আওয়ার ইসলাম: ইসরাইলে নেতানিয়াহু যতদিন ক্ষমতায় ততদিন ফিলিস্তিন সমস্যা মিটবে না বলে মন্তব্য করেছেন ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ উইলিয়াম ডালরিম্প।
তিনি বলেন, নেতানিয়াহু যত দিন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী আছেন, তত দিন ফিলিস্তিনিদের আশান্বিত হওয়ার কিছু নেই।
সম্প্রতি ঢাকা লিট ফেস্ট উপলক্ষে বাংলাদেশে এসেছিলেন ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ উইলিয়াম ডালরিম্পল। ভারতবর্ষে ব্রিটিশ উপনিবেশ এবং পরবর্তীকালের উপমহাদেশসহ নানা বিষয় নিয়ে এ সময় তাঁর সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলোর সাথে একান্ত আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
একই প্রশ্নের জবাবে ভারত পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সমস্যা নিয়ে তিনি বলেন, ভারতেও যতদিন মোদি ক্ষমতায় আছেন ততদিন ভারত-পাকিস্তান সমস্যা সমাধান হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
৪৭-এ দেশ ভাগ নিয়ে ডালরিম্পল বলেছেন, ১৯৪৭-এ ভারতীয় উপমহাদেশে যে বিভক্তি সৃষ্টি হয়েছে তা ছিলো মারাত্মক ভুল। কেননা এখানে উন্মুক্ত ও বহু সংস্কৃতির হিন্দু ও ইসলাম ধর্ম চমৎকারভাবে খাপ খাইয়ে নিয়েছিল। এখানে দেশ ভাগের কোনো যৌক্তিক কারণ ছিল না।
তিনি বলেন, উপমহাদেশে ধর্ম থেকে শুরু করে সংস্কৃতি অর্থাৎ চিন্তা, আচার-আচরণ, ভাষা, খাদ্য, সংগীত, নৃত্য—সবকিছুতেই হিন্দু ও ইসলাম ধর্মের সংমিশ্রণ ঘটেছিল।
এমনকি ধর্মীয় সংমিশ্রণও ঘটেছিল। তাই দেশভাগ ছিল একটা মারাত্মক ভুল। এটা ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের জন্য বিপর্যয়কর হয়েছে।
সম্প্রতি ভারতে উগ্র হিন্দুত্ববাদের উত্থান হওয়ার পরও আপনি এ কথা বলবেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে ডালরিম্পল বলেন, ভারতে উগ্র হিন্দুত্ববাদের উত্থান উদ্বেগজনক ব্যাপার। মূলত নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় এসেছেন অর্থনৈতিক খাতে কংগ্রেসের ব্যর্থ তার কারণে। আর তারা অত্যন্ত দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল, ব্যাপারটা একদম প্রকাশ্য হয়ে গিয়েছিল। মানুষ ভেবেছিল, নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় এসে ভারতকে একটি শক্তিশালী সরকার উপহার দেবে।
কিন্তু নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর হিন্দুত্ববাদ মাথা জেগে উঠে। তবে আমি মনে করি না যে হিন্দুত্ববাদের কারণে মোদি ক্ষমতায় এসেছেন। এমনকি বিজেপির নির্বাচনী প্রচারণায় হিন্দুত্ববাদ ছিল না। কিন্তু তিনি সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত করতে পারছেন না।
অপরদিকে রাহাল গান্ধী যত দিন কংগ্রেসের নেতৃত্বে থাকছেন, তত দিন মোদি স্বাভাবিকভাবেই ক্ষমতায় থাকবেন। কারণ ভারতের জনগণ দেশের ভার রাহুল গান্ধীর হাতে দিতে ভরসা পায় না। কিন্তু উদ্বেগের ব্যাপার হলো, মোদি হিন্দুত্ববাদী আদর্শ নিয়ে এগোচ্ছেন।
বাংলাদেশের ব্যপারে তিনি বলেন, বাংলাদেশ নিয়ে আমি কখনো কাজ করিনি, তাই আমি বেশি কিছু বলতে চাই না। তবে অবশ্যই বাংলাদেশের যেমন অনেক সম্ভাবনা আছে, তেমনি অনেক সমস্যাও আছে। আমি বাংলাদেশ সহ দক্ষিণ এশিয়ার ব্যাপারে আমি সামগ্রিকভাবে আশাবাদী, তবে তার জন্য তিন দেশেই ধর্মীয় চরমপন্থা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
এসএস/