শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
কাল যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় মজলিসে দাওয়াতুল হকের ইজতেমা শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন: মজলিস মহাসচিব ডেঙ্গুতে এক সপ্তাহে ৩১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৬২৩০ মসজিদে নববীর আদলে হবে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ: ধর্ম উপদেষ্টা খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নতুন নির্বাচন কমিশনকে বিগত কমিশন থেকে শিক্ষা নিতে হবে: মুফতী ফয়জুল করীম লালপুরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল ও বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ জনতার চেয়ারম্যান সৈয়দ তালহাকে সুনামগঞ্জ ৩ আসনে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা কুরআন-হাদিসের ভিত্তিতেই হতে হবে সংস্কার: বায়তুল মোকাররমের খতিব ইসলামী সঙ্গীত সম্রাট আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ.-এর বাবার ইন্তেকাল

আগামী ফেব্রুয়ারিতেই চালু হচ্ছে ফোরজি!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম
ডেস্ক
আগামী ফেব্রুয়ারি নাগাদ চালু হতে পারে চতুর্থ প্রজন্মের (ফোরজি) টেলিযোগাযোগ সেবা। এ জন্য ফোরজি নীতিমালা চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

সেখানে তরঙ্গ নিলামের জন্য আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। এ জন্য তরঙ্গ নিলাম নীতিমালাও চূড়ান্ত করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

তবে এই নীতিমালার কয়েকটি বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে দেশের তিন প্রধান মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংক। তিন অপারেটরের প্রধান নির্বাহীর সই করা এ চিঠিতে তরঙ্গের দাম, ফোরজির গতি, ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক, মূল্য সংযোজন করসহ কয়েকটি বিষয়ে আপত্তির কথা জানানো হয়েছে।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদকে গতকাল লেখা এ চিঠিতে সই করেছেন গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাইকেল ফোলি, রবির সিইও ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাহতাব উদ্দিন আহমেদ এবং বাংলালিংকের এমডি ও সিইও এরিক অস।

তিন অপারেটরের চিঠিতে বলা হয়েছে, নীতিমালায় এমন কিছু শর্ত রয়েছে, সেগুলো পরিবর্তন করা না হলে তা সবার জন্য বিব্রতকর এক পরিস্থিতি তৈরি করবে। তরঙ্গের যে ভিত্তিমূল্য ধরা হয়েছে, সেটি অনেক বেশি।

একইভাবে তরঙ্গ ব্যবহারে প্রযুক্তি নিরপেক্ষতার দামও বেশি। ফোরজির ন্যূনতম যে গতি নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটিও বাস্তবসম্মত নয়। এখন সব মিলিয়ে দেশে যে পরিমাণ তরঙ্গ আছে, তার সব ব্যবহার করেও এই গতির ফোরজি দেওয়া সম্ভব নয়। আর ফোরজির গতির সঙ্গে মোবাইল ফোন সেট, অবকাঠামোসহ বিভিন্ন বিষয় যুক্ত আছে।

নিরবচ্ছিন্ন ফোরজি-সেবার জন্য চিঠিতে অপারেটরদের নিজস্ব ফাইবার নেটওয়ার্ক তৈরির সুযোগ চাওয়া হয়েছে। মূল্য সংযোজন করসহ (মূসক) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে বিভিন্ন অমীমাংসিত বিষয় নিয়েও উদ্বেগ জানানো হয়েছে চিঠিতে। সব মিলিয়ে ফোরজিতে বিনিয়োগ নিশ্চিত করার জন্য সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে চিঠিতে।

ফোরজি কী
ফোরজি হলো ইংরেজি শব্দ ফোর্থ জেনারেশনের সংক্ষিপ্ত রূপ, বাংলায় যা চতুর্থ প্রজন্ম নামে পরিচিত। ফোরজি হলো দ্রুততম সময়ে যোগাযোগে ব্যবহৃত মোবাইল টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তির আরেক নাম লং টার্ম ইভল্যুশন বা এলটিই। এই প্রযুক্তি বর্তমানে বাংলাদেশে চালু থাকা টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি তৃতীয় প্রজন্ম বা থ্রিজির পরের ধাপ।

২০০৯ সালে নরওয়ে ও সুইডেনে বাণিজ্যিকভাবে প্রথম ফোরজি প্রযুক্তি চালু করা হয়। বর্তমানে বিশ্বের ১৭০টির বেশি দেশে এ প্রযুক্তির টেলিযোগাযোগসেবা চালু আছে।

আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের (আইটিইউ) মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দ্রুতগতির যানবাহন অর্থাৎ বাস বা ট্রেনে এই সেবার ইন্টারনেট গতি হবে প্রতি সেকেন্ডে ১০০ এমবিপিএস (মেগা বিটস প্রতি সেকেন্ড)।

এ ছাড়া আবাসিক ব্যবহারে বা স্থিরাবস্থায় ফোরজি নেটওয়ার্কের গতি হবে প্রতি সেকেন্ডে এক গিগাবাইট (গিগা বিট পার সেকেন্ড)। তবে সব দেশের ফোরজির গতি এই মানের হয় না। যেমন বাংলাদেশে ফোরজির নূ্যনতম গতি নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ এমবিপিএস। এই গতি বর্তমানে চালু থাকা থ্রিজির ন্যূনতম ৫ এমবিপিএস গতির চেয়ে চার গুণ বেশি।

জানতে চাইলে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, নীতিমালা প্রকাশের মাধ্যমে দেশে ফোরজি-সেবা চালুর কাজ শুরু হয়ে গেল। এতে পুরোনোদের পাশাপাশি লাইসেন্স ও তরঙ্গ নিয়ে নতুন মোবাইল ফোন অপারেটরের আসার সুযোগ রাখা হয়েছে।

বিটিআরসির চূড়ান্ত নীতিমালা অনুযায়ী, ৯০০ ও ১ হাজার ৮০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডের তরঙ্গের ভিত্তিমূল্য ধরা হয়েছে ৩ কোটি মার্কিন ডলার বা ২৪০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮০ টাকা হিসাবে)।

আর ২ হাজার ১০০ মেগাহার্টজ তরঙ্গের ভিত্তিমূল্য ধরা হয়েছে ২১৬ কোটি টাকা। ২ হাজার ১০০ মেগাহার্টজে ২৫ মেগাহার্টজ, ১ হাজার ৮০০ মেগাহার্টজে ১৮ মেগাহার্টজ ও ৯০০ মেগাহার্টজে ৩ দশমিক ৪ মেগাহার্টজ তরঙ্গ বিক্রির জন্য নিলামে তুলবে বিটিআরসি।

তরঙ্গের এই নিলাম অনুষ্ঠিত হবে আগামী বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি। নিলামে যারা জয়ী হবে, তাদের বিষয়ে চূড়ান্ত অনুমোদনপত্র বা নোটিফিকেশন পরের দিন ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করা হবে।

যেকোনো তরঙ্গে যেকোনো প্রযুক্তির সেবা দেওয়ার জন্য প্রযুক্তি নিরপেক্ষতা বা টেকনোলজি নিউট্রালিটির দামও ঠিক করা হয়েছে নীতিমালায়। এতে মেগাহার্টজ প্রতি তরঙ্গের দাম ধরা হয়েছে ৩২ কোটি টাকা, এটি এত দিন ছিল ৬০ কোটি টাকা।

তবে এই দাম পেতে হলে একটি মোবাইল ফোন অপারেটরের কাছে যত তরঙ্গ আছে, তার সবটাই প্রযুক্তি নিরপেক্ষ করতে হবে। সব তরঙ্গ প্রযুক্তি নিরপেক্ষ না করলে মেগাহার্টজ প্রতি দাম ৬০ কোটি টাকাই দিতে হবে।

বাংলাদেশে মুঠোফোন অপারেটররা বর্তমানে দ্বিতীয় (টুজি) ও তৃতীয় (থ্রিজি) প্রজন্মের সেবার জন্য তিনটি আলাদা ব্যান্ডের তরঙ্গ ব্যবহার করে। এই তিনটি ব্যান্ড হলো ৯০০, ১ হাজার ৮০০ ও ২ হাজার ১০০ মেগাহার্টজ। প্রযুক্তি নিরপেক্ষতা পেলে এই তিনটি ব্যান্ডের তরঙ্গ দিয়েই টুজি, থ্রিজি ও ফোরজি সেবা দিতে পারবে মুঠোফোন অপারেটররা।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ