আওয়ার ইসলাম: প্রযুক্তি ব্যবহারে বেশ এগিয়ে গেছে শিশুরা। তাদের হাতে স্মার্টফোন বা ট্যাব অহরহ দেখা যায়।
এমনিতেই প্রযুক্তি, ইন্টারনেট বা সোশাল মিডিয়ার নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে সমাজ বিজ্ঞানীদের মধ্যে বিতর্কের শেষ নেই। তারপরও এই বয়সেই যদি ওরা শিশুসুলভ কর্মকাণ্ড ভুলে কেবল প্রযুক্তি নিয়েই পড়ে থাকে, তবে তাদের মানসিক বিকাশ কীভাবে হবে? এ নিয়ে পাহাড়সমান আলোচনা চলছে অনেক দিন থেকেই।
কিন্তু কেবল আলোচনায় সময় নষ্ট না করে পদক্ষেপ গ্রহণকেই জরুরি বলে মনে করলো ফ্রান্স। নয়া বছরের সেপ্টেম্বর থেকেই স্কুলে বাচ্চাদের মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করছে সরকার। গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের প্রাইমারি, জুনিয়র এবং মিডল স্কুলগুলোতে কোনো শিক্ষার্থী মোবাইল ব্যবহার করতে পারবে না।
অবশ্য বাচ্চারা স্কুলে মোবাইল আনতে পারবে। কিন্তু এটা নিয়ে ক্লাস করা বা বিরতির সময় ব্যবহারের সুযোগ মিলবে না। স্কুল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়ই যার যার মোবাইল ফিরে পাবে তারা।
ফ্রান্সের শিক্ষা মন্ত্রী জিন-মাইকেল ব্লানকুয়ের জানান, আগামী বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই নিয়ম কার্যকর হবে দেশজুড়ে।
স্কুলের ৬ বছর থেকে ১৫ বছর বয়সী সকল শিক্ষার্থী এই নিয়মের আওতায় পড়বে। কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে ছাত্র-ছাত্রীদের মোবাইল ব্যবহারের নিয়ন্ত্রণ এনেছে।
অনেক সময়ই জরুরি মুহূর্তে শিক্ষা প্রদানের কাজেও মোবাইল দরকার হয়। কিন্তু শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ আনা হবে, বলেন মন্ত্রী।
নিয়মটি চালু হলে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসামাত্র মোবাইল ফোন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেবে। তারপর যখন স্কুল শেষে বেরিয়ে যাবে, তখন নিজের ফোনটি পেয়ে যাবে।
বর্তমানে অনেক স্কুলে নিয়ন্ত্রণ আরোপ হলেও ক্লাসের ফাঁকে, বিরতিতে বা টিফিনের সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারে শিক্ষার্থীরা। কিন্তু এতে পড়ালেখায় তাদের মনোযোগ নষ্ট হচ্ছে বলেই মনে করেন শিক্ষকরা। এমনকি সুযোগ পেলে ক্লাসের মধ্যেই তারা ফোন বের করে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
মোবাইলের কারণে বিরতির সময় বাচ্চারা মাঠে খেলতে যায় না। সবাই মোবাইলে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এতে তাদের শৈশবের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, সব শিক্ষকদের একই মত।
মন্ত্রী আরো বলেন, এই সিদ্ধান্ত আসলে জনস্বাস্থ্যের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ এবং অভিভাবকদের জন্যে সচেতনতার বার্তা। এই বয়সীদের কাছে সব সময় মোবাইল ফোন থাকা উচিত নয়। অন্তত ৭ বছরের আগে কোনো শিশুর হাতে প্রযুক্তির পর্দা যেন না আসে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
সূত্র : গার্ডিয়ান