হামিম আরিফ
বিশেষ প্রতিবেদক
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা মুসলমানদের ধর্মান্তরিত করে খৃষ্টান বানানোর তৎপরতা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সেবার আড়ালে কোন এনজিও সংস্থা যাতে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ধর্মান্তরিত করতে না পারে সেদিকে সরকারকে কঠোর নজর রাখতে হবে। রোহিঙ্গারা যেমন এদেশে তাদের প্রাণ রক্ষার জন্য এসেছে, ঠিক তারা তাদের ঈমান রক্ষার জন্য আমাদের দেশে আশ্রয়গ্রহণ করেছে।
সুতরাং রোহিঙ্গা মুসলমানদের ঈমান বিনষ্টের সকল পথ সরকারকে বন্ধ করতে হবে।
নেতারা বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে নবনির্মিত মসজিদ, মাদরাসা ও মক্তবগুলো যাতে অক্ষত থাকে সে ব্যাপারে সরকারকে যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে।
বিদেশী এনজিওদের প্ররোচনায় যদি কোন মসজিদ-মাদরাসা কিংবা মক্তবের উপর আঘাত আসে তাহলে এদেশের ইসলামী জনতা তা প্রতিহত করবে।
জমিয়ত নেতারা আরো বলেন, বর্তমানে দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি মারাত্মক অবনতির দিকে। সরকার যদি আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয় তাহলে দেশের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা সর্বগ্রাসী রূপ ধারণ করবে, যার খেসারত সরকারকেই বহন করতে হবে।
আজ (১৪ অক্টোবর) দুপুরে পল্টনস্থ দলীয় কার্যালায় জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠকে দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের অন্যতম সহ-সভাপতি মাওলানা শায়খ জিয়াউদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বক্তব্য রাখেন দলের মহাসচিব আল্লামা নূর হোছাইন কাসেমী, সহ-সভাপতি মাওলানা জহিরুল হক ভূইয়া, মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব সাবেক সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরী, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, মাওলানা তাফাজ্জুল হক আজীজ, মাওলানা নাজমূল হাসান, মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী, মাওলানা মোহাম্মাদ উল্লাহ জামী, মাওলানা গোলাম মহিউদ্দীন ইকরাম, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আতাউর রহমান
মাওলানা আব্দুল হক কাউছারী, মাওলানা আব্দুল বছির, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মতিউর রহমান গাজীপুরী, মাওলানা মাহবুবুল্লাহ, মাওলানা আব্দুল্লাহ আল হাসান, অর্থ সম্পাদক মুফতী মুনির হুসাইন, প্রচার সম্পাদক মাওলানা জয়নুল আবেদীন, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মুফতী আনোয়ার মাহমুদ, সমাজ সেবা বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব আতিকুর রহমান, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান, যুব বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা শরফুদ্দীন ইয়াহইয়া কাসেমী
ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মুফতী নাসির উদ্দীন খান, কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা মুশাহিদ খালোপারী, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা খলীলুর রহমান, মাওলানা সানাউল্লাহ মাহমুদী, মাওলানা মাহবুবুর রহমান, মাওলানা আব্দুল মালেক চৌধুরী, মাওলানা নজরুল ইসলাম, মাওলানা শিব্বির আহমদ ও মাওলানা তৈয়ব আল হোসাইনী প্রমুখ।
বৈঠকে মজলিসে আমেলায় বেশ কয়েকটি প্রস্তাব পেশ করা হয়। এগুলো হলো,
১. রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতীয় ঐক্য অপরিহার্য। আমরা মনে করি এই মানবিক ইস্যুতে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমেই কার্যকারী কুটনৈতিক তৎপরতা সফলতা পাবে।
২. রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে কফি আনান কমিশন বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে।
৩. প্রধান বিচারপতির ছুটি নিয়ে জনগণের মধ্যে ধুম্রজালের সৃষ্টি করা হয়েছে। তিনি সুস্থ, না অসুস্থ এ নিয়ে এক লুকোচুরি খেলা চলছে। এমতাবস্থায় বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা আজ হুমকির সম্মুখীন। আমরা সরকারের এহেন লকোচুরি খেলার নিন্দা জ্ঞাপন করছি।
৪. দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বংগতির কারণে জনগণের নাভিশ্বাস হচ্ছে। তাই দ্রব্যমূল্যের উধর্বগতি রোধ করতে হবে।
৫. বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। সাম্প্রতিক সময়ে নতুন করে গুম অপহরণ এবং বিরোধী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের গ্রেফতার করা হচ্ছে। আমরা এর কঠোর প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এছাড়াও আরো বেশ কয়েকটি প্রস্তাব গৃহীত হয়।