আওয়ার ইসলাম: গার্মেন্ট শ্রমিকদের মাসিক বেতন নূন্যতম ১৬ টাকা ধার্য করা সহ তিন দফা দাবিতে গোলটেবিল বৈঠক ও সংবাদ সম্মেলন করেছে গার্মেন্ট শ্রমিক মজুরী আন্দোলন নামে একটি শ্রমিক সংগঠন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে গোলটেবিল বৈঠক ও সংবাদ সম্মেলন করে গার্মেন্ট শ্রমিক মজুরী আন্দোলন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গার্মেন্ট শ্রমিক মজুরী আন্দোলনের সমন্বয়ক ও গার্মেন্ট শ্রমিক কর্মচারীলীগের সভাপতি লিমা ফেরদৌস।
গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরী মোট ১৬,০০০/ (ষোল হাজার) টাকা ধার্য করা সহ আগামী ৬ মাসের মধ্যে মজুরী ঘোষণা ও বাস্তবায়ন এবং সেক্টরের শ্রমিক প্রতিনিধিকে মজুরী বোর্ডের সদস্য করার দাবি জানানো হয়।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, পোশাক শিল্পে কর্মরত প্রায় ৪৫ লক্ষ শ্রমিক অত্যন্ত পরিশ্রম করে দেশ এবং শিল্পের উন্নতির লক্ষ্যে কাজ করে আসছে এবং বৈদেশিক মুদ্রা ও শিল্প উন্নতির লক্ষ্যে ভোর ৬টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত কাজ করে চলেছে।
২০১৩ সালে পোশাক শিল্পে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরী ৫ হাজার ৩ শত টাকা ঘোষণা করে। গার্মেন্টস শ্রমিকদের বাড়ি ভাড়া, যাতায়াত ভাড়া, চিকিৎসা ব্যয় বৃদ্ধি ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ জীবন যাত্রার মান ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে অসহনীয় পর্যায়ে এসে গেছে।
আমরা ২৫টি সংগঠনের পক্ষ থেকে সরকারের নিকট দাবি করছি অবিলম্বে ৬ মাসের মধ্যে ঘোষণা ও বাস্তবায়ন করতে হবে। কারণ ইতিমধ্যে সরকার ঘোষণা দিয়েছে ২০১৮ সালের মধ্যে মজুরী বাস্তবায়ন করবেন। এই ঘোষণার সাথে সাথে আশুলিয়া নারায়নগঞ্জ গাজীপুর, চট্টগ্রামসহ সারাদেশের শ্রমিকরা ক্ষোভে ফুসে উঠেছে। এমতাবস্থায় আমরা সরকারের নিকট আহ্বান জানাচ্ছি অবিলম্বে ৬ মাসের মধ্যে মজুরী ঘোষণা ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
আমরা লক্ষ্য করছি বাংলাদেশে শ্রম আইন ২০০৬ ও শ্রমবিধি ২০১৫ ধারায় উল্লেখ রয়েছে এই সেক্টরের শ্রমিক প্রতিনিধিকে প্রতিনিধিত্ব করার আইন থাকলেও আমরা এই সেক্টরে শ্রমিক প্রতিনিধিকে সদস্য করা হয় নাই। এতে আমরা বিস্মিত হয়েছি। আমি দাবি জানাচ্ছি মজুরী বোর্ডে শ্রমিক প্রতিনিধি অন্তর্ভূক্ত করা হোক।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, ২০১৩ সালে যে ন্যূনতম মজুরী ঘোষণা হয়েছিল ৫৩০০ টাকা যেমন খাদ্য ভাতা ৬৫০ টাকা, বাড়ী ভাড়া ১২০০ টাকা, যাতায়াত ভাড়া ২৫০ টাকা, মেডিকেল ২০০ টাকা, বেসিক ৩০০০ টাকা, কিন্তু ২০১৩ সালের অবস্থা আর ২০১৮ সালের অবস্থা আকাশ-পাতাল ব্যবধান।
এই সামান্য মজুরীতে গার্মেন্টস শ্রমিকদের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে এবং অত্যন্ত মানবেতর জীবন যাপন করছে। আমরা শিল্প ও শ্রমিকদের উন্নতির লক্ষে ১৬ হাজার টাকা মোট মজুরী নির্ধারণ করার জন্য মজুরী বোর্ড ও সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলন থেকে দাবি আদায়ে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ইং রোজ রবিবার সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে মিছিল সহকারে মাননীয় শ্রম প্রতিমন্ত্রীকে স্মারকলিপি প্রদান করার কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
এসএস/