মুফতি দিদার শফিক: ইসলাম ধর্ম মতে শরিয়তসম্মত কারণ বশত বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করার বৈধতা আছে। বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করাকে তালাক বলা হয়। তালাক একটি স্পর্শকাতর বিষয়।
মাথায় রাগ চড়লেই স্বামী এক,দুই, তিন তালাক বলে ফেলা কিংবা এক সঙ্গে তিন তালাক বলে ফেলা তালাক প্রদান ক্ষমতার অপপ্রয়োগ ও ভুল পন্থা। এভাবে কেউ তালাক দিলে তিন তালাকই কার্যকর হবে এবং স্বামী গোনাহগার হবে।
আগে দুটি তালাক দেওয়া থাকলে পরে একটি দিয়ে মোট তিনটি কিংবা এক বৈঠকে তাৎক্ষণিক ‘তোমাকে তিন তালাক দিলাম’ বলে মোট তিন তালাক দেওয়া হলে বৈবাহিক সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন হয়ে যায়। এ অবস্থায় শুধু মৌখিকভাবে স্ত্রীকে পুনরায় বিবাহে ফিরিয়ে আনার আর সুযোগ থাকে না। নতুন করে বিবাহ দোহরানোর মাধ্যমেও ফিরিয়ে নেওয়ার পথ খোলা থাকে না।
রাগের মাথায় বা ঠাট্টা করে তিন তালাক দিলেও এক তালাক পতিত হবে না। ‘এক সাথে তিন তালাক দিলে এক তালাক কার্যকর হয়, এটা সমাজের ভুল প্রচলন। এভাবে তালাক দিলে তিন তালাকই পতিত হবে।বিশেষ কোন শরিয়তসম্মত কারণে বা প্রয়োজনে তালাক দিতে বাধ্য না হলে তালাক থেকে বিরত থাকা উচিত।
আজকাল সাধারণ মানুষের তালাক সম্পর্কিত বিধি-বিধান জানা না থাকার কারণে বউকে তালাক দিয়ে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পরেও সম্পূর্ণ অবৈধ ও হারাম পন্থায় তালাকপ্রাপ্তা বউকে নিয়েই সংসার করছে। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক না থাকায় এমন দম্পত্তি সার্বক্ষণিক গোনাহে লিপ্ত। তাদের স্বামী-স্ত্রীসূলভ আচরণ যিনা হিসেবে পরিগণিত হবে।
তাই তালাক দিতে একান্ত বাধ্য হলে স্ত্রী মাসিক থেকে পবিত্র থাকাকালীন ‘ বায়েন বা ৩ সংখ্যা যুক্ত না করে’ শুধু ‘তোমাকে তালাক দিলাম’ বলেই থেমে যাবে। তখন উভয়ে সম্মত হলে আবার ফিরিয়ে নেওয়ার সুযোগ থাকবে।
মনে রাখতে হবে, একই বৈঠকে কিংবা একই শব্দে তিন তালাক দেওয়া হারাম ও কবিরা গুনাহ। কিন্তু কেউ এমনটি করলে তালাক কার্যকর হবে এবং তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক সম্পূর্ণভাবে শেষ হয়ে যাবে।
শরহে নববি:১:৪৭৮, আসসুনানুল কুবরা: ৭/৩৩৬, আলমু’জামুল কাবির, তাবারানি : হাদিস নং ২৭৫৭, মাজমাউয যাওয়ায়েদ : হাদিস নং ৭৭৮৮,৭৭৮৮,মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: আছার নং ১৮১০১,সুনানে নাসায়ী ২/৯৮,
ডিএস