ভারতে সাম্প্রদায়িক বিভেদ চরম মাত্রায় রয়েছে এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের। বিশেষ করে কট্টর হিন্দুত্ববাদী পার্টি বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরই অবস্থা দিনকে দিন খারাপ হচ্ছে বলে অভিযোগ সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায় ও বিরোধী দলগুলোর।
বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসে সম্প্রতি নেট দুনিয়ায় একটি ভিডিও ফাঁসের পর। ওই ভিডিওতে দেখা যায় এক মুসলিম বৃদ্ধকে মেট্রোর সিনিয়র সিটিজেন সিটে বসতে না দিয়ে তাকে পাকিস্তানে গিয়ে মেট্রো চড়ার উপদেশ দিচ্ছে দুই যুবক।
সম্প্রতি এক ফেসবুক পোস্টে এই ঘটনা সামনে আসে। জানা যায়, দিল্লি মেট্রোয় সিনিয়র সিটিজন সিটে বসেছিল দুই যুবক। সেই সময় এক মুসলিম বৃদ্ধ কামরায় ওঠেন। সিনিয়র সিটিজনে অল্পবয়সীদের বসে থাকতে দেখে সিট ছাড়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু তাতে পাত্তা দেয়নি দুই যুবক। ফের বৃদ্ধ অনুরোধ করলেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এক যুবক।
যুবকটি সিট তো ছাড়েই না, উপরন্তু জানায়, দেশের মেট্রোর সিটে শুধু দেশবাসীরাই বসবে। কোনও পাকিস্তানির বসার অধিকার নেই। ওই বৃদ্ধ যদি মেট্রোয় বসতে চান, তাহলে যেন পাকিস্তানে গিয়ে বসেন।
আশ্চর্যজনকভাবে, মেট্রোর ওই কামড়ার বেশ কয়েকজন যুবককে সে সময় সমর্থনও জানান। যদিও ঘটনার প্রতিবাদে সরবও হন অনেকে।
পরে ওই কামরাতে থাকা এআইসিসিটিইউর নেতা সন্তোষ রায়ের প্রতিবাদে বৃদ্ধের পক্ষে কথা বলা শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত পরবর্তী স্টেশনে মেট্রো থেকে ওই দুই যুবককে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ।
তবে মুসলিম বৃদ্ধ তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করেননি। যুবক দুটির অল্প বয়সের কথা মাথায় রেখে তিনি তাদের ক্ষমা করে দিয়েছেন বলেই জানা গেছে।
এই ঘটনায় অল ইন্ডিয়া প্রোগ্রেসিভ ওম্যানস অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি কবিতা কৃষ্ণাণ বলেন, বৃদ্ধ যে যুবক দুটিকে ক্ষমা করে দিয়েছেন, তা তার উদারতার পরিচয়। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় এই যে বৃদ্ধকে হেনস্তার শিকার হতে দেখেও তেমন কেউ প্রতিবাদ জানাননি। এ ঘটনা থেকে বোঝা যাচ্ছে বর্তমান পরিস্থিতিতে সাম্প্রদায়িকতার বিভাজন তৈরি করা হচ্ছে।
এসএস/