শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ ।। ২৮ চৈত্র ১৪৩১ ।। ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
হারামাইনে আজ জুমার নামাজে ইমামতি করবেন যাঁরা ‘মার্চ ফর গাজা’য় অংশগ্রহণকারীদের জন্য জরুরি ৫ নির্দেশনা তালিবুল ইলমের আবশ্যকীয় পাঁচটি কাজ পাকিস্তানের সব সমস্যার পেছনে ইহুদি ষড়যন্ত্র থাকে: মাওলানা ফজলুর রহমান বাড়িতে বাবার লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিল নাহিদ মানবতার জন্য আপনিও আসুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে: শায়খ আহমাদুল্লাহ ইসরায়েলকে প্রতিহত করতে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ দরকার: বিএনপি মাদরাসাছাত্রদের কর্মসংস্থানের বিষয়ে কাজ করছে এনসিপি : নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী মুসলিম রাষ্ট্রের ওপর এখন সশস্ত্র ল’ড়াই ফরজ: মুফতি তাকি উসমানি ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি সফল করার আহ্বান শায়খে চরমোনাই’র

ইন্টারনেট আসক্তি: রক্ষা করুন আপনার সন্তানকে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

শেখ শানাওয়াজ আলী : আপনার সন্তানকে নিয়ে আপনি গর্বিত। কারণ সে ভালো রেজাল্ট করে, বাহিরে বাজে আড্ডা দিয়ে বেড়ায় না, বাজে কথা বলে না, ভদ্র হিসেবে পরিচিত সুধীমহলে। তার একটাই নেশা, তা হলো ইন্টারনেট সার্ফিং করা। এটা আর এমন কী! সময়টাই এমন যে ইন্টারনেট ছাড়া চলতে গেলে পিছিয়ে পড়তে হবে। তাই এক-আধটু ইন্টারনেট আসক্তি থাকলে কী এমন ক্ষতি! এই নেশায় ক্ষতির পরিমাণ কিন্তু একেবারে কম নয়। তাই সময় থাকতেই সচেতন হোন।এই ভয়াল নেশা থেকে আপনার শিশুকে রক্ষা করুন।

 আপনার সন্তান ইন্টারনেট আসক্ত হয়ে পড়েছে? 

অনলাইনে বসলে সময়ের জ্ঞান থাকে না। নেটে বসার জন্যে ঘুম বিসর্জন দেয়। অনলাইনে থাকাকালীন সময়ে কোন কাজ করতে বললে ক্ষেপে যায়। নেটে বসতে না দিলে ক্ষিপ্ত হয়। হোমওয়ার্কের বদলে নেটে বসাকে গুরুত্ব দেয়। বন্ধু-বান্ধব, এবং আত্মীয়-স্বজনের সাথে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। বাড়তি সময় নেটে কাটানোর ব্যাপারে মিথ্যে বলে। নতুন নতুন অনলাইন বন্ধু তৈরি হয়। পুরোনো শখগুলোর প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।
দিনে অনেক বার ই-মেইল চেক করে ইত্যাদি লক্ষণ প্রকাশ পেলে ধরে নিবেন যে আপনার সন্তান ইন্টারনেট আসক্ত হয়ে পড়েছে।

আপনার সন্তানের জন্য  ইন্টারনেট আসক্তি ক্ষতিকর? 

এই আসক্তির পরিণাম- নেটে আসক্ত শিশু শারীরিক পরিশ্রম থেকে দূরে সরে থাকে। আর এর সাথে যদি ফাস্টফুড খাবার কুঅভ্যাস যুক্ত হয়, তাহলে শিশু স্থুলতায় ভুগতে পারে। এমন কী আক্রান্ত হতে পারে ডায়াবেটিসে।অতিরিক্ত ইন্টারনেট আসক্তি এডিএইচডি (অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপার অ্যাক্টিভিটি ডিসর্ডার) নামক মানসিক রোগের সৃষ্টি করে। এই রোগে আক্রান্ত শিশু নির্দিষ্ট কোনো কাজে পূর্ণ মনোযোগ প্রদান করতে পারে না।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশান-এর মতে চার থেকে সতেরো বছর বয়েসী অন্তত ৬০ লক্ষ শিশু-কিশোর বর্তমানে এডিএইচডি-তে আক্রান্ত। আক্রান্ত শিশুরা খিটখিটে মেজাজের হয়, মিথ্যে কথা বলে, এবং সবার সাথে অহেতুক তর্কে লিপ্ত হয়। এছাড়া স্কুলের রেজাল্ট দিনদিন খারাপ হতে থাকে।

কীভাবে এই আসক্তি থেকে শিশুকে ফিরিয়ে আনা যায়?

বাবা-মার সাথে দূরত্বের কারণে সন্তান ইন্টারনেটের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়তে পারে। তাই তাকে সময় দিতে হবে। নৈতিক শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। তাকে নীতিবান মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে ওয়েব দুনিয়ার অশুভ দিকগুলো থেকে সে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারবে।

এছাড়া অভিভাবকদের কিছু টেকি জ্ঞান প্রয়োগ করার প্রয়োজনীয়তাও আছে। লক্ষ্য রাখতে হবে সন্তান কোন কোন ওয়েবসাইট ব্রাউজ করছে। নিয়মিত ব্রাউজারের হিস্টোরি চেক করা উচিত। বিভিন্ন ফিল্টারিং সফটওয়্যার, যেমন ফায়ারওয়াল ব্যবহার করা যেতে পারে। এর ফলে সন্তান অবৈধ ওয়েবসাইট ব্রাউজ করতে পারবে না।

কম্পিউটারটি ঘরের এক কোণায় না রেখে সবাই দেখতে পায় এমন জায়গায় রাখা উচিৎ। অনেক অভিভাবক আছেন, যারা ইন্টারনেট আসক্তির লক্ষ্যগুলো খেয়াল করলে অত্যন্ত রাগান্বিত হন এবং সন্তানকে পুরোপুরি ভাবে ইন্টারনেট ডিভাইসগুলো থেকে দূরে রাখেন। এর ফল শুভ হয় না। আসক্ত শিশুর মধ্যে নানারকম উইথড্রয়াল সিম্পটম দেখা যেতে পারে। তাই সন্তানের সাথে কথা বলে তার দৈনিক ইন্টারনেট ব্যবহারের সময়সীমা নির্ধারণ করে দিতে পারেন। মনে রাখতে হবে, রাগ দিয়ে কোন সমস্যার সমাধান হয় না। আদর, ধৈর্য এবং যুক্তির সাহায্যে সন্তানকে বোঝালে তবেই ভালো ফলাফল আসতে পারে।

এমআর


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ