আওয়ার ইসলাম: ব্যবসায়ী বা বাণিজ্য সংস্থার টাকা নয়, ভোট-তহবিল গড়তে দলের সদস্যদের উপরেই ভরসা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের!
সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। ভোটের খরচ জোগাড়ে বুথে বুথে ঘুরে নতুন সদস্যপদ তৈরিতে জোর দিতে নির্দেশ দেন নেত্রী। ন্যূনতম ১ টাকায় নতুন সদস্য তৈরি করতে শুক্রবার দলীয় বৈঠকে পরামর্শ দেন তিনি।
তবে চাইলে নগদে দু’হাজার টাকা দিয়েও কেউ সদস্য হতে পারবেন। দলকে চাঁদা দিতে পারবেন। এর পিছনে অবশ্য কারণ রয়েছে। কেন্দ্র চায়, কোনও রাজনৈতিক দলই নগদে দু’হাজার টাকার বেশি চাঁদা নিতে পারবে না। সেই চাঁদার জন্যও দিতে হবে পাকা রসিদ।
তবে তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, কেন্দ্রীয় বিধির দিকে তাকিয়ে দলের সদস্যপদ সংগ্রহ হচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রী চান, তৃণমূল স্তরের এক জন সাধারণ কর্মীও তহবিল গঠনে অংশ নিক। সে কারণে ন্যূনতম ১টাকা সদস্য ভাতাও দলের কাছে মহার্ঘ। মমতা সকলের কাছে অনুরোধ করেছেন, বিজেপির মতো টাকা তৃণমূলের নেই। খুবই গরিব। ফলে যে যার সাধ্যমতো যেন দলকে সাহায্য করেন।
কোনও ভোটেই কর্পোরেট ক্ষেত্র থেকে টাকা নিয়ে ভোট করতে চান না মমতা। বিরোধী নেত্রী থাকার সময় থেকেই ভোটের খরচ মেটাতে সরকারি তহবিল চালুর দাবিতে তিনি সরব। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরেও সেই দাবি তোলেন বারবার। গত বিধানসভা বা লোকসভা ভোটে বিভিন্ন ব্যবসায়ী বা সংস্থা দলকে টাকা দিতে চাইলেও মমতা তা নেননি বলে দাবি করেন।
এই বিতর্কের ইতি ঘটিয়ে স্বচ্ছতা আনতে কেন্দ্র নির্বাচনী বন্ড চালুর প্রস্তাবও দিয়েছে। কর্পোরেট সংস্থাগুলি পরিচয় গোপন রেখে ওই বন্ড মারফত নির্দিষ্ট কোনও দলকে সাহায্য করতে পারবে। আর নির্দিষ্ট সময়ে ভোটের খরচের জন্য ব্যাঙ্কের মাধ্যমে ওই বন্ডের টাকা ভাঙাতে পারবে সেই দল। তবে তৃণমূল সেই বন্ডের মাধ্যমে টাকা নেবে কি না, তা নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
তৃণমূলের তহবিলে বিভিন্ন লগ্নি সংস্থা থেকে টাকা এসেছে বলে অভিযোগ। নারদ-কাণ্ডে দলের বিভিন্ন মন্ত্রী, সাংসদদের টাকা নেওয়ার ফুটেজ ঘিরে সিবিআই তদন্ত চলছে। এই পরিস্থিতিতে দলের ভাবমূর্তি বজায় রাখতেই মমতা ১ টাকার সদস্যপদে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাইছেন বলে অন্দরের খবর।
এমনিতেই সাংসদ বা বিধায়করা প্রতি মাসে তাঁদের বেতন থেকে দলীয় তহবিলে চাঁদা দেন। তার সঙ্গে পুরসভার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, কাউন্সিলররাও এ বার পঞ্চায়েত ভোটের আগে নিজেদের ‘সাধ্যমতো’ টাকা দলের তহবিলে দেবেন বলে তৃণমূল সূত্রের খবর।
লগ্নি সংস্থার থেকে টাকা নেওয়ার ঘটনায় তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীর নাম জড়ানোর অভিযোগকে শনিবার ফের সামনে আনেন বিজেপি নেতা রাহুল সিংহ। মমতার সততা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
কাটোয়ার মুস্থুলি হাটতলায় এ দিন রাহুল বলেন, ‘‘উনি আসলে অসততার প্রতীক।’’ তিনি বলেন, ‘‘২০১৯-এ তৃণমূলের চিহ্ন থাকবে না। কিছু লোক চলে আসবে বিজেপি-তে, কিছু লোক থাকবে জেলে।’’
আনন্দবাজার পত্রিকা