আওয়ার ইসলাম: ব্যবসা সম্প্রসারনের অংশ হিসেবে গালফ আয়েল ইন্টারন্যাশনালের সাথে যৌথভাবে ব্যবসা শুরু করলো ইফাদ অটোস লিমিটেড।
বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের এক অভিজাত হোটেলে দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশের স্বনামধন্য অটোমোবাইল কোম্পানী ইফাদ অটোস লিমিটেড যুক্তরাজ্য ভিত্তিক গালফ ইন্টারন্যাশনালের সাথে যৌথ উদ্যোগে লুব্রিকেন্ট অয়েল প্রস্তুত এবং বাংলাদেশের বাজারে সরবরাহ করবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ডেপুটি ব্রিটিশ হাইকমিশনার মি. ডেভিড এ্যাসলী।
অনুষ্ঠানে ইফাদ অটোস লিমিটেডের চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ টিপু, ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসকিন আহমেদ, গালফ অয়েল ইন্টারন্যাশনালের ভাইস প্রেসিডেন্ট-(ইন্টারন্যাশনাল) মি: ফ্রান্ক রুট্টেন এবং গালফ অয়েল বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মি. রবি চাওলা বক্তব্য রাখেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে গালফ অয়েল বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অমলান মিত্র, ইফাদ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদ, পরিচালক তাসফিন আহমেদ ও দুটি প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, ব্যাংকার সহ গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ইফাদ অটোস লিমিটেডের চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ টিপু বলেন, গালফ অয়েল ইন্টারন্যাশনালের সাথে চুক্তি নি:সন্দেহে একটি শ্মরনীয় মূহুর্ত। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইফাদ যেভাবে মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনে সমর্থ হয়েছে, ভবিষ্যতেও সে ধারা অব্যাহত থাকবে।
বিগত ৩২ বছরেরও বেশী সময় ধরে ইফাদ অটোস দেশের পরিবহন খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে। গাড়িতে ব্যবহৃত হয় এমন আরো কিছু জিনিষপত্র বাজারজাত করারও পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
গালফ অয়েল বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অমলান মিত্র বলেন, গালফ এবং ইফাদ পারস্পরিক অংশিদারিত্বের ঘোষনা দিতে পারায় তিনি উৎফুল্ল।
তিনি বলেন, ইফাদ বাংলাদেশের একটি প্রতিষ্ঠিত এবং স্বনামধন্য বাণিজ্যিক গ্রুপ। যার রয়েছে চমৎকার মার্কেটিং টিম। রয়েছে গালফের সহযোগি প্রতিষ্ঠান অশোক লেল্যান্ডের সাথে দীর্ঘ এবং সাফল্যজনক ইতিহাস।
তিনি দৃঢ়তার সাথে বলেন, ব্যবসা সম্প্রসারনের এই যৌথ উদ্যোগটি অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
ইফাদ অটোস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসকিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে ইফাদের অনেক অবদান রয়েছে। ইফাদ অটোসের সাথে পৃথিবীর বিখ্যাত এবং সুনামধন্য গালফ অয়েল ব্র্যান্ডের সাথে পার্টনারশিপ ব্যবসা ২০২২ সালের মধ্যে ইফাদের যে লক্ষ্য তা অর্জনে আরো বেশী ভুমিকা রাখবে।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ভবিষ্যৎ অগ্রযাত্রায় গালফ ইফাদের পাশে থাকবে তাদের অংশীদার হিসেবে।
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে গালফ অয়েল বাংলাদেশে লুব্রিকেন্ট অয়েল ব্যবসায় অত্যন্ত দ্রুত প্রসার লাভ করেছে। আশা করা যাচ্ছে, এই যৌথ উদ্যোগটি বাংলাদেশে গালফ ব্র্যান্ড এবং এর পণ্য বাংলাদেশে বাজারজাত করণের মাধ্যমে দুটি কোম্পানী লাভবান হবে।
পাশাপাশি এর মাধ্যেমে বাংলাদেশী অটোমোবাইল ব্যবসা এবং জনবল উপকৃত হবে। বাংলাদেশ ও প্রতিবেশী দেশের সেবাদানের প্রদানের জন্য গালফ অয়েল কোম্পানী এদেশে ম্যানুফ্যাকচারিং/ব্লেন্ডিং প্ল্যান্ট স্থাপন করবে। গালফ অয়েলের বাংলাদেশে লক্ষ্য এবং পরিকল্পনা হচ্ছে, পরবর্তি চার বছরের মধ্যে প্রথম তিন শীর্ষ লুব্রিকেন্ট কোম্পানীর একটি হওয়া।
গালফ অয়েল বাংলাদেশ, গালফ অয়েল ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপের একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। উল্লেখ্য, গালফ অয়েল ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপ হিন্দুজা গ্রুপের বিশ বিলিয়ন ডলার এর একটি অংশ। গালফ ব্র্যান্ড বিশ্বের প্রতিষ্ঠিত সর্ব বৃহৎ অয়েল ব্র্যান্ডগুলোর একটি। যেটি ১৯০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে কার্যক্রম শুরুর পর এখন বিশ্বের একশটিরও বেশি দেশে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
গালফ ইন্টারন্যাশনাল বর্তমানে বিশ্বের দ্রুত সম্প্রসারনশীল লুব্রিকেন্ট অয়েল কোম্পানীগুলোর মধ্যে অন্যতম। সয়ংক্রিয় শিল্পজাত, কৃষিজাত এবং সামুদ্রিকযানের যন্ত্রপাতিতে এই লুব্রিকেন্ট ব্যবহারের ব্যাপক সুনাম রয়েছে। এই লুব্রিকেন্ট ওয়েলের ব্ল্যান্ডিং প্লান্ট বিশে^র ২০টিরও বেশী স্থানে রয়েছে।
ইফাদ গ্রুপ যারা বর্তমানে স্বয়ংক্রিয় শিল্পজাত যন্ত্রপাতি, মৎস্য ও কৃষি খামার, ফুড ম্যানুফ্যাকচারিং ও তথ্য প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ করে বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে অবদান রাখছে। দেশের অগ্রযাত্রার সাথে সাথে ইফাদ গ্রুপও যাতায়াত, খাদ্য এবং অন্যান্য শিল্প খাতে একের পর এক শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে যাচ্ছে গত ৩২ বছর যাবৎ।
বর্তমানে প্রায় ৭ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারি এ গ্রুপে কাজ করছে। যার বার্ষিক টার্নওভার ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা ২০২২ সালের মধ্যে দ্বিগুন হবে।
অশোক লেল্যান্ডের গাড়ি ডিস্ট্রিবিউটরশিপের মাধ্যমে ১৯৮৫ সালে ইফাদ অটোস যাত্রা শুরু করে। এখন পর্যন্ত কোম্পানীটি অশোক লেল্যান্ডের প্রায় ৬০ হাজার বাণিজ্যিক গাড়ি সরবরাহ করেছে কোম্পানীটির নিজস্ব শো-রুম, ডিলারশিপ, জোনাল অফিস এবং অথোরাইজড সার্ভিস স্টেশনের নেটওয়ার্কিং এর মাধ্যমে। একইভাবে কোম্পানীটির গালফ এর প্রডাক্টও সারা দেশে পৌছে দেবে।