মুফতী আব্দুল্লাহ বিন রফিক
এই মহাবিশ্বের যেমন একটা শুরু লগ্ন আছে তেমনি আছে তার বিনাশ কাল। একদিন এতে প্রাণের সঞ্চার যেমন হয়েছিলো তেমনি প্রাণের নাশও হবে। এই আদি ও অন্ত নিয়ে রচিত হয়েছে ইহজাগতিক নিয়ম।
আলকুরআনে মহাপ্রলয় বা কিয়ামতকে বিভিন্ন নামে ব্যাক্ত করা হয়েছে। ‘আস-সাআহ’ (মুমিন:৫৯), ‘ইয়াওমুল বা‘সি’ (রূম:৫৬), ‘ইয়াওমুদ্দীন’ (ফাতিহা:৩), ‘ইয়াওমুল হাসরতি’ (মারইয়াম:৩৯), ‘আদদারুল আখিরাহ’(আনকাবূত:৬৪), ইয়াওমুত তানাদ(মুমিন:৩২), ‘দ্বারুল কারার’ (মুমিন:৩৯) এরকম নাম আছে আরো অনেক।
মহাপ্রলয়ের নিদর্শনগুলোকে ছোট-বড় দু’ভাগে ভাগ করেছেন কেউ কেউ। তিন ভাগেও ভাগ করেছেন বলে খুঁজে পাওয়া যায়। যে নিদর্শনগুলো ঘটতে চলেছে আমরা সে বিষয়গুলো নিয়ে বাস্তবতার দর্পনে ধারাবাহিকভাবে আলোকপাত করার চেষ্টা করবো।
কিয়ামতের এক অন্যতম নিদর্শন হলো, ‘লেখালেখির অধিক বিস্তার হওয়া’।
হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রা. বর্ণিত আল্লাহর রাসুল বলেন,
وَظُهُورَ الْقَلَمِ….. .. إنَّ بَيْنَ يَدَيْ السَّاعَةِ
‘নিশ্চই কিয়ামতের অন্যতম নিদর্শন হলো, কিয়ামতের পূর্বে লেখালেখির বিস্তার দৃষ্টিগোচর হবে।’
(মুসনাদে আহমাদ: ৩৬৭৬। শায়েখ আহমাদ শাকের ও শোআইব আরনাউত একে সহিহ বলেছেন।)
কলম দিয়েই শুরু হয়েছিলো আল-কুরআনের ঐশী শ্লোক। এই কলম দিয়ে চর্চা করা হয় জ্ঞান। জাতিকে মূর্খতার অন্ধকার থেকে বের করে আলোর দিশা প্রদানে কলমের ভূমিকা অনেক। অত্যাচারীর হাত থেকে এক নিপীড়িতের ন্যায্য বিচার লেখা হয় এই কলম দিয়ে। এই কলম দিয়ে নির্মাণ করা হয় জাতির আদর্শ ও উজ্জ্বল ভবিষৎ। তাই কলমের এবং লেখকের মর্যাদা অনেক। কিন্তু হাদিসে ‘জুহুরুল কলাম’ বলতে শেষ যুগে লেখকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে বোঝানো হয়েছে। পাশাপাশি জ্ঞান চর্চা কমে যাবে এবং মূর্খতা বাড়বে ব্যাপকহারে।
উন্নত মানের প্র্রকাশনা এবং বই তখন খুব সহজলভ্য হবে বটে কিন্তু তা সত্ত্বেও মানুষের মাঝে শরিয়ত ও ধর্মীয় বিষয়াদিতে অজ্ঞতা ব্যাপকহারে বাড়তে থাকবে। হালে ধর্মীয় বিষয়াদিতে সাধারণ লোকের যে হারে মূর্খতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং না জেনে কমবেশি সবাই ইসলামের ব্যাপারে যেভাবে যাচ্ছেতাই মন্তব্য করতে শুরু করেছে সম্ভবত আলোচ্য হাদিস তারই ইঙ্গিত বহন করছে।
আরআর
উপমহাদেশের প্রথম মুসলিমা চিকিৎসক