শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ ।। ২৮ চৈত্র ১৪৩১ ।। ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
হারামাইনে আজ জুমার নামাজে ইমামতি করবেন যাঁরা ‘মার্চ ফর গাজা’য় অংশগ্রহণকারীদের জন্য জরুরি ৫ নির্দেশনা তালিবুল ইলমের আবশ্যকীয় পাঁচটি কাজ পাকিস্তানের সব সমস্যার পেছনে ইহুদি ষড়যন্ত্র থাকে: মাওলানা ফজলুর রহমান বাড়িতে বাবার লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিল নাহিদ মানবতার জন্য আপনিও আসুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে: শায়খ আহমাদুল্লাহ ইসরায়েলকে প্রতিহত করতে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ দরকার: বিএনপি মাদরাসাছাত্রদের কর্মসংস্থানের বিষয়ে কাজ করছে এনসিপি : নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী মুসলিম রাষ্ট্রের ওপর এখন সশস্ত্র ল’ড়াই ফরজ: মুফতি তাকি উসমানি ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি সফল করার আহ্বান শায়খে চরমোনাই’র

সিরিয়া নিয়ে কী করতে চান ট্রাম্প?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে মার্কিন কোয়ালিশনের সহযোগিতায় একটি কুর্দি মিলিশিয়া-প্রধান সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গড়ে তোলার পরিকল্পনা জানার পর তুরস্ক একে 'আঁতুড়ঘরেই ধ্বংস করে দেবার লক্ষ্য নিয়ে' মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে সেনা অভিযান শুরু করে দিয়েছে।

তুরস্কের সেনাবাহিনী এর মধ্যে সিরিয়ার ভেতরে কুর্দি নিয়ন্ত্রিত আফরিনে ঢুকে পড়েছে, এর মধ্যে দিয়ে সিরিয়ার যুদ্ধে এখন আরেকটি ফ্রন্ট খুলে গেল। কিন্তু সিরিয়া নিয়ে আসলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনাটা কী? খবর বিবিসির।

সিরিয়ায় এ মুহূর্তে প্রায় দুই হাজার মার্কিন সেনা আছে। যেটা বোঝা যাচ্ছে তাদের পরিকল্পনাটা হলো: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ায় একটি সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখবে যা কবে শেষ হবে এমন কোনো সময়সীমা থাকবে না - যাতে জিহাদি ইসলামিক স্টেট গ্রুপকে স্থায়ীভাবে পরাজিত করা যায়, ইরানের প্রভাব মোকাবেলা করা যায় এবং সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ অবসানে ভূমিকা রাখা যায়।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ২০১১ সালে ইরাক থেকে সেনা প্রত্যাহার করে যে ভুল করা হয়েছিল - সেরকম আরেকটি ভুল করতে চান না।

কুর্দি এসডিএফ মিলিশিয়াদের নিয়ে নতুন বাহিনী তৈরি সম্পর্কে রেক্স টিলারসন বলেন, তারা কোনো নতুন বাহিনী তৈরি করছেন না। তাদের লক্ষ্য স্থানীয় যোদ্ধাদের মুক্ত এলাকাগুলোকে আইএসের অবশিষ্ট ক্ষুদ্র দলগুলোর আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সক্ষম করে তোলা।

গত বুধবার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ভাষণে টিলারসন বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দৃঢ় পদক্ষেপের কারণে আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দ্রুত অগ্রগতি হয়েছে। তবে তারা এখনো সম্পূর্ণ পরাজিত হয়নি এবং মার্কিনবিরোধী বাশার আসাদের সরকার সিরিয়ার অর্ধেক এলাকা এবং জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করছে।

তার কথা, শুধু আইএস ও আল-কায়েদাই নয়, ইরানও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কৌশলগত ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।

টিলারসন বলেন, সিরিয়ায় ট্রাম্প প্রশাসনের লক্ষ্য পাঁচটি: আইএস ও আল-কায়েদার স্থায়ী পরাজয় যাতে তারা অন্য কোনো নাম নিয়ে আবার মাথা তুলতে না পারে।

দুই, জাতিসংঘের নেতৃত্বে বাশার আসাদ-উত্তর একটি স্থিতিশীল একক ও স্বাধীন সিরিয়া গঠন করে সংকটের সমাধান করা।

তিন, সিরিয়ার ওপর ইরানের প্রভাব কমানো এবং সিরিয়ার প্রতিবেশীদের নিরাপদ করা।

চার, ঘরবাড়ি হারানো মানুষেরা যেন তাদের ঘরে ফিরতে পারে সে পরিবেশ তৈরি করা।

পাঁচ, সিরিয়াকে গণবিধ্বংসী অস্ত্র থেকে মুক্ত রাখা।

ট্রাম্প প্রশাসন কূটনৈতিকভাবেই এসব লক্ষ্য অর্জনের কৌশল তৈরি করছে, কিন্তু সিরিয়ায় মার্কিন সামরিক উপস্থিতি অব্যাহত থাকবে। সিরিয়ার 'মুক্ত' এলাকাগুলোতে স্থিতিশীলতা আনার জন্য মার্কিন নেতৃত্বাধীন সিরিয়ার ডেমোক্র্যাটিক ফোর্স কাজ করবে। এই এসডিএফ কুর্দি মিলিশিয়া-প্রধান এবং তুরস্ক একে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বলে মনে করে।

টিলারসন সিরিয়ায় নির্বাচনের মাদ্যমে ক্ষমতা থেকে বাশার আসাদের চিরবিদায়ের কথাও বলেন। তবে এতে সময় লাগবে - বলেন তিনি।

বিবিসির বিশ্লেষক জোনাথন মার্কাস বলছেন, বাশার আসাদ সরকার রাশিয়া ও ইরানের সমর্থন নিয়ে যুদ্ধে মোটামুটি জয়লাভ করলেও সিরিয়ার সব এলাকার নিয়ন্ত্রণ তার হাতে নেই।

সিরিয়ার উত্তর দিকে একটি স্বায়ত্বশাসিত কুর্দি-প্রধান এলাকা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মার্কিন সহায়তা নিয়ে। এখন যুক্তরাষ্ট্র তার পরবর্তী পদক্ষেপগুলো কী হবে তার হিসাব করছে। তারা সিরিয়ায় সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখতে চায়, আইএনের পুনরুত্থান ঠেকাতে চায় এবং কুর্দি মিত্রদের সহযোগিতা দিতে চায় - এটা এখন স্পষ্ট।

মি মার্কাস লিখছেন, অন্যদিকে ওয়াশিংটন এটা ভুলে যায় নি যে রাশিয়া - সিরিয়াতে তার যে ঘাঁটিগুলো আছে - তা এক্ষুণি ছেড়ে যাচ্ছে না। কিন্তু মার্কিন নীতির মূল লক্ষ্য এখন একটাই - সেটা হলো ইরানকে নিয়ন্ত্রণে আনা।

তবে সিরিয়াকে যদি এভাবে বিভক্ত রাখা হয় তাহলে দেশটির পুনর্গঠন বিলম্বিত হবে এবং ভবিষ্যতে নতুন নতুন সমস্যা তৈরি হতে পারে - এটাও বলা যেতে পারে। -বিবিসি


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ