কাউসার মাহমুদ : দেশ, জাতি ও সমাজের অসহায়ত্ব আমাদের ভাবিয়ে তোলে। সহমর্মিতা জাগিয়ে তোলে হৃদয়বান নাগরিকের মনে। বর্তমানে বন্যার আঘাতে বিধ্বস্ত বাংলাদেশের অঞ্চলগুলোতে বসবাসরত মানুষের নাজেহাল অবস্থা এবং রোহিঙ্গা সংকট আমাদের সবার মনে দাগ কাটছ প্রতিনিয়ত।
সচেতন সামর্থ্যবানরা এগিয়ে এসেছেন অসহায় মানুষের জন্য। এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই কওমি তরুণরাও। বলা যায়, এ সময় সমাজ সেবায় কওমি তরুণদের মাঝে জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। নিজেদের সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে তারাও দাঁড়াতে শিখেছে মানুষের পাশে।
তাহলে কি কওমি তরুণরা আগে মানুষের পাশে দাঁড়াতো না। অবশ্যই তারা দাঁড়াতো। মানুষের সেবা তাদের শিক্ষা আদর্শের অন্যতম দিক। তবে এতো মানুষের জন্য তাদের সেবা ছিলো অপার্থিব ও ব্যক্তিগত। কিন্তু এখন তারা আর্থিক ও সম্মিলিত সহযোগিতার পথ ধরেছেন।
বর্তমান সেসব তরুণ আলেম সমাজের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তারা যে কোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি সচেতন এবং সমাজমুখী। দেশ, জাতি ও সমাজের যে কোনো দুর্দিনে তারা মানুষের পাশে দাঁড়াতে কুণ্ঠাহীন।
শুধু ব্যক্তিগতভাবে নয়; বরং তাদের মধ্যে অনেক সম্মিলিত প্রয়াসও দেখা যাচ্ছে। এলাকার আলেমদের কোনো সমিতির ব্যানারে, কোনো সংগঠন বা রাজনৈতিক সংগঠনের ব্যানারে, সমাজসেবামূলক সংগঠনের ব্যানারে; এমন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন গ্রুপ ও ইভেন্টের ব্যানারেও কাজ করছে তারা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানব সেবার লক্ষ্যেও তারা গড়ে তুলেছে বিভিন্ন গ্রুপ। সেখানে মুক্ত আলোচনা হয় সমাজের প্রয়োজন নিয়ে। সামাজিক প্রয়োজনে তাদের নানা উদ্যোগও চোখে পড়ে মাঝেমাঝে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কওমি তরুণদের অতি পরিচিত ও জনপ্রিয় একটি গ্রুপ আছে ‘আসহাবে কাহাফ’। এ গ্রুপের পুরুষ সদস্যদের মতোই নারী সদস্যরাও যথেষ্ট এক্টিভ।নারী সদস্যরা নিজের সাধ্যানুযায়ী বন্যা দুর্গতদের জন্য বেশ কিছু টাকা পাঠিয়েছেন বলে জানতে পেরেছি। সে টাকা দুর্গতদের মাঝে বিতরণও করা হয়েছে।
এছাড়াও জামিয়া শারইয়্যাইয়া মালিবাগ, জামিয়া ইকরা, ফরিদাবাদ, আফতাবনগরসহ আরো অনেক মাদরাসার শিক্ষার্থীরা বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছেন। বন্যাদুর্গত এলাকার কওমি মাদরাসাগুলোও মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছে এবং দুর্গত মানুষকে মাদরাসায় আশ্রয় দিয়েছে।
কওমি তরুণদের এ জাগরণ অবশ্যই প্রসংশার দাবিদার। আশা করা যায়, এ জাগরণ একদিন জাতীয় জীবনেও জাগরণের সৃষ্টি করবে। আল্লাহু মুয়াফফিকুও ওয়া মুয়িন।