রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৭ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ইলিশের ওপর নিষেধাজ্ঞা ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন, সবার অধিকার নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি: নাহিদ ইসলাম গাজায় দখলদার ইসরায়েলি বর্বরতায় নিহত আরও শতাধিক নিরিহ ফিলিস্তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে কঠোর বার্তা জামায়াতের ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি সন্দেহের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন ড. ইউনূস আবারও সোনার দামে রেকর্ড ডেমরা যাত্রাবাড়ীর ৬০০ শিক্ষার্থীকে ট্রাফিক সম্মাননা প্রদান কিশোরগঞ্জ নিকলীর হিলচিয়া মাদরাসা থেকে ছাত্র নিখোঁজ, সন্ধান চেয়ে পরিবারের আকুতি হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগর কমিটি ঘোষণা

ত্রাণ বিতরণে কৌশলগতভাবে পিছিয়ে পড়ছে আলেম সমাজ!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ইশতিয়াক সিদ্দিকী
হাটহাজারী থেকে

গত ২৫ আগস্টের পর থেকেই বাংলাদেশে নতুন করে অনুপ্রবেশ ঘটে রোহিঙ্গাদের। সরকারি-বেসরকারি তথ্যমতে প্রায় ৮লক্ষাধিক রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

দেশের আলেম সমাজ, দীনদার ব্যক্তিবর্গসহ সর্বস্তরের মানুষ সামর্থ অনুযায়ী মজলুম রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে।

কিন্তু মাস যেতে যেতে ব্যক্তি উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণের ধারা কমতে শুরু করেছে। আগের মত ত্রাণ বিতরণের সেইদৃশ্য চোখে পড়ছে না। সবাই যার যার মত ক্লান্ত। পরিশ্রান্ত।

অনেকে একবার ত্রাণ বিতরণ করে, টেকনাফ সফর করেই তৃপ্তির ঢেকুর তুলতে শুরু করেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বর্তমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে আলেমদের উপস্থিতি খুবই অল্প। উখিয়া থেকে টেকনাফ পর্যন্ত রাস্তার পাশে বিভিন্ন এনজিও সংস্থার ব্যানার আর ফেস্টুন।

দেশি বিদেশি দাতা সংস্থা ও এনজিও সংস্থার কার্যক্রম চলছে চোখে পড়ার মত। ব্রাক, সাজেদা ফাউন্ডেশন, কারিতাস, ইউনিসেফ, বিশ্ব খাদ্য সংস্থার পক্ষ থেকে শত শত কর্মী নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

তারা ক্যাম্পের তাঁবুতে গিয়ে গিয়ে স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে, খাবার বিলি করছে।

এমন পরিস্থিতি দেখে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে আলেম সমাজের কৌশলভাবে পিছিয়ে পড়ছে বলে মনে করছেন অনেকে।

পর্যবেক্ষকগণ মনে করেন, দেশের আলেম সমাজ রোহিঙ্গাদের সাহায্যার্থে কোটি-কোটি টাকা অকাতরে বিলিয়ে দিলেও প্রচারে ততটা আসেনি। ফলে জনগণ এ বিষয়ে অনেকটা অন্ধকারেই বলা যায়।

অন্য দিকে প্রথম প্রথম দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমগণ রোহিঙ্গা ক্যাম্প সফর করলেও এখন অনেকে এসব নিয়ে ভাবছে না।

যতই দিন গড়াচ্ছে আলেম-দীনদার শ্রেণির ব্যক্তিদের আনাগোনা কমে যাচ্ছে।

অন্য দিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে দিন দিন বেড়ে চলছে দেশি-বিদেশি এনজিও সংস্থার আনাগোনা।

ক'দিন আগে প্রায় চল্লিশ জনের গ্রুপের বিদেশি নারীকে দেখা গেছে যারা রোহিঙ্গা শিবিরের ঝুপড়িগুলোতে ঢুকে রোহিঙ্গা মেয়েদের সাথে খোশ-গল্প করছে, এমনকি চুল পর্যন্ত আঁছড়ে দিচ্ছে। আরো অবাক করা বিষয় হলো তারা সবাই বাংলায় কথা বলতে পারে!

সচেতন মহল তাদের এমন উপস্থিতিকে ভালো নিচ্ছে না। অনেককে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিতে দেখা গেছে।

তবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করছেন হাফেজ্জী হুজুর সেবা সংস্থা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, যুব মজলিস, মারকাজুত তাকওয়া, খাদেমুল ইসলাম, তালিমুদ্দীন ফাউন্ডেশনসহ বেশ কিছু সংস্থা। উদ্যোগগুলো স্থায়ী না হলে উদ্দেশ্য ভেস্তে যেতে পারে বলে অনেকের অভিমত।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে হাফেজ্জী হুজুর সেবা সংস্থা। সংস্থার চেয়ারম্যান মাওলানা রজীবুল হক জানান, আমরা ট্যাংখালীতে শতাধিক টিউবেল-টয়লেট নির্মাণ করেছি। কিছু দিন পর গিয়ে দেখি, অধিকাংশ টয়লেট টিউবেলে এনজিও সংস্থা ব্র্যাকের লোগো।

তবে বর্তমানে আমরা নতুন কৌশল অবলম্বন করেছি যেন তারা এমন নিচু কাজ করতে না পারে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ত্রাণ বিতরণে কাজ করেছে এমন কিছু আলেম জানান, উলামাদের হাতে কোটি কোটি টাকা বিতরণ হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশই ব্যক্তিকেন্দ্রিক। ফলে ত্রাণবিতরণে সমন্বয় সম্ভব হচ্ছে না। বেশিরভাগ ত্রাণদাতা দিনে দিনে ত্রাণ বিতরণ করে ফিরে আসেন। কিছু দিন পর এনজিও সংস্থাগুলো গিয়ে নিজেদের লোগো লাগিয়ে দিচ্ছে।

তারা বলেন, ত্রাণ বিতরণে সমন্বয়হীনতায় এসব সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আশা করি বড়রা এ নিয়ে নতুন কোন কর্মপদ্ধতি গ্রহণ করবেন!


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ