শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ ।। ২৮ চৈত্র ১৪৩১ ।। ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
হারামাইনে আজ জুমার নামাজে ইমামতি করবেন যাঁরা ‘মার্চ ফর গাজা’য় অংশগ্রহণকারীদের জন্য জরুরি ৫ নির্দেশনা তালিবুল ইলমের আবশ্যকীয় পাঁচটি কাজ পাকিস্তানের সব সমস্যার পেছনে ইহুদি ষড়যন্ত্র থাকে: মাওলানা ফজলুর রহমান বাড়িতে বাবার লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিল নাহিদ মানবতার জন্য আপনিও আসুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে: শায়খ আহমাদুল্লাহ ইসরায়েলকে প্রতিহত করতে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ দরকার: বিএনপি মাদরাসাছাত্রদের কর্মসংস্থানের বিষয়ে কাজ করছে এনসিপি : নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী মুসলিম রাষ্ট্রের ওপর এখন সশস্ত্র ল’ড়াই ফরজ: মুফতি তাকি উসমানি ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি সফল করার আহ্বান শায়খে চরমোনাই’র

জমিয়ত হিন্দের এক ঐতিহাসিক বিজয়, যে কথা জানে না বাঙালি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হুজাইফা মাহমুদ: আসামে প্রায় আটচল্লিশ লাখ মানুষের নাগরিকত্ব হুমকির মুখে ছিল এই গত মাস পর্যন্তও! এদের আশিভাগ মানুষই দরিদ্র মুসলমান। হিন্দু নাগরিকের সংখ্যাও কম নয়। ভারত সররকার তাদের ‘অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশি’ ঘোষণা দিয়ে, অবিলম্বে বাংলাদেশে পুশব্যাক করার জন্য আদালতে মামলা দায়ের করে।

যদি মামলার রায় আসামীদের বিপক্ষে যেতো, তাহলে আসামের অবস্থা আজকের রোহিঙ্গাদের চেয়েও করুণ হতো! তাদের জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা হতো এবং অবধারিতভাবে বাংলাদেশের দিকে ঠেলে দেওয়া হতো। সেই উচ্ছেদের প্রয়োজনের কত রক্তগঙ্গা বইয়ে যেতো তার ইয়ত্তা নেই!

বাংলাদেশের অবস্থাটাও কেমন হতো তখন? একদিকে রোহিঙ্গা শরণার্থী সামাল দিতেই ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা, অপরদিকে আসামের আটচল্লিশ লাখের অর্ধেক মানুষও যদি বাংলাদেশে শরণার্থী হয়ে আসতো, তাহলে বিষয়টা কেমন দাঁড়াতো?

কিন্তু আল্লাহর অশেষ করুণায় এতকিছু ঘটেনি শেষমেশ। আদালতে এই মামলার লড়াই চলছে দীর্ঘদিন যাবৎ।গত সপ্তায় রায় হয়েছে এবং রায় আসামীদের পক্ষে এসেছে।

কিন্তু এ নিয়ে আমাদের দেশে কোন উচ্চবাচ্য হতে দেখলামনা! চেতনার ধ্বজাধারি কোন বুদ্ধিজীবীকেও দেখলাম না  এ নিয়ে মুখ খুলতে। অথচ এটা ভারতের পাশাপাশি আমাদেরও সমস্যা ছিল সমানভাবে! কি অদ্ভূত!

আসামের এইসব অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য কেউ ছিল না! যারা ছিল তাদের পরিচয় এদেশের মানুষ জানে না। জানতে চাইবেও না!

যখন সরকার পক্ষ আদালতে মামলা দায়ের করলো, তখন তাদের বিপক্ষে মামলা লড়ার জন্য এগিয়ে গেলো জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ! যারা এই উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাস জানেন, তারা অবশ্যই জানবেন, জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ কি জিনিস।

জমিয়তের প্রধান, মাওলানা সায়্যিদ আরশাদ মাদানি হুঙ্কার ছাড়লেন, অবিলম্বে আসামের নাগরিকদের নিয়ে সবধরণের ষঢ়যন্ত্র বন্ধ করো, নতুবা দেশে আগুন জ্বলবে! আসামকে মিয়ানমার বানানোর পাঁয়তারা বন্ধ করো!

এই হুঙ্কারে সরকার ঠিকই কেঁপে উঠলো! দিকে দিকে তাঁর নামে দেশদ্রোহী মামলা আর অ্যাফেয়ার হতে লাগলো।গ্রেফতারের হুমকিও দিতে লাগলো।কিন্তু এসবের থোড়াই কেয়ার করেন তিনি।

বীরদর্পে মামলা লড়ে গেছেন। কয়েকশো কোটি টাকা খরচ করে দেশের প্রথম সারির আইনজিবিদের একত্রিত করেছেন!! কেবল মানবতার খাতিরে, মানবিক দায়বোধ থেকে, হিন্দু মুসলিম, ধর্মীয় বিভাজনের উর্ধ্বে উঠে, আটচল্লিশ লাখ অসহায় মানুষের অভিবাভকত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন!

শতভাগ নি:স্বার্থে এইসব কাজ করে গেছেন!  না ক্ষমতার লোভে, না অর্থের লোভে!

মামলার রায় প্রকাশের পর তিনি বলেছেন, আমার সারা জীবনে আজকের চেয়ে বেশি আনন্দিত আর কোনদিন হইনি!

তো একজন আরশাদ মাদানির পরিচয় জেনে রাখুন, নতুবা ইতিহাসের দায় থেকে কেউ মুক্তি পাবেন না হে বঙ্গবাসি!


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ