মুফতি মুহাম্মাদ শোয়াইব : কোরবানির গোশত বন্টনের ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে,
فَكُلُوا مِنْهَا وَأَطْعِمُوا الْبَائِسَ الْفَقِي
‘তোমরা খাও এবং অভাবগ্রস্ত দরিদ্র লোকদের খাওয়াও’ (হজ্জ ২৮)।
তিনি আরও বলেন,
فَكُلُوا مِنْهَا وَأَطْعِمُوا الْقَانِعَ وَالْمُعْتَرَّ
‘তোমরা নিজেরা খাও, যারা চায় না তাদের খাওয়াও এবং যারা নিজেদের প্রয়োজন পেশ করে তাদের খাওয়াও’ (হজ্জ ৩৬)।
ইবনু মাসঊদ (রাঃ) কুরবানির গোশত তিনভাগ করে একভাগ নিজেরা খেতেন, একভাগ যাকে চাইতেন তাকে খাওয়াতেন এবং একভাগ ফকির-মিসকিনকে দিতেন।
আবদুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ) হুজুর সা. এর কুরবানির গোশত বন্টন সম্পর্কে বলেন, তিনি একভাগ নিজের পরিবারকে খাওয়াতেন, একভাগ গরিব প্রতিবেশীদের দিতেন এবং একভাগ ফকিরদেরকে দিতেন।
অতএব কুরবানির গোশত তিন ভাগ করা উত্তম ও মুস্তাহাব মাত্র। অবশ্য পুরো গোশত যদি নিজে রেখে দেয় তাতেও কোনো অসুবিধা নেই। প্রয়োজনে বণ্টনে কমবেশি করাতেও কোনো দোষ নেই (আল-মুগনী ১১/১০৮; মির‘আত ২/৩৬৯; ঐ, ৫/১২০ পৃঃ)।
উল্লেখ্য, কুরবানির গোশত যতদিন খুশি রেখে খাওয়া যায় (তিরমিজী হা/১৫১০, মিশকাত হা/২৭৪৪)।
বর্তমানে বিভিন্ন মহল্লায় প্রচলন রয়েছে, কুরবানির গোশতের এক-তৃতীয়াংশ একস্থানে জমা করে মহল্লায় যারা কুরবানি করতে পারেনি তাদের তালিকা করে সুশৃংখলভাবে তাদের মধ্যে বিতরণ করা ও প্রয়োজনে তাদের বাড়িতে পৌছে দেওয়া হয়। কাজটি দেখতে ভালো হলেও এটি জায়েজ নয়। কেননা এই প্রচলের ফলে কারও দিতে মনে না চাইলেও তাকে সমাজের খাতিরে দিতে হয়। হজুর সা. ইরশাদ করেছেন, কোনো মুসলমানে মাল তার সন্তুষ্টি ছাড়া গ্রহণ করা হালাল নয়। (মুসনাদে আহমদ : ১৫/২৯৩, রদ্দুল মুহতার : ৬/৪২৭, আলমগিরী/হিন্দিয়া : ৫/৩০০, হেদায়াহ : ৪/৪৪৯, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৪)
লেখক : সম্পাদক, মাসিক আলহেরা