটাই আমার বক্তব্য ছিলো।
মাদ্রাসা শিক্ষা অবশ্যই এদেশের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা। কিন্তু এখান থেকে আসা শিক্ষার্থীদের ভিত্তিমূল মজবুত করার জন্য তাদের মূল ধারার সাথে সংগতি রাখতে হবে। মাদ্রাসা থেকে একসময় অনেক বরেণ্য শিক্ষাবিদ, যেমন আমার শিক্ষক ড. মফিজুল্লাহ কবির, বেরিয়ে এসেছেন। মাদ্রাসা থেকে এখনও কিছু ভাল ছাত্র আমরা পাই, তবে তারা ব্যতিক্রম।
আমি মাদ্রাসা শিক্ষা জাতীয়করণের দাবীকে সমর্থন করি, মাদ্রাসা ছাত্রদের শিক্ষার অধিকার নিয়ে কথা বলি এবং মাদ্রাসাসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকারি অর্থায়ন বৃদ্ধিকে সমর্থন করি।
ঐ অনুষ্ঠানে আমার দেয়া ১৮ মিনিটের বক্তব্যে সেসব কথা বলেছিলাম। আগে-পিছে বাদ দিয়ে আংশিক বক্তব্য শুনে যথার্থ ধারণা পাওয়া যায় না। মাদ্রাসা ছাত্রদের কর্মসংস্থান ও জাতীয় উন্নয়নের স্বার্থে মাদ্রাসাকে শিক্ষার মুল ধারার সাথে সমন্বিত করা দরকার।
আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় এসএসসি- এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা থেকে নম্বর সংযুক্তি ব্যবস্থা বাতিল করে সরাসরি পরীক্ষার ভিত্তিতে ভর্তিযোগ্য ছাত্রছাত্রী নির্বাচন করা হলে বাংলা, ইংরেজী ও আরবী মাধ্যম সহ সকল ছাত্রছাত্রী সমান সুযোগ পাবে। আমি এটাই বলতে চেয়েছি।
আমার বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং বাহিরের ছাত্রছাত্রী-সহ অন্যান্য যারা কষ্ট পেয়েছেন তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি। আমার কাছে সকল ছাত্রই সমান, তা সে যে ধারা থেকেই আসুক না কেন।
এসএস/