শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ ।। ২৮ চৈত্র ১৪৩১ ।। ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
হারামাইনে আজ জুমার নামাজে ইমামতি করবেন যাঁরা ‘মার্চ ফর গাজা’য় অংশগ্রহণকারীদের জন্য জরুরি ৫ নির্দেশনা তালিবুল ইলমের আবশ্যকীয় পাঁচটি কাজ পাকিস্তানের সব সমস্যার পেছনে ইহুদি ষড়যন্ত্র থাকে: মাওলানা ফজলুর রহমান বাড়িতে বাবার লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিল নাহিদ মানবতার জন্য আপনিও আসুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে: শায়খ আহমাদুল্লাহ ইসরায়েলকে প্রতিহত করতে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ দরকার: বিএনপি মাদরাসাছাত্রদের কর্মসংস্থানের বিষয়ে কাজ করছে এনসিপি : নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী মুসলিম রাষ্ট্রের ওপর এখন সশস্ত্র ল’ড়াই ফরজ: মুফতি তাকি উসমানি ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি সফল করার আহ্বান শায়খে চরমোনাই’র

একজন কুরআনের ভাষ্যকার

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতি মুহাম্মদ ওসমান সাদেক

কিশোর বয়সে যখন কোন ওয়াজ মাহফিল, কোন ইসলামি সম্মেলনের কথা শুনতাম তীব্র পুলকিত হতাম।
আর সে মাহফিলে যদি কোন প্রখ্যাত মুফাসসিরে কুরআনের আগমন হত হৃদয়ে তখন আনন্দের ঢেউ বয়ে যেত। এলাকায় তখন ঈদের মতো সাজ সাজ রবের দৃশ্য অবলোকন হত।

বলছিলাম গ্রামের বাড়ির কথা। আমাদের এলাকা ফটিকছড়ির ঐতিহ্যবাহী দৌলতপুর ইউনিয়নের ফকিরহাট বাজারটিতে সে কিশোর বয়স হতে বার্ষিক তাফসীর মাহফিলের আয়োজন দেখে আসছি। এতে তখন তাশরিফ আনতেন দেশের প্রখ্যাত মুফাসসিরে কুরআন আল্লামা হাবীবুল্লাহ মিসবাহ রহ.। দুই দিন ব্যাপী মাহফিলে তিনি প্রধান আলোচক হিসেবে থাকতেন। আমাদের এলাকায় তাঁর আগমনটি ছিল আমার বাবা মরহুম মাওলানা হাফেজ আবুজাফর সাদেক রহ. এর মাধ্যমে। বাবাজানের সাথে তাঁর হৃদ্যতার সম্পর্ক ছিল। হাটহাজারী মাদরাসায় তাঁরা সহপাঠী ছিলেন সেই সুবাদে।

মিসবাহ সাহেবের ইন্তিকালের পর শূন্য জায়গাটি পূরণ করলেন তাঁরই সহচর আল্লামা মোস্তফা আল হুসাইনী রহ.। তিনি সম্মেলনে প্রধান মুফাসসির হিসাবে তাফরির করতেন।

মিসবাহ সাহেবের মতো তিনিও আপন বয়ান দিয়ে সাধারণ মানুষের হৃদয়ে ঝড় তুলতেন। কুরআনের ব্যখ্যা সহজ ও সাবলীল ভাষায় তুলে ধরতেন। কিশোর বয়সে বুঝতাম না তিনি কত বড় মাপের আলেম। অবশ্য এতটুকু বুঝতাম, তাঁর বয়ানে সাধারণ মানুষ দারুন পুলকিত হচ্ছে। এলাকায় কুরআনের আলো বিকিরিত হচ্ছে।

অতঃপর আল জামিয়া বাবুনগরসহ আরো বহু বড় বড় মাহফিলে হযরতের বয়ান শুনার সুযোগ লাভ করি।
আল্লামা হুসাইনি রহ.কে খুব কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য লাভ করি যখন তিনি আমাদের ঘরের মেহমান হতেন।

সম্মেলনে এলে তিনি আমাদের ঘরে রাত যাপন করতেন। খাওয়ার পর তিনি পান খেতে পছন্দ করতেন। আমার ‘মা’ মুহতারামা হযরতের জন্য পান রেডি করে রাখতেন। আর আমি হযরতের মুবারক হাতে তুলে দিতাম।

হযরতের দুআ লাভে ধন্য হতাম। আল্লামা হুসাইনি যদিও আলিয়া ধারায় শিক্ষা লাভ করেছেন, কিন্তু তাঁর ইসলাহি ও আধ্যাত্নিক সম্পর্ক ছিল কওমি আলেম সমাজের সাথে।

বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্রনায়ক শায়খুল ইসলাম সৈয়দ হুসাইন আহমদ মাদানি রহ. এর তিনি দারুন ভক্ত ছিলেন। নামের শেষে ‘হুসাইনি’ লকব ধারণ তারই প্রকৃষ্ট প্রমাণ।

জামিয়া পটিয়ার মুহাদ্দিস, খতীবে আজম মাওলানা সিদ্দীক আহমদের রহ. সাহচর্য লাভে তিনি ধন্য হন।

ফকীহুল মিল্লাত হযরত মুফতি আব্দুর রহমান রহ., শায়খুল ইসলাম আল্লামা আহমদ শফীর মতো দেশ বিখ্যাত কওমি আলেম সমাজ তাঁর ইসলাহী মুরুব্বী ছিলেন। বাংলাদেশের এমন কোন জেলা, থানা, গ্রাম নেই যেখানে হযরতের কদম পড়েনি।

সাধারণ মানুষের কাছে আল কুরআনের বাণী প্রচারে তিনি সারা বাংলায় চষে বেড়াতেন।

তাফসীর, ওয়াজ মাহফিলের মাধ্যমে তিনি দীনের বিস্ময়কর যে খিদমত করে গেলেন, যুগযুগ ধরে দেশের মানুষ শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ রাখবে।

মহান আল্লাহ কুরআনের এ ভাষ্যকারকে কবর জগতে শান্তিতে রাখুন। জান্নাতের শীর্ষ মাকাম নসীব করুন।

আল্লামা মোস্তফা অাল হোসাইনীর জানাযা ও দাফন সম্পন্ন

আল কুরআনের সূক্ষ্ম বিষয়গুলো সহজে ব্যাখ্যা করতে পারতেন আল্লামা হুসাইনী


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ