আওয়ার ইসলাম: রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বিভিন্ন অনিয়মের দায়ে ৬টি ক্লিনিককে ২৬ লাখ টাকা জরিমানা করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব-২) ভ্রাম্যমান আদালত।
বুধবার(২৯ নভেম্বর) দুপুর 2টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত র্যাব-২ এর উদ্যোগে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের সহযোগিতায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন র্যাব সদর দফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম।
ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার সময় উপস্থিত ছিলেন- র্যাব-২ এর সহকারী পরিচালক এএসপি সাইফুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মেডিকেল অফিসার ডা. দেওয়ান মেহেদী হাসান ও ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের ড্রাগ সুপার সৈকত কুমার কর ও রাজিবুল হাবিব।
র্যাব-২ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম জানান, মোহাম্মদপুর ২১/১৪ বাবর রোডের মক্কা মদিনা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে সেখানকার রোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদেরকে পঙ্গু হাসপাতাল থেকে দালালদের মাধ্যমে আনা হয়েছে এবং দফায় দফায় কয়েকবার মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েও সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করছে।
তারা একজন রোগীর অপারেশন ও ওষুধসহ চিকিৎসার জন্য তাদের সাথে চুক্তিকৃত ৩০ হাজার টাকা দেয়ার পরেও পুণরায় রোগীকে আরও ওষুধ বাবদ ১০ হাজার টাকা অতিরিক্ত আদায় করে। কিন্তু সর্বশেষ আরও ২ হাজার টাকা দাবি করায় রোগীর স্বজনরা উক্ত টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় রোগীকে ছাড়পত্র না দিয়ে গতকাল থেকে আটকে রাখা হয়।
এছাড়াও হাসপাতালটিতে অনুমোদিতহীনভাবে রক্ত পরিশঞ্চালন করা, রক্তের ব্যাগে ডোনারের বিবরণ না থাকা, রক্ত সংগ্রহের তারিখ ও মেয়াদ উল্লেখ না থাকা, সাধারণ ফ্রিজে রক্ত সংরক্ষণ করা এবং নোংরা পরিবেশে হাসপাতাল পরিচালনাসহ বিভিন্ন অনিয়ম প্রমাণিত হয়।
ভ্রাম্যমান আদালত কর্তৃক উক্ত হাসপাতালের ৩ জনকে আটক করা হয়। র্যাবের বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম আটককৃতদের দোষ স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ৬ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে প্রত্যেককে ২ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন এবং হাসপাতাল হতে রোগীদের সুচিকিৎসার জন্য জাতীয় অর্থোপেডিক (পঙ্গু) হাসপাতালে প্রেরণের নির্দেশ দিয়ে উক্ত হাসপাতালটি সীলগালা করে দেন।
একই এলাকায় শেফা হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সন্ধি ডায়াগনস্টিক সেন্টার, বাংলাদেশ ট্রমা স্পেশালাইজড হাসপাতাল, মেডিকম ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও জেনিথ মেডিকেল সেন্টারে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনাকালে দেখা যায়, ডাক্তারের ভুয়া স্বাক্ষরযুক্ত প্যাথলজিক্যাল রিপোর্ট; বিভিন্ন ডায়ানস্টিক টেস্টের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে মেয়াদ উত্তীর্ণ রি-এজেন্ট, অত্যন্ত নোংরা পরিবেশে হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক ল্যাব পরিচালনা, এক্স-রে রুম অত্যন্ত নোংরা ও মানহীন, অপারেশন থিয়েটার নোংরা ও ধুলোবালিযুক্ত, ল্যাবরুমের সামনে দরজায় কার্যক্রম বন্ধ লেখা থাকলেও বাস্তবে ভেতরে ল্যাব এর সকল কার্যক্রম অবৈধভাবে পরিচালনা করা, ড্রাগ লাইসেন্স ব্যতীত ওষুধ বিপণন করা এবং প্রশিক্ষিত নার্স না থাকা ইত্যাদি অভিযোগে ৮ জনকে আটক করা হয়। এছাড়াও মেয়াদ উত্তীর্ণ রি-এজেন্ট জব্দ করা হয়।