শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন: মজলিস মহাসচিব ডেঙ্গুতে এক সপ্তাহে ৩১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৬২৩০ মসজিদে নববীর আদলে হবে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ: ধর্ম উপদেষ্টা খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নতুন নির্বাচন কমিশনকে বিগত কমিশন থেকে শিক্ষা নিতে হবে: মুফতী ফয়জুল করীম লালপুরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল ও বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ জনতার চেয়ারম্যান সৈয়দ তালহাকে সুনামগঞ্জ ৩ আসনে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা কুরআন-হাদিসের ভিত্তিতেই হতে হবে সংস্কার: বায়তুল মোকাররমের খতিব ইসলামী সঙ্গীত সম্রাট আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ.-এর বাবার ইন্তেকাল কুরআন-সুন্নাহর আইন ছাড়া দেশে শান্তি আসবে না : মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী

হুজুর নামাজ কবে?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতি মুহাম্মদ ওসমান সাদেক । । 

গতকাল এক মুসল্লি ভাই বলল, হুযুর নামাজ কবে?

তার এমন আজগুবি প্রশ্ন শুনে বেকুব বনে গেলাম। বললাম, ভাই আপনি জানেন না দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের কথা? কখন তা পড়তে হয়?

লোকটি বলল, তাতো জানি। তবে জানার উদ্দেশ্য হল, রজবের সেই রাতের নামাজ কবে এবং তা কত রাকাত, কিভাবে আদায় করতে হয়?

বললাম, ভাই এটা আবার কেমন কথা? রজবের নামাজ? এ আবার কোন নামাজ? লোকটি একটু জোর গলায় বলল, কেন আপনি জানেন না কত বড় ফজিলতের নামাজ? মেরাজের কত বরকতময় নামাজ? আমাদের বাপ দাদারাতো এই মেরাজ শরীফের নামাজটি কত গুরুত্ব সহকারে আদায় করত!

বললাম, ভাই বাপ দাদা শরীয়তের দলিল না। যে কোন আমলের দলিল হল কুরআন ও সুন্নাহ। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর সাহাবীদের আমলে তা পাওয়া যায় কি না সেটা দেখতে হবে। তাঁরা সেটা পালন করেছেন কি না সেটা দেখার বিষয়। কিন্তু শবে মেরাজ পালন এবং মেরাজের বিশেষ নামাজ বা বিশেষ কোন আমলের সিস্টেম তো তাঁরা চালু করে যান নি। তাহলে সেটা কী করে আমাদের জন্য শরীয়ত হবে? সেটা কী করে আমাদের জন্য দীন হবে?

এবার লোকটি বিষয়টি বুঝতে পারল এবং তার ভুল ভাংল। আলহামদুলিল্লাহ।

আমাদের সমাজে এরকম লোক অসংখ্য, যাদের ফরজ নামাজের খবর নেই, গুরুত্ব নেই। কিন্তু শবেবরাত ও শবেমেরাজের ভিত্তিহীন নামাজ নিয়ে তাদের কত দৌড়াদৌড়ি কত উৎকণ্ঠা! সারা বছরের নিয়মিত ফরজ নামাজ পড়তে এদের দেখা যায় না, কিন্তু শবেবরাত শবেমেরাজের রাতে নতুন জামা নতুন টুপি পড়ে একদম খাঁটি মুসলমান হয়ে মসজিদে এসে সারা রাত যিকির করবে।

মসজিদকে অতিরিক্ত লাইট দিয়ে আলোকসজ্জা করবে। সারা রাত আজগুবি কিচ্ছা কাহিনীর বয়ান চলবে। জিলাপি মিষ্টি বিতরণ ও বিরানির আয়োজন চলবে। সবকিছুতে জৌলুস, লৌকিকতা ও আনুষ্ঠানিকতার ছোঁয়া লাগবে। আর ফজর যখন ঘনিয়ে আসবে রাতজাগা মুসল্লিদের সংখ্যা কমতে থাকবে। ফলে ফজর জামাতে মসজিদ মুসল্লি শূন্য হয়ে পড়বে। এই হল বিশেষ রাতগুলো উপলক্ষে  দেশের মৌসুমি মুসলমানের হালহাকীকত।

এসব কখনো দীন হতে পারে না। শরীয়ত হতে পারে না। বরং শরীয়তের নামে প্রচলিত বেদাত। দীনের নামে নব আবিষ্কার। কুল্লু বিদআতিন দালালাহ। প্রত্যেক বিদাতই গোমরাহী। যারা এসব বেদাত করে তারা সুন্নাতে রাসুলের বিদ্রোহী ।

শবেমেরাজ উপলক্ষে বিশেষ কোন আমল, বিশেষ কোন নামাজ, বিশেষ কোন রোযার কথা শরীয়তে নেই।
সমাজে যা দেখা যায় সবই ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। সুতরাং তা অবশ্যই বর্জনীয়। সহীহ বুখারীর বর্ণিত হাদীসে
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি আমাদের ধর্মে এমন কিছু বিষয় আবিস্কার করল যা আমাদের দীনের অংশ নয়, সেটা পরিত্যাজ্য।

তবে শবে মেরাজে আলাদা আমল না থাকলেও এটি ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি রাত, যে রাতে নবীজিকে সম্মানিত করা হয়েছে এবং নামাজ দেয়া হয়েছে। এ কারণে এ রাতে যদি কেউ অন্যান্য আমলের পাশাপাশি বাড়তি আমল করেন তার জন্য আলাদা সওয়াবের অধিকারী হবেন তিনি।

লেখক: ইমাম ও খতীব জামে' শায়খ আহমদ আলে খলীফা, বাহরাইন


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ