রোকন রাইয়ান
মানুষের বিনোদনের পাশাপাশি আত্মার খোরাক দেয় ইসলামি সঙ্গীত। আল্লাহর স্তুতি আর রাসুলের গুণগানে ভরপুর থাকে সঙ্গীতগুলো। গানের বিকল্প হিসেবে ধার্মিকসহ আধুনিকদের কাছেও এখন ইসলামি সঙ্গীতের প্রশংসা শোনা যায়। মুখে মুখে ফেরে জুনায়েদ জামশেদ, মাহের জাইন, আতিফ আসলাম কিংবা দেশের মুহিব খান ও কলরব।
গত বছর ইসলামি সঙ্গীতে অনেকগুলোই আলোচনা তুলেছে। আসুন দেখে নেই কোন সঙ্গীতগুলো মনের খোরাক জুগিয়ে সারা ফেলল ভক্তদের মধ্যে।
উম্মাতি
৭ ডিসেম্বর বিমান দুর্ঘটনায় নিহত পপুলার সঙ্গীত শিল্পী জুনায়েদ জামশেদের নতুন গান উম্মাতি। প্রকাশ পায় গত বছরের মে মাসে। বিখ্যাত দাঈ মাওলানা তারিক জামিলের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে আছে গানটি।
গানটির প্রথম কলি এমন
ম্যায় তো উম্মাতি হো এইশা হে উমাম
করদে মেরে আ’কা আব নজরে করম
ম্যা তো বেসাহারা হো দামান ভি খালি
নাবিও কি নাবি তেরে শান হে নিরালি
সঙ্গীতটি ইউটিউবে এ পর্যন্ত দেখেন 2,424,401 জন। কমেন্ট করেছেন ২,২০৮ জন।
দাস্তান ই মুহাম্মাদ
দেশীয় সঙ্গীতে মুহিব খান জনপ্রিয় নাম। ২০১৫ সালের শেষ দিকে অনলাইনে প্রকাশ পায় তার দাস্তান-ই-মুহাম্মাদ। দীর্ঘদিন বিরতির পর নতুনটি সঙ্গীতটি বেশ চমক হিসেবে ভক্তদের কাছে আসে। সঙ্গীতটি প্রচলিত নিয়মের বাইরে একটি ভিন্ন আঙ্গিক তৈরি করেছে। এটিতে তিনি নবী মুহাম্মদ সা. এর পুরো জীবন যুক্ত করেছেন। সুরে সুরে উপস্থাপন করেছেন বিশ্বনবী সা. কে। যা ভক্তদের মধ্যে অন্যকরম আলোড়ন তুলেছে।
সঙ্গীতটি মুহিব খান তার নিজস্ব ওয়েব সাইটে প্রকাশ করেছিলেন। ইউটিউবে তার নিজস্ব চ্যানেল না থাকলেও বিভিন্ন চ্যানেল থেকে এটি শেয়ার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে কয়েক লক্ষ মানুষ এটি দেখেছেন।
আসসালামু আলাইকুম
লন্ডনের অ্যাওয়াকিং রেকর্ডস থেকে প্রকাশিত কিশোর শিল্পী হারিস জে’র সঙ্গীত আসসালামু আলাইকুম সারা বছর ছিল আলোচনায়। যদিও এটি ২০১৫ সালের আগস্টে ইউটিউবে আপলোড করা হয় কিন্তু ২০১৬ পুরোটাজুড়ে ভক্তদের নাড়িযে গেছে। ফেলেছে অন্যরকম সাড়া।
সঙ্গীতটির কথা ও সুর হৃদয়গ্রাহী। সাথে চিত্রকল্পটাও অসাধারণ। ভিডিওতে দেখানো হয়েছে সালাম এক পরম শান্তির উচ্চারণ। যা ঝগড়া ও ফ্যাসাদকে মুহূর্তেই চুকিয়ে দিতে পারে। তৈরি করতে পারে মেলবন্ধন। সাক্ষাতে মহব্বত বাড়াতেও অপূর্ব কাজ করে সালাম।
ইউটিউবে সঙ্গীতটির হিট 42,695,550। পছন্দ করেছেন ৩৬৬,৬৭৩ জন। আর অভিনন্দন জানিয়ে কমেন্ট করেছেন ৩৯ হাজার ২৮১ জন মানুষ।
আই এম অ্যালাইভ
মাহের জাইন ও আতিফ আসলাম বরাবরই ইসলামি সঙ্গীতের দুই পছন্দের শিল্পী। এই দুইজন ২০১৬ তে অনেকগুলো গান উপহার দিয়েছেন। সব ছাড়িয়ে আলোচনা এসেছে একত্রে গাওয়া ‘আই এম অ্যালাইভ’ সঙ্গীতটি। এর ভিডিও ব্যাকগ্রাইন্ডে রয়েছে চমৎকার চিত্রকল্প। সঙ্গীতের কথাগুলো মরমে বাজে। একবার শুনলেই আকর্ষণ করে ফেলবে শ্রোতাদের।
ভিডিও সঙ্গতটি প্রকাশ করেছে লন্ডনের বিখ্যাত মিউজিক কম্পানি অ্যাওয়াকিং রেকর্ডস। গত ৯ সেপ্টেম্বরে প্রকাশের পর মাত্র চার মাসেই দেখা হয়েছে 3,387,773 বার।
সাল্লি আলা মুহাম্মাদিন
বছরের মাঝখানে ইউটিউবে আলোড়ন তুলে জাতীয় শিশু কিশোর সাংস্কৃতিক সংগঠন কলরবের সাল্লি আলা মুহাম্মাদ সঙ্গীতটি। বিগ বাজেটে এটিই কলরবের প্রথম ভিডিও সঙ্গীত। কলরবের শিল্পীদের কোরাসে গাওয়া গানটি অল্প দিনেই ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। অবশ্য সঙ্গীতটির ভিডিওগ্রাফি নিয়ে সমালোচনাও কম হয়নি। সঙ্গীতের সঙ্গে দৃশ্যকল্পের পুরোপুরি মিল না থাকায় ভিডিওটির ডিজলাইকও জুটেছে অনেক। তবে সব মিলিয়ে দর্শক টানায় সফল হয়েছে এটি।
২০১৬ সালের ১৯ জুন রিলিজের পর এ পর্যন্ত দেখেছেন 6,49,176 জন। গানটি লিখেছেন সাইফ সিরাজ। গেয়েছেন শিল্পী আবু রায়হান, ইকবাল মাহমুদ, মাহফুজুল আলম ও হাসান মাহদি।
আই এম এ মুসলিম ম্যান
দীন স্কোয়াড থেকে প্রকাশিত ভিডিও সঙ্গীত আইএম এ মুসলিম ম্যান সাড়া ফেলেছে গত বছর। বিশেষ করে ইউরোপজুড়ে যখন জঙ্গী হামলার প্রেক্ষিতে মুসলিমদের ওপর দোষারেপা করা হচ্ছে তখন গানটি আলোচনায় আসে। পত্রিকাগুলোতে নিউজও হয় গানটি নিয়ে।
সঙ্গীতটি ২০১৫ সালের নভেম্বরে প্রকাশের পর এ পর্যন্ত দেখেছেন 4,731,556 মানুষ।
আল্লাহু আল্লাহু
আল্লাহু আল্লাহু তুমি জাল্লে জালালুহু/শেষ করাতো জায়না গেয়ে তোমার গুণগান।
কাজী নজরুলের লেখা অনেক পুরনো গান। নতুন করে গেয়েছেন শিল্পী বেলাল খান। বছরজুড়ে বেশ আলোচনায় ছিল গানটি। বিশেষ করে শিল্পী বেলাল খান প্রথম কোনো ইসলামিক গান গেয়েছেন বলে আলোচনাটা বেশি হয়েছে। তবে গানটি যে তিনি গেয়েছেন নিপুনভাবে তা শুনলেই বুঝতে পারবেন। হৃদয়ে বেজে উঠবে আল্লাহ তায়ালার অপার মহিমাগাঁথা।
১২ জুন ইউটিউবে প্রকাশের পর সঙ্গীতটি দেখেছেন 171,221 মানুষ। এম রেকর্ডসের ব্যানারে প্রকাশিত বেলালের গাওয়া ‘আল্লাহু আল্লাহু’ গানটির সংগীতায়োজন করেছেন চিরকুট ব্যান্ডের ইমন।
এআর
আরো পড়ুন: টপ টেন ইসলামিক সিঙ্গার