মাহফুজ রহমান: ২০১৭ সালে আইফোনের দশকপূর্তি হচ্ছে। মার্কিন প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাপল নিশ্চয়ই চাইবে চমক দিতে। ২০০৭ সালে মোবাইল ফোনের দুনিয়ায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনার পাশাপাশি স্মার্টফোনের জনপ্রিয়তা বাড়িয়েছিল স্টিভ জবসের হাত ধরে আসা আইফোন। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান গার্টনারের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর ১৫০ কোটি স্মার্টফোন বিক্রি হবে। শুধু তা-ই নয়, এ বছর স্মার্টফোনের দুনিয়ায় আরও বেশ কিছু পরিবর্তন আসবে।
২০০৭ সালে স্টিভ জবস যখন আইফোন উদ্বোধন করেছিলেন (আইফোন টুজি), তা মোবাইল ফোন বাজারের সব সূত্র ভেঙে ফেলেছিল। সাড়ে তিন ইঞ্চি মাপের টাচস্ক্রিনযুক্ত ওই ফোনে মাল্টিটাস্ক করার সুবিধা ছিল। এজ, ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথসহ অ্যাপলের নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেমের ওই ফোন প্রযুক্তি বিশ্বে তাক লাগিয়েছিল। টাইম ম্যাগাজিন ওই বছর ‘সেরা উদ্ভাবন’ তকমা দিয়েছিল আইফোনকে।
এরপর আস্তে আস্তে স্মার্টফোনের সংজ্ঞা হিসেবে টাচস্ক্রিন, ইন্টারনেট সুবিধা ও বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন খাকার বিষয়টি নির্ধারিত হয়ে যায়। গত এক দশকে আইফোনের মতো করে বাজার কাঁপিয়ে দেওয়ার মতো কোনো স্মার্টফোন মডেল আর বাজারে আসেনি। তারপর থেকে স্মার্টফোনের দুনিয়ায় বেশ কিছু নতুন প্রযুক্তি আলোর মুখ দেখেছে। এর মধ্যে আছে আইওএসের প্রতিদ্বন্দ্বী গুগলের অ্যান্ড্রয়েড, বুদ্ধিমান ব্যক্তিগত সহকারী সফটওয়্যার (সিরি, গুগল নাউ) ও বাঁকানো স্ক্রিন (এলজি-জিফ্লেক্স, গ্যালাক্সি এস ৬ এজ)। অবশ্য বর্তমান স্মার্টফোনগুলো প্রায় একই রকম।
ভবিষ্যতে স্মার্টফোন আরও বেশি নমনীয় হবে, বিশেষ করে ভাঁজ করা যাবে। সহজে ভাঁজ করা যায় বা ফোল্ডিং স্ক্রিন প্রযুক্তি সহজলভ্য হচ্ছে। এ প্রযুক্তি ইতিমধ্যে তৈরি করা হয়েছে। কয়েক বছর ধরেই এ ধরনের প্রযুক্তিযুক্ত বেশ কিছু প্রকল্প ও প্রোটোটাইপ তৈরি করে প্রদর্শন করা হচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান স্যামসাং এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে। ধারণা করা হচ্ছে, এ বছরেই বছর ভাঁজ করার সুবিধাযুক্ত স্মার্টফোন বাজারে ছাড়তে পারে স্যামসাং।
তবে পুরোপুরি ভাঁজ করে ঘড়ির মতো হাতে পরার স্মার্টফোন আসতে এখনো দেরি আছে। চীনের প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান লেনোভোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে বাজারে আসবে হাতে ঘড়ির মতো ব্যবহার করা যায় এমন স্মার্টফোন। গত বছরের জুন মাসে লেনোভো টেক ওয়ার্ল্ড অনুষ্ঠানে এ স্মার্টফোনের প্রটোটাইপ দেখিয়েছিল লেনোভো। এ ধরনের স্মার্টফোন বাজারে এলে স্মার্টওয়াচের আর কি দরকার হবে?
স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে আরেকটি বড় ধরনের পরিবর্তন দেখা যাবে হোম বাটন নিয়ে। এ বাটন হয়তো অনেক স্মার্টফোনে থাকবে না। বিভিন্ন সেনসর যুক্ত করে বাটনবিহীন ফোন তৈরি হবে।
স্মার্টফোন বাজারে চলতি বছর জায়গা করে নেবে অগমেনটেড রিয়্যালিটি। লেনোভো ইতিমধ্যে এ প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটিয়েছে।
ভবিষ্যতের স্মার্টফোনগুলো হবে ইউনিভার্সাল রিমোট, যা দিয়ে বাড়ির সব ডিভাইস বা যন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। অর্থাৎ, স্মার্টফোন হয়ে উঠবে আরও আধুনিক ও জীবনঘনিষ্ঠ। তথ্যসূত্র: এএফপি।
এআর