আওয়ার ইসলাম: বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর প্রিন্সিপাল আল্লামা হাবীবুর রহমান বলেছেন, রোহিঙ্গা মুসলমানদের নাগরিত্ব, নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে তাদেরকে মায়নমার জান্তার হাতে ছেড়ে দেওয়া যাবে না। উল্লেখিত শর্ত সাপেক্ষে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীসহ জাতিসংঘের শান্তি বাহিনীর তত্ত্বাবধানে তাদের পুনর্বাসিত করার ব্যবস্থা করতে হবে সরকারকে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন নিয়ে মানুষ সন্দেহ করছে। সুতরাং সন্দেহের সকল পথ বন্ধ করে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে সরকারকে উদ্যোগী ভূমিকা পালন করা সময়ে দাবী।
তিনি আরও বলেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য বার বার বৃদ্ধি করা হচ্ছে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষ দিশেহারা। তাই জনতার ক্ষোভ অনুধাবন করে এসব বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।
তিনি আজ বিকেলে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ৬ষ্ঠ অধিবেশনে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বের ইসলাম বিরোধি পরাশক্তিগুলো নানামুখী চক্রান্তের মাধ্যমে ইসলাম ও মুসলমান নির্মূল করে চলছে। এ কঠিন পরিস্থিতিতে উম্মাহর সদস্য হিসাবে আল্লাহর জমিনে তার বিধান কায়েমের সংগ্রামে সকল মুসলমানকে নিজেদের জানমাল নিয়ে ঝামিয়ে পড়তে হবে। রাসুল সা. এর আদর্শে আদর্শান্বিত হয়ে কাজ করে যেতে হবে।
মুহাম্মদপুর টাউন হল মাঠে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত ৬ষ্ঠ কেন্দ্রীয় সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তিনি সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হকের পরিচালনায় অধিবেশনে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের অভিভাবক পরিষদের চেয়ারম্যান শায়খুল হাদীস আল্লামা আশরাফ আলী।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এবং উপস্থিত ছিলেন, সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা ইসমাঈল নূরপুরী, নায়েবে আমীর মাওলানা খুরশিদ আলম কাসেমী, মাওলানা আফজালুর রহমান, মাওলানা আলী ওসমান, মাওলানা রেজাউল করীম জালালী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন।
সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা কুরবান আলী কাসেমী, মাওলানা আব্দুল আজীজ, মাওলানা ডক্টর জিএম মেহেরুল্লাহ, সদ্য যোগদানকারী মাওলানা মুফতী শরাফত হোসাইন, বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা মাহবুবুল হক, অফিস ও বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলনা এনামুল হক নূর, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা মুহসিনুল হাসান, সহ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা হারুনুর রশীদ ভূঁইয়া।
নির্বাহী সদস্য মাওলানা হোসাইন আহমদ, মাওলানা নিয়ামতুল্লাহ, মাওলানা জসিম উদ্দীন, মাওলানা মুফতী হাসান মুরাদাবাদী, মাওলানা হাবীবুর রহমান কাসেমী, মাওলানা সিরাজুল ইসলাম সিরাজী, ঢাকা মহানগরীর সভাপতি হাফিজ মাওলানা এনামুল হক মূসা, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা রুহুল আমীন খান, সদ্য যোগদানকারী মাওলানা ফয়সাল আহমদ, যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী, ইসলামী ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ রহমত আলী, সেক্রেটারী জেনারে মুহাম্মদ সাইদুর রহমান সানী সহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা শাখার ডেলিগেট বৃন্দ ।
অধিবেশনে ঘোষিত প্রস্তাবনা সমূহ: আল্লাহ, রাসূল সা. ও ইসলামের বিরুদ্ধে কটূক্তিকারীদের মৃত্যুদন্ডের বিধান পাশ করে নাস্তিক ব্লগার ও উগ্র হিন্দুদের লাগাতার কটূক্তি বন্ধ করতে হবে।
বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নাগরিত্বসহ তাদের সকল মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে সরকারকে আরো জোরালো কূটনৈতিক ভূমিকা রাখতে হবে।
নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়েই চলছে। এ ঊধ্বগতি রোধে সরকারকে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে।
জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী আগামী জাতীয় নির্বাচন নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করার জন্য সরকারকে কার্যকরী ভূমিকা নিতে হবে।
বারবার গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত। সুতরাং বিদ্যুতের দাম বাড়ানো থেকে সরকারকে বিরত থাকতে হবে।
মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, ইসলাম ও রাসূল সা. কে নিয়ে কুটুক্তির মাধ্যমে দাঙ্গা সৃষ্টি করে বিদেশী হস্তক্ষেপের মাধ্যমে বাংলাদেশকে তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য চক্রান্ত চলছে। সরকার ও দেশবাসীকে এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।
বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি প্রশ্নে তিনি জ্বালানী উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে বলেন, প্রচার মাধ্যমে গণ সংবাদ শুনানীগুলো পর্যালোচনা করে জনগণের ক্ষোভ অনুধাবন করুন। রোহিঙ্গাদের পূনর্বাসনের বিষয়ে তিনি বলেন জাতীসংঘ, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গন বাংলাদেশ মায়ানমার চুক্তি অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার সমর্থন করছেন না।
রোহিঙ্গাদের আবারও বিপর্যয়ের মুখে না ফেলে তাদের নাগরিকত্ত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করতে হবে। ভারতের আসামে মুসলমানদের নাগরিকত্ত্ব না দেওয়ার চক্রান্ত মেনে হবে না।