মুফতি দিদার শফিক: অনেক সময় স্বেচ্ছায় বা অনিচ্ছায় গর্ভবতী নারীর ভ্রুণ পরে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। ইসলামি শরিয়তসম্মত কোন বিশেষ কারণ ছাড়া ভ্রুণপাত করা মারাত্মক গোনাহের কাজ।
তবে অনিচ্ছায়-বা শরিয়তসম্মত কোন কারণে ভ্রুণপাত হলে তখন দুটি বিষয় সামনে আসে। ১. ভ্রূণের কী হুকুম? ২. যে মহিলার ভ্রুণপাত হল তার নামাজ-রোজার কী হুকুম?
দুটি বিষয়ই নির্ভর করে ভ্রুণের আকার-আকৃতি ধরনের ওপর। ভ্রুণ যদি এমন পর্যায়ের হয় ভ্রুণে মানব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কোন অংশ বিশেষ গঠিত হয়ে যায়। হাত, পা, নখ, চুল বা অন্য কোন অঙ্গ স্পষ্টভাবে প্রকাশ পেলে এ ভ্রুণ মানব সন্তান হিসেবে বিবেচিত হবে। এই ভ্রুণকে গোসল, কাফন ও দাফন দিতে হবে।
আর যে নারীর মানব দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রকাশ পাওয়া ভ্রুণ গর্ভপাত হয়েছে সে নারীর ভ্রুণপাতের আগে-পরের নির্গত রক্তকে নিফাস বলে অভিহিত করা হবে। রক্তক্ষরণ হওয়া দিনগুলোতে সে নামাজ পড়বে না। রোজার সময়ে ভ্রুণপাত হলে পরে রোজা কাজা করে নিবে। আর ভ্রুণে মানব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গঠিত না হলে সে ভ্রুণ মানব সন্তান হিসেবে বিবেচিত হবে না।
তবে মানব সন্তানের সম্মানার্থে কাপড়ে পেচিয়ে মাটিতে দাফন করা উচিত। এমন ভ্রুণপাতে নারীর জরায়ু থেকে ক্ষরিত রক্তকে নিফাস বলা হবে না। তখন লক্ষ করতে হবে, ভ্রুণপাতের আগে মাসিক কবে হয়েছে? ১৫ দিন বা তার চেয়ে বেশি অতিবাহিত হয়েছে কিনা?
ভ্রুণপাত পরবর্তীকালীন রক্তক্ষরণ কমপক্ষে তিন দিন হলে এ রক্তক্ষরণকে হায়েজ হিসেবে গণ্য করা হবে। আর উপর্যুক্ত শর্তগুলোর কোন একটি পাওয়া না গেলে ক্ষরিত রক্ত ইস্তেহাজা অর্থাৎ রোগের কারণে নির্গত রক্ত হিসেবে ধর্তব্য হবে। হায়েজ হলে নামাজ মাফ। রোজা পরে কাজা করতে হবে। আর ইস্তেহাজা হলে নামাজ-রোজা সব পালন করতে হবে।