আওয়ার ইসলাম : ঢাকাকে বাঁচাতে সারা দেশ থেকে রাজধানীমুখী মানুষের স্রোত থামাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানিয়ে বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ বলেছেন, আপনি ঢাকাকে বাঁচান। আপনি চির স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। রাজধানীতে যে পরিবেশ দুষণ। রাস্তাগুলো ড্রেনের নামে খোড়াখুড়ি হচ্ছে। বৃষ্টিতে মানুষজন চলতে পারছে না। গাড়ি চলতে পারছে না। স্কুলে যেতে পারছে না। এছাড়া প্রতিদিন ৯৬০ জন লোক ঢাকায় আসছে। লোকজন কাজের সন্ধানে স্রোতের মতো ঢাকায় আসছে।
ঢাকাতে তারা বস্তির মতো ঘরে ১০/১২ জন ঠাসাঠাসি করে থাকে। ঢাকাকে বাঁচাতে চাইলে জেলা উপজেলায় ছোট ছোট কলকারখানা করে দিন। যাতে যেখান থেকে লোকজন এসেছে, সেখানে ফিরে যেতে পারে। একইসঙ্গে তিনি ঢাকামুখী মানুষের চাপ কমাতে ৮টি বিভাগীয় শহরে হাইকোটের বেঞ্চ দেওয়ার আহ্বান জানান।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের ১৬তম ও বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এ অনুরোধ জানান।
চিকুনগুনিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, এখন প্রতি ঘরে ঘরে চিকুনগুনিয়া হচ্ছে। মানুষকে সচেতন করার জন্য যা যা করণীয় সে বিষয়ে আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। খাদ্যে ভেজাল সম্পর্কে বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, লবনে বিষ দিচ্ছে এটা কেউ চিন্তা করেছে? এখন চিন্তা করে দেখেন লবনে বিষ দিচ্ছে। ট্যানারীতে বা ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যবহার হওয়া লবন অনেক চেষ্টা করে মানুষকে খাওয়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। কারা এগুলো করছে? ছুরি দিয়ে মারা আর বিষ খাইয়ে মারা একই হচ্ছে। আইনের প্রয়োগে এটা নিয়ন্ত্রণ না করলে এই ভেজাল বন্ধ হবে না।
বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, বৃষ্টি হচ্ছে অতিরিক্ত, ড্রেনেজ সিস্টেম ভালো না হওয়ায় পানিটা জমে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে সঠিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করছি।
দেশের জনগোষ্ঠির বৃদ্ধির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, জনসংখ্যা কমানোর চেষ্টা না করলে ২০৫০ সালে আমাদের জনসংখ্যা হবে ২০ কোটি ২০ লাখ। এত মানুষ কোথায় বাড়িঘর করবে? কোথায় কৃষি জমি থাকবে? আমাদের দেশে এখন সাড়ে ১৬ কোটি মানুষ। ৮/৯ কোটি কর্মক্ষম মানুষ। আমাদের দেশের প্রায় ৫ কোটি মানুষের কাজ আছে। আর সাড়ে ৪ কোটি /৫ কোটি মানুষের কাজ নেই। কাজ না পেয়ে নতুন প্রজন্ম বিপথে যাচ্ছে। প্রতি বছর প্রায় ২৮ লাখ ছেলে-মেয়ে পড়ালেখা শেষ করছে। কাজ পাচ্ছে না। তারা ইয়াবা খাচ্ছে। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। উপজেলা-জেলা পযায়ে ছোট ছোট শিল্প প্রতিষ্ঠান যদি করে দেন, তাহলে আমরা এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে পারি। তাহলে কিন্তু আমাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এসময় তিনি চাকুরীতে প্রবেশের বয়সসীমা যদি বাড়ানোর দাবি জানান।
সম্প্রতি একটি প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঢাকা যখন তিলোত্তমা শহর ছিল তখন কলকাতা নোংরা শহর ছিল। এখন কলকাতা তিলোত্তমা ঢাকা নোংরা। তিনি বলেন, আমাদের দেশে সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার এখনো গড়ে ওঠেনি। ইলেকট্রনিক বর্জ্য হচ্ছে সবচেয়ে ভয়াবহ। এটার ঝুঁকি বেশি। মেডিকেল বর্জ্য অপসারণে কোনো ব্যবস্থা আমাদের দেশে গড়ে ওঠেনি। এই বর্জ্য গুলো কিভাবে অপসারণ করা হয় যাতে আমাদের পরিবেশ দূষণ না হয়।
রওশন বলেন, সবাই কিন্তু মোবাইল ব্যবহার করছে। যে দেশগুলো মোবাইল বিক্রি করছে তাদের উচিত অকেজো মোবাইল নিয়ে যাওয়া। কিন্তু আমাদের দেশে এ আইন নেই। এই ইলেকট্রনিক বর্জ্য কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ। বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, এসব সমস্যা মোকাবেলা করতে না পারলে কিন্তু আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ বা ভিশন ২০২১ বা ২০৪১ সালের ভিশন বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না।
-এজেড