আওয়ার ইসলাম: কঠোর পরিশ্রম, বুদ্ধি আর একাগ্রহতা থাকলে চাকুরি বা ব্যবসা নয় জমিতে ফসল ফলিয়েও আয় করা সম্ভব কোটি টাকা। তারই অনন্য নজির নাটোর সদরের আহমেদপুর এলাকার ত্রিশ বছর বয়সী মো. সেলিম রেজা। সেলিম ২০০০ সালে মাত্র ২৫ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে ২বিঘা জমিতে ঔষধি গাছ লাগানোর মধ্যেমে যাত্রা শুরু করে।বর্তমানে ৭০ বিঘা জমিতে তার ফসল ফলাতে বীজ, পানি, শ্রমিকসহ নানা খাতে বছরে ব্যয় হয় প্রায় ৪০ লাখ টাকা। আর গত বছর খরচ বাদেই তার লাভ হয়েছে কোটি টাকার ওপরে। জমিতে ফসল রক্ষণাবেক্ষণে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত আছে ২৮ জন শ্রমিক।
সুশিক্ষিত সেলিম রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর সম্পূর্ণ করে নিজেই স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। একে একে চাকরি নেন সেনাবাহিনী, ঔষধ কোম্পানী ও বীমা কোম্পানীতে। কোনো চাকরিই ভাল লাগে না এই যুবকের। ২০০০ সালে সারা দেশের ঔষধি বৃক্ষরোপনের সরকারি প্রচারণায় উৎসাহিত হয়ে ২ বিঘা জমিতে ঘৃতকুমারী, মিছরীদানা ও শতমুল চাষ করেন। ভালো উৎপাদন হলেও উৎপাদিত পণ্য বিক্রির সার্বিক ব্যবস্থা না থাকায় ঔষধি চাষ বন্ধ করে দেন সেলিম। তবু চেষ্টা থেমে থাকেনি তার।
২০০৪ সালে ৩৮ বিঘা জমিতে রোপন করেন আপেল কুল। কিন্তু মাত্র তিন বছরেই আপেল কুলের গাছ নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণে তিনি কলম প্রযুক্তির মাধ্যমে এগুলোকে থাইকুলে রূপান্তরিত করেন। কুলের চাইতে দাম বেশি হওয়ায় ২০০৬ সালে ৯ বিঘা জমিতে শুরু করেন বারো মাসি পেয়ারা চাষ। তার কিছুদিন পরে অসময়ে বাঙ্গী, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ, লেবু, পেঁপে, ড্রাগন ও শরিফা চাষ শুরু করেন। এভাবে বেড়ে তার ফসলি জমির পরিমান দাড়ায় ৭০ বিঘাতে।
সুশিক্ষিত সেলিম রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর সম্পূর্ণ করে নিজেই স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। একে একে চাকরি নেন সেনাবাহিনী, ঔষধ কোম্পানী ও বীমা কোম্পানীতে। কোনো চাকরিই ভাল লাগে না এই যুবকের। ২০০০ সালে সারা দেশের ঔষধি বৃক্ষরোপনের সরকারি প্রচারণায় উৎসাহিত হয়ে ২ বিঘা জমিতে ঘৃতকুমারী, মিছরীদানা ও শতমুল চাষ করেন। ভালো উৎপাদন হলেও উৎপাদিত পণ্য বিক্রির সার্বিক ব্যবস্থা না থাকায় ঔষধি চাষ বন্ধ করে দেন সেলিম। তবু চেষ্টা থেমে থাকেনি তার।
সেলিম জানান, এই ৭০ বিঘার মধ্যে ২৪ বিঘা জমি নিজের এবং ৪৬ বিঘা প্রতি বছর ১০ থেকে ১২ হাজার টাকায় লিজ নেয়া। তার এসব ফসল রক্ষণাবেক্ষণে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত আছে ২৮ জন শ্রমিক। ফসল তোলার মৌসুমে এখানে কাজ করে আরো শতাধিক শ্রমিক। এসব চাষাবাদের মধ্যে শরিফা ও ড্রাগন চাষে সে এখন ভীষণ মনোযোগী।
সেলিম রেজা মাটির স্বাস্থ্য রক্ষায় মাটিতে পঁচনশীল কৃষি প্রযুক্তি মালচিং পেপার ব্যবহার করেন। এতে মাটিতে খাবার ও সেচ কম লাগে, আগাছা জন্মায় না তাই লেবার কম লাগে, পোকা মাকড়ের আক্রমন কম হয়। এতে মাটির আদ্রতা রক্ষাসহ ফসলের খাবারের প্রয়োজন হলে মাঝে যে ড্রেন থাকে সেই ড্রেনের ভেতর সেচ দিয়ে ড্রেনের ভিতর খাবার প্রয়োগ করলে গাছ তা গ্রহন করে।
সেলিম রেজা মনে করেন, আমাদের দেশে এ পদ্ধতি চালুর মাধ্যমে মাটির স্বাস্থ্য রক্ষাসহ অর্গানিক ও কম খরচে বিভিন্ন ফল, সবজি, ফুল যেমন-ষ্ট্রবেরী, পাতা ও বাঁধাকপি, বেগুন, শসা, করলা, পটল, পুঁই শাক, লেবু, শরিফা পেয়ারাসহ নিদিষ্ট দূরত্বে যে সকল ফসল উৎপাদন করবে তার সবগুলোই উৎপাদন সম্ভব।
তিনি মনে করেন, বেকার যুবকেরা সামান্য প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেই দেশের জমিতে ফসল ফলিয়ে ১০ থেকে ১৫ বছরেই পুরোপুরি স্বাবলম্বী হতে পারে। চাকুরির পেছনে না ঘুরে একাগ্রহতা আর পরিশ্রমের মাধ্যমে অবশ্যই সফলতা অর্জন করা সম্ভব।
দ্যা প্রমিনেন্ট/আরআর