আওয়ার ইসলাম: সাধারণ মানুষদের মধ্যে ইসলামি ব্যাংকিংয়ের চাহিদা প্রচুর। সে চাহিদার কারণেই ইসলামী ব্যাংকিং শাখা বাড়াতে চায় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংক। ইতোপূর্বে এ চাহিদার ওপর ভিত্তি করেই ব্যাংকটি ৫টি ইসলামি শাখা চালু করেছিল। সেগুলোর সাড়া উৎসাহজনক বলে জানা গেছে।
জানা যায়, গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অবস্থিত ১৬টি শাখায় প্রচলিত ব্যাংকিং কার্যক্রমের পাশাপাশি ইসলামি ব্যাংকিং চালু করতে চায় ব্যাংকটি। আর এ জন্য নতুন করে ১৬ শাখায় ইসলামি ব্যাংকিং ‘উইন্ডো’ খোলার জন্য গত রোববার ব্যাংকটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আবেদন করেছে।
দেশে বর্তমানে ৫৭টি ব্যাংকের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ব্যাংক রয়েছে ৮টি। আর ১৬টি ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকিং উইন্ডো বা শাখা খুলে কার্যক্রম চালাচ্ছে। প্রচলিত ধারার এসব ব্যাংকের মধ্যে পাঁচটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ব্যাংকিংয়ে রূপান্তরের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে আবেদন করে রেখেছে।
সোনালী ব্যাংকের এমডি ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ স্বাক্ষরিত আবেদনে বলা হয়েছে, ইসলামী ব্যাংকিং মানসিকতার গ্রাহকদের চাহিদা বিবেচনায় ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবসার কর্মপরিধি বাড়াতে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ১৬টি শাখায় ইসলামী উইন্ডো খোলার অনুমতি দিয়েছে। ব্যাংকটির পাঁচটি শাখায় আলাদা উইন্ডোর মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরুর পর থেকে আমানত, বিনিয়োগ, মুনাফা ও গ্রাহকসংখ্যা বেড়েছে। এখন নতুন এসব শাখায় প্রচলিত ব্যাংকিং কার্যক্রমের পাশাপাশি ইসলামী ব্যাংকিং উইন্ডো খোলার অনুমতি দেওয়া হলে এ কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে। এ ছাড়া ধর্মপ্রাণ জনগোষ্ঠী শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিংয়ে সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ পাবে।
বর্তমানে পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ব্যাংক হিসেবে কার্যক্রম করছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, আল-আরাফাহ, শাহ্জালাল, এক্সিম, এসআইবিএল, ফার্স্ট সিকিউরিটি, আইসিবি ও ইউনিয়ন ব্যাংক। আর প্রচলিত ধারার শাখায় ইসলামী ব্যাংকিং উইন্ডো বা পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ব্যাংকিং শাখা খুলে কাজ করছে রাষ্ট্রীয় মালিকানার সোনালী ও অগ্রণী, বেসরকারি খাতের এবি, ব্যাংক এশিয়া, সিটি, ঢাকা, যমুনা, প্রিমিয়ার, প্রাইম, পূবালী, স্ট্যান্ডার্ড, সাউথইস্ট ও ট্রাস্ট ব্যাংক। এ ছাড়া বিদেশি মালিকানার স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড, এইচএসবিসি ও ব্যাংক আল-ফালাহ উইন্ডো বা শাখা খুলে ইসলামী ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে।
এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের এমডি বলেন, মুসলিমপ্রধান দেশ হিসেবে অসংখ্য মানুষ আছেন, যারা সুদভিত্তিক লেনদেন করতে চান না। তাদের চাহিদা বিবেচনায় ইসলামী ব্যাংকিং বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
সোনালী ব্যাংকের ঢাকার ওয়েজ আর্নার্স করপোরেট, চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ করপোরেট, খুলনা করপোরেট, বগুড়া করপোরেট ও সিলেটের দরগাহ গেট করপোরেট শাখায় ইসলামী ব্যাংকিং উইন্ডো রয়েছে।
নতুন করে ইসলামী ব্যাংকিং উইন্ডো খোলার পরিকল্পনা রয়েছে রংপুর করপোরেট, নোয়াখালী, বরিশাল করপোরেট, সাতক্ষীরা, কুমিল্লা করপোরেট, টাঙ্গাইল, কুষ্টিয়া, দিনাজপুর, মৌলভীবাজার, রাজশাহী করপোরেট, ময়মনসিংহ করপোরেট, যশোর করপোরেট, পাবনা, ঢাকার চকবাজার করপোরেট, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট শাখায়।
গত এপ্রিল পর্যন্ত ব্যাংক খাতে মোট আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে নয় লাখ ১৭ হাজার ২০৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংকিংয়ের আমানত এক লাখ ৯০ হাজার ৭৯ কোটি টাকা। আর মোট সাত লাখ ১১ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে ইসলামী ব্যাংকিংয়ের রয়েছে এক লাখ ৭৩ হাজার ১১৪ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: সুদ খাওয়ার অপকৌশল বাই বিল ওয়াফা