শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন: মজলিস মহাসচিব ডেঙ্গুতে এক সপ্তাহে ৩১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৬২৩০ মসজিদে নববীর আদলে হবে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ: ধর্ম উপদেষ্টা খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নতুন নির্বাচন কমিশনকে বিগত কমিশন থেকে শিক্ষা নিতে হবে: মুফতী ফয়জুল করীম লালপুরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল ও বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ জনতার চেয়ারম্যান সৈয়দ তালহাকে সুনামগঞ্জ ৩ আসনে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা কুরআন-হাদিসের ভিত্তিতেই হতে হবে সংস্কার: বায়তুল মোকাররমের খতিব ইসলামী সঙ্গীত সম্রাট আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ.-এর বাবার ইন্তেকাল কুরআন-সুন্নাহর আইন ছাড়া দেশে শান্তি আসবে না : মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী

মায়ের প্রতি ভালোবাসা; যেভাবে এলো মা দিবস

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মাহমুদুল হক জালীস । । 

মা। একটি মধুর ডাক । এক অক্ষরের শব্দ। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শব্দ। শ্রুতিমধুরও বটে। মা ডাকটি কানে এলেই নির্লিপ্ত চোখে ভেসে ওঠে অনিন্দ্য সুন্দরের প্রতিচ্ছবি। মায়াবী একখানা মুখ। যে মুখে লেগে আছে ভালোবাসার হাজারও স্মৃতি। হাসি কান্নার ভাষা।

পৃথিবীর শত দুঃখ-কষ্টের মাঝে যে মানুষটির একটু সান্ত্বনা আর স্নেহ-ভালোবাসা সন্তানের সমস্ত বেদনা দূর করে দেয় তিনিই হলেন মা। দশমাস দশদিন গর্ভে ধরে বহু ত্যাগ তিতিক্ষার পথ মাড়িয়ে স্বযত্নে লালন-পালন করে যিনি মানুষ হিসাবে গড়ে তুলেন তিনিই হলেন মমতাময়ী মা। জগৎ সংসারের বিভিন্ন সংকটে যে মানুষটি স্নেহের পরশ বিছিয়ে দেয় তিনি হলেন মা। প্রত্যেকটি প্রাণীর পৃথিবীতে আসা এবং বেড়ে ওঠার প্রধান ভূমিকা মায়ের। তাই তো পৃথিবীর বেশিভাগ মানুষের কাছেই মা ডাকটি অতি প্রিয়।

২০০৫ সালে একশরও বেশি দেশে ব্রিটিশ কাউন্সিল এক সমীক্ষা চালায়। তাতে ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষের মতামত নেওয়া হয়। এর ওপর ভিত্তি করে সবচেয়ে পছন্দের ৭০টি শব্দের তালিকা করা হয়। তৈরি করা হয় 'টপটেন'। এ টপটেনের 'টপ' শব্দটিই হলো 'মা'। মা শব্দটির ভিতরে রয়েছে ভালোবাসার উষ্ণতার আদরমাখা পরশ। মা তার প্রতিটি সন্তানকে বুকের মধ্যে আঁকড়ে ধরে বসবাস করে। স্নেহ-মমতা দিয়ে আগলে রাখে সবসময়। পৃথিবীর প্রতিটি প্রাণীই মাকে সীমাহীন ভালোবাসে। এজন্যই প্রতিবছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার পালিত হয় বিশ্ব মা দিবস।

ইতিহাসের পাতায় নজর করলে দেখা যায়, বসন্তকালে দেবীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে যে উৎসব করা হতো, সেটি মা দিবস হিসাবে গণ্য ছিল। প্রাচীন গ্রিক সাম্রাজ্যে এ উৎসব 'ক্রানাম'-এর স্ত্রী এবং দেবতাদের মা রিয়ার সম্মানে পালন করা হতো। রোমে মা ইসাবেলাকে উৎসর্গ করে জাঁজমকভাবে পালিত হতো এ উৎসব। খ্রিস্টর জন্মের ২১৫০বছর আগে এ উৎসব পালিত হতো যা 'হিলারিয়া' নামে পরিচিত ছিল।

১৬০০সালে 'মাদারিংসানডে' নামে একটি দিন পালিত হতো ইংল্যান্ডে। ইংল্যান্ডবাসী মা দিবসকে মায়ের জন্য রোববার হিসাবে পালন করে। দিনটি পালিত হতো যিশুর উপবাস স্মরণের উদ্দেশ্যে ইস্টারের আগে। খ্রিস্টান ধর্মাবল্বীদের ৪০দিন বর্ষিক উপবাসের চতুর্থ দিবস রোববার। ইংল্যান্ডে সে সময় অসংখ্য দরিদ্র মানুষ ভৃত্য হিসাবে কাজ করত। বাড়ি থেকে অনেক দূরে কাজ করতে হতো বলে প্রায়ই তারা মনিবের বাড়িতে থেকে যেত। মাদারিংসানডে মনিবরা ভৃত্যদের ছুটি দিত এবং তাদের বাড়ি ফিরে দিনটি তাদের মায়ের সঙ্গে কাটাতে উৎসাহিত করত। পরে এ দিনটি পরিবর্তিত হয়ে মাদার চার্চে পরিণত হয়। জনসাধারণ গির্জায় গিয়ে তাদের মাকেও শ্রদ্ধা জানাতে থাকে এ দিনে। তখন উত্তর ইংল্যান্ডে ও স্কটল্যান্ডে মা দিবসে কেক বানানোর রীতি প্রচলিত ছিল। বর্তমানে যে মা দিবস পালিত হয় এর পেছনে অ্যানা মেরি জারভিসের অবদান উল্লেখযোগ্য।

১৮৬৪ সালের ১মে জন্মগ্রহণকারী আমেরিকার এই ভদ্রমহিলা ছোটবেলাতেই জানতেন, তার মায়ের খুব ইচ্ছে জীবিত ও মৃত সব মায়ের জন্য স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা। অ্যানার মা নিজেই 'মাদারস ফ্রেন্ডশিপ ডে' প্রচলনের ব্যাপারে উদ্যোগী ছিলেন। তিনি 'মাদারস ডে ওয়ার্ক ক্লাব' নামে একটি ক্লাবও প্রতিষ্ঠা করেন।

মিস অ্যানা জারভিস প্রথমবার মা দিবস উদযাপনের সময় সাদা, গোলাপি বা লাল ফুল মায়ের ভালোবসার প্রতীক হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন। এরপর থেকে লাল ফুলকে বেঁচে থাকা মায়ের শ্রদ্ধার প্রতীক হিসাবে গণ্য করা হয় ।

১৯১৪ সালের ৮মে কংগ্রেসের এক যৌথ অনুমোদনের পর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন রাষ্ট্রীয়ভাবে ঘোষণা দেন, প্রতিবছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার মা দিবস হিসেবে পালিত হবে । পরিশেষে পৃথিবীর প্রতিটি মায়ের প্রতি অফুরান ভালোবাসা।

লেখক: কবি গল্পকারও প্রাবন্ধিক।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ