আওয়ার ইসলাম: জাতীয় পার্টির (জাপা) কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, আগামী নির্বাচনের আগে সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন 'সহায়ক সরকার' গঠন সম্ভব। সংসদের বাইরে থাকা বিএনপিকেও ওই সরকারে অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব। এতে সংবিধানের ব্যত্যয় হবে না, বরং একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথ প্রশস্ত হবে।
নির্বাচনকালীন সরকার কেমন হতে পারে, সে সম্পর্কে নিজের ভাবনায় এসব কথা বলেন জিএম কাদের।
জিএম কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভায় পাঁচ বছর দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতার বিশ্বাস থেকে বলতে পারি আগামীতেও তিনি একটা সমঝোতা প্রস্তাব দিতে পারেন।
কাদের বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীকে যতটা জানি তাতে আমার ধারণা, আগামীবার তিনি ২০১৪ সালের মতো নির্বাচন করবেন না। তিনি একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে চান।' জিএম কাদের মনে করেন, ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তা খুবই যুক্তিসঙ্গত। আগামী নির্বাচনেও প্রাসঙ্গিক।
দশম সংসদে বিএনপির প্রতিনিধিত্ব নেই- দলটি কীভাবে মন্ত্রিসভায় শরিক হতে পারে- এ প্রশ্নের উত্তরে জিএম কাদের বলেন, 'নির্বাচনকালীন সরকার যদি ৬০ সদস্যের হয়, সেখানে ছয় টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী আসতে পারবেন।
বিএনপি প্রতিনিধিদের টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী করে মন্ত্রিসভায় আনা সম্ভব।' সরকারের আকার যদি ছোট হয়, সেক্ষেত্রে 'প্রধানমন্ত্রী বিএনপির প্রতিনিধিদের মন্ত্রী মর্যাদায় উপদেষ্টা করতে পারেন। তারা যাতে মন্ত্রণালয়ে নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন, তার জন্য একটি আদেশই যথেষ্ট।'
তবে নির্বাচনকালীন সরকারে শেখ হাসিনা থাকতে পারবেন না, বিএনপির এমন দাবি সমর্থন করেন না জিএম কাদের। তিনি বলেন, 'শেখ হাসিনার প্রতি সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের আস্থা রয়েছে। তাই তাকে বাদ দেওয়ার দাবি তোলা যুক্তিসঙ্গত নয়।'
আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর অধীনে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন হলে বিএনপি সেখানে কতটা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে- এ প্রসঙ্গে জিএম কাদের বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করতে হবে, বিএনপি বা অন্যান্য দল থেকে যেসব মন্ত্রী নির্বাচনকালীন সরকারে আসবেন, তাদের কাজে হস্তক্ষেপ করা হবে না।
আওয়ামী লীগের বাইরে থেকে আসা মন্ত্রীরা নির্বাচনের সময় যাতে স্বাধীনভাবে মন্ত্রণালয় চালাতে পারেন, সেজন্য তার পছন্দের টিম (সচিব ও অন্যান্য কর্মকর্তা) দিতে হবে।'
জিএম কাদের বলেন, স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, তথ্য, শিক্ষা এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সরাসরি নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এ মন্ত্রণালয়গুলো ভাগাভাগি হতে পারে নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভায় প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোর মধ্যে। যেমন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিএনপি কিংবা জাপাকে ছেড়ে দিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। এর মাধ্যমে আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি হবে।
জাতীয় নির্বাচনে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। জিএম কাদের বলেন, নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পদায়নে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর অভিমত নেওয়া উচিত।
এসএস/