শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ ।। ২৮ চৈত্র ১৪৩১ ।। ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
নিজেকে ইমাম মাহদী দাবি করা মাদরাসা শিক্ষক কারাগারে হারামাইনে আজ জুমার নামাজে ইমামতি করবেন যাঁরা ‘মার্চ ফর গাজা’য় অংশগ্রহণকারীদের জন্য জরুরি ৫ নির্দেশনা তালিবুল ইলমের আবশ্যকীয় পাঁচটি কাজ পাকিস্তানের সব সমস্যার পেছনে ইহুদি ষড়যন্ত্র থাকে: মাওলানা ফজলুর রহমান বাড়িতে বাবার লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিল নাহিদ মানবতার জন্য আপনিও আসুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে: শায়খ আহমাদুল্লাহ ইসরায়েলকে প্রতিহত করতে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ দরকার: বিএনপি মাদরাসাছাত্রদের কর্মসংস্থানের বিষয়ে কাজ করছে এনসিপি : নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী মুসলিম রাষ্ট্রের ওপর এখন সশস্ত্র ল’ড়াই ফরজ: মুফতি তাকি উসমানি

শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে যা বলেছেন রাসুল সা.

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মাওলানা জামিল আহমদ: বছরের একটি জিলতপূর্ণ রাত হচ্ছে লাইলাতুন মিন নিসাফি শা’বান তথা লাইলাতুল বারাআত বা শবে বারাআত। এ লাইলাতুল বারাআতে নিহিত রয়েছে মুমিন-মুসলিমের মুক্তি ও কল্যাণের বিভিন্ন উপকরণ। তাই এ রাতকে বলা হয়েছে লাইলাতুল বারাআত বা মুক্তির রাত।

অন্যদিকে পবিত্র মাহে রমজানের পূর্বের মাস হওয়ার কারণে শাবান মাসকে বলা হয়েছে রমজান শরীফের প্রস্তুতির মাস।

লাইলাতুল বারাআতের অনেক তাৎপর্য, ফযীলত ও বরকত রয়েছে। মহানবী সা. এরশাদ করেনঃ শাবান মাস হল আমার মাস আর পবিত্র রমজান মাস হল মহান আল্লাহ তাআলার মাস। তিনি আরও বলেন, তোমরা শাবানের চাঁদ সঠিকভাবে হিসাব রাখ। কেননা শাবানের চাঁদের হিসাব ঠিক হলে, রমজানের চাঁদের হিসাব সঠিক হতে সহায়ক হবে।(মিশকাত শরীফ-১১৫পৃ )

শা’বান মাসের ১৪তম তারিখের দিবাগত রাত হচ্ছে- লাইলাতুল বারাআত বা শবে বারাআত। লাইলাতুল বারাআত হচ্ছে-গুনাহ থেকে মুক্তি লাভের রাত্রি। অর্থাৎ, এ রাত্রে ইবাদত-বন্দেগী করার মাধ্যমে মুমিন-মুসলামনদের গুনাহ মাফ হয়ে থাকে এবং মর্যাদা বৃদ্ধি হয়ে থেকে।

শা’বান এবং শবে বারাআতের করণীয় সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সা. এরশাদ করেন, শাবান মাসের রোযা আমার নিকট অন্য মাসের তুলনায় অধিক প্রিয়। যখন তোমাদের নিকট শাবানের রাত্রি (শবে বারাআত) উপস্থিত হবে, তখন তোমরা সেই রাতটি জাগ্রত থাক (নামাজ পড়ে, কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করে, তাসবীহ পড়ে, যিকির করে, দুআ করে) এবং দিনের বেলা রোযা রাখ। কারণ, এ রাতে মহান আল্লাহ সূর্যাস্তের পর থেকে ফজর পর্যন্ত দুনিয়ার আসমানে তাশরীফ আনেন এবং তিনি ঘোষণা করেন- আছে কি এমন কোন ব্যক্তি যে, তার গুনাহ মাফীর জন্য আমার নিকট প্রার্থনা করবে? আমি তার গুনাহ সমূহ মাফ করে দিব। আছে কি এমন কোন রিযিক প্রার্থনাকারী, যে আমার নিকট রিযিক প্রার্থনা করবে? আমি তার রিযিকের ব্যবস্থা করে দিব। আছে কি এমন কোন বিপদগ্রস্ত, যে আমার নিকট বিপদ থেকে মুক্তি চাইবে? আমি তাকে বিপদ থেকে উদ্ধার করব। এভাবে পূর্ণ রাত মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে ঘোষণা হতে থাকে এবং বান্দাদের উপর রহমত বৃষ্টির ন্যায় নাজিল হতে থাকে।(ইবনে মাজাহ শরীফ)

হযরত আয়েশা সিদ্দীক রা, বর্ণনা করেন, মহানবী সা. আমাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, হে আয়েশা! তুমি কি জান? আজ রাত (নিসাফে শাবান) কী? হযরত আয়েশা রা. বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি তো জানি না, দয়া করে বলুন। মহানবী সা. বললেন, আজ রাতে আগামী বছরে যে সমস্ত বনী আদম জমীনের বুকে জন্মগ্রহণ করবে এবং আরা মৃত্যুবরণ করবে, তাদের তালিকা লিপিবদ্ধ করা হয়। বিশেষ করে বান্দাদের আমলনামা মহান আল্লাহর নিকট প্রকাশ করা হয়।

এ রাতে আল্লাহ তাআলা অধিক পরিমাণে জাহান্নামবাসী লোকদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। এমনকি কালব বংশের বকরীগুলোর লোম সমপরিমাণ গুনাহগার বান্দা হলেও।

হযরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত অপর একটি হাদীসে মহানবী সা. বলেন, আমি এক রাতে মহানবী সা. বিছানায় পেলাম না। তাই আমি অত্যন্ত পেরেশান হয়ে খোঁজাখুঁজি আরম্ভ করলাম। খুঁজতে খুঁজতে দেখি, তিনি জান্নাতুল বাকীর মধ্যে মহান আল্লাহর প্রার্থনায় মগ্ন। তখন তিনি আমাকে লক্ষ্য করে বললেন, হে আয়েশা! আমার নিকট হযরত জিবরাইল আ. উপস্থিত হয়েছিলেন। তিনি বলেছেন, আজ রাত হল নিসফে শাবান অর্থাৎ, লাইলাতুল বারাআত। এ রাতে আল্লাহ তাআলা অধিক পরিমাণে জাহান্নামবাসী লোকদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। এমনকি কালব বংশের বকরীগুলোর লোম সমপরিমাণ গুনাহগার বান্দা হলেও। (মিশকাত শরীফ-১১৫ পৃ )

হযরত মুআয ইবনে জাবাল রা. বলেন, রাসূলে করীম সা. এরশাদ করেছেন, আল্লাহ তাআলা অর্ধ শাবানের রাতে (শাবানের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে) সৃষ্টির দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন এবংগ মুশরীক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত সবাইকে ক্ষমা করে দেন।

হাদীসটি দ্বারা প্রমাণ হয়, এ রাতে আল্লাহর তাআলার পক্ষ থেকে মাগফিরাতের দ্বার ব্যাপকভাবে উন্মুক্ত করা হয়। কিন্তু শিরকী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ব্যক্তি এবং অন্যের ব্যাপারে হিংসা বিদ্বেষ পোষণকারী মানুষ এই ব্যাপক রহমত, মাগফিরাত ও সাধারণ ক্ষমা থেকে বঞ্চিত থাকে।

তদুপরি দশজন সাহাবী থেকে শবে বরাতের ফজীলত, মর্যাদ ও আমল সম্পর্কে হাদীস বর্ণিত রয়েছে। অবশ্য এর কোন কোনটির সনদ দূর্বল। আর এই সনদগত দূর্বলতার কারণে কেউ কেউ বলে দিয়েছেন, এ রাতের ফজীলত ভিত্তিহীন। কিন্তু মুহাদ্দিসগণ ও ফকীহগণের ফয়সালা হল, কোন একটি হাদীস যদি সনদগতভাবে দূর্বল হয়, তারপর বিভিন্ন হাদীস দ্বারা তা সমর্থিত হয়, তাহলে এ সমর্থনের কারণে তার দূর্বলতা দূর হয়ে যায়। (ইসলাহী খুতুবাত, ৪র্থ খন্ড-২৬৬ পৃ)

শবে বরাত কী? কুরআন-হাদিসে কী নামে উল্লেখ করা হয়েছে?

শরিয়তের মানদণ্ডে লাইলাতুল বারাআত বা শবে বরাত


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ