বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


কাতারে বাড়ছে বাংলাদেশি সবজির চাহিদা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম : সৌদি আরব, আরব আমিরাত, মিসরসহ ছয়টি দেশের অবরোধের কারণে কাতারে বাংলাদেশি সবজির চাহিদা বেড়েছে। উড়োজাহাজে জায়গা সংকুলানের অভাবে বেশি সবজি কাতারে নেওয়া যাচ্ছে না। এ সমস্যার সমাধান হলে বাড়বে বাংলাদেশি সবজির বিক্রি। 

কাতারের বিরুদ্ধে সৌদি আরব, আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিসরের আরোপিত অবরোধে এসব দেশের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। বিশেষ করে কাতারের একমাত্র স্থলসীমান্ত সৌদি আরবের সঙ্গে থাকায় সেটিও গত ৫ জুন থেকে বন্ধ। এতে সৌদি আরব থেকে সব ধরনের শাক-সবজি ও অন্যান্য কাঁচামাল আমদানি বন্ধ রয়েছে।

কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের মাত্রা কমিয়ে দেওয়ার ঘোষণার পর জর্ডান থেকেও বন্ধ রয়েছে সব ধরনের সবজি আমদানি। এতে বাংলাদেশি সবজি ও অন্যান্য পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। আগের চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে সবজি ও কাঁচামাল নিয়ে আসছেন কাতারপ্রবাসী বাংলাদেশি আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা। চাহিদা ও জোগান বাড়লেও দাম আগের মতো রয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।

১৯৯০ সাল থেকে বাংলাদেশি সবজি আমদানির ব্যবসা করছে হীরা ফুড স্টাফ। ওই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক নাজিম উদ্দীন বলেন, আগে গড়ে প্রতিদিন তিন হাজার কেজি সবজি ও কাঁচামাল বাংলাদেশ থেকে কাতারে আসত। এখন এক মাস ধরে গড়ে পাঁচ হাজার কেজি আসছে। সপ্তাহের পাঁচ দিন কাতার এয়ারওয়েজ ও বাংলাদেশ বিমানে এসব সবজি আসছে।

নাজিম উদ্দীন আরো বলেন, সবচেয়ে বেশি আসছে চিচিঙ্গা, বরবটি, করলা। অন্যান্য কাঁচামালও আসছে। কলকাতা থেকেও সবজি ও কাঁচামাল কাতারের বাজারে ঢুকছে বলে জানান তিনি।

আল ফাতে মিয়া ট্রেডিংয়ের ব্যবস্থাপক বদিউল আলোকে বলেন, ‘আমরা প্রতি এক দিন পরপর বাংলাদেশ থেকে সবজিপণ্য আমদানি করি। আগে প্রতি চালানে গড়ে ৫০০ কেজি আনলে এখন আনছি এক টন করে। চাহিদা বেড়েছে, তাই আমরাও জোগান দিচ্ছি। কিন্তু দাম আগের মতোই আছে।’

কাতারের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার ‘কেন্দ্রীয় বাজারে’ দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ থেকে শাকসবজি ও কাঁচামাল আমদানি করছেন ব্যবসায়ী মাসুদ শেখ। তিনি বলেন, অবরোধ শুরু হওয়ার পর থেকে কাতারে বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। বিশেষ করে পটল, কাঁকরোল, কলা, চিচিঙ্গা, লতি, লম্বা বেগুন, লেবু, আলু, কাঁচা মরিচ ইত্যাদির চাহিদা ও বিক্রি বেড়েছে।

মাসুদ শেখ বলেন, এখন বর্ষার মৌসুম হওয়ায় কিছু পণ্য বাংলাদেশে আর পাওয়া যাচ্ছে না। পাওয়া গেলেও দাম বেশি। ফলে কাতারের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের সরবরাহ বাড়ানোর এ সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগানো সম্ভব হচ্ছে না। যেমন এখন করলা ও বরবটির প্রচুর চাহিদা রয়েছে। কিন্তু আমরা সেভাবে পাচ্ছি না। সৌদি আরব থেকে আসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভারত ও পাকিস্তান থেকে বেশ কিছু সবজিপণ্য আসছে। কিন্তু স্বাদে ও মানে বাংলাদেশের সবজিই ক্রেতাদের কাছে সেরা।

কেন্দ্রীয় বাজারে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিন একেকজন ব্যবসায়ী ১০ টন করে পণ্য আনতে চান। কিন্তু ফ্লাইটে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় তা সম্ভব হচ্ছে না।

কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমদ বলেন, কাতারের বাজারে বাংলাদেশি যেসব সবজি ও কাঁচামাল আসছে, এটি প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। বাংলাদেশ থেকে আমদানি আরও বাড়াতে প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমদানিকারক বাংলাদেশি বা অন্য দেশীয় ব্যবসায়ীরা যদি বাংলাদেশ থেকে পণ্য আনতে কোনো প্রক্রিয়াগত জটিলতার সম্মুখীন হন, তবে যেকোনো সময় তাঁরা আমাকে জানাতে পারেন। আমরা সেটি সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

-এজেড


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ