ফটিকছড়ি থেকে ওমর ফারুক আজাদ
ফটিকছড়ি উপজেলার নানুপুরে ইসলামী ছাত্রসেনা ও জমিরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কিন্ডারগার্টেন (কওমী মাদ্রাসার) ছাত্র-শিক্ষকদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনার ২৪ঘন্টা অতিবাহিত হলেও কোন পক্ষ এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গতকাল (রাত ৮টা) থানায় মামলা করেনি। তবে, জমিরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কিন্ডারগার্টেন ও ইসলামী ফ্রন্টের পক্ষ হতে পৃথকভাবে মামলা দায়ের’র প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে উভয়’র সূত্রে জানা গেছে।
ঘটনার পর থেকে এলাকায় পুলিশের অবস্থান ও টহল অব্যাহত রয়েছে।
সরেজমিনে গতকাল শনিবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গেলে দেখা যায়, কিন্ডারগার্টেনসহ উক্ত এলাকায় পুলিশ টহল ও অবস্থান করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও এখনো এলাকায় জনমনে থমথমে বিরাজ করছে। ঘটনার সময় ভাংচুরকৃত ৪টি জীপ (চাঁদেরগাড়ী) থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে গেছে।
এলাকাবাসীরা বলেন, সংঘর্ষের পর পর ফটিকছড়ি ও ভূজপুর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে না গেলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ রুপ নিত। ঘটনারপর উর্ধতন পুলিশ অফিসারসহ ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়নে করলে পরিস্থিতি শান্ত হয় বলে জানান তারা।
এদিকে ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন অতিরিক্ত সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মশিউদ্দৌলা রেজা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, হাটহাজারী সার্কেল মুহাম্মদ লুৎফুর রহমান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম তৌহিদুল আলম বাবু, ফটিকছড়ি থানার ওসি আবু ইউসুফ মিয়া ও ভূজপুর থানার ওসি একে এম লিয়াকত আলী এবং স্থানীয় চেয়ারম্যান সৈয়দ ওসমান গণি বাবু। তারা ঘটনার রাতে কিন্ডার গার্ডেনের কর্তৃপক্ষসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তি এবং ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলেন।
গতকাল বিকালে ওবাইদিয়া কমপ্লেক্সের পরিচালক মাওলানা মুহাম্মদ শিহাব উদ্দিন আওয়ার ইসলামকে জানান, বেদাতিরা শুক্রবারের ঘটনাটি তারা সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে ঘটিয়েছে। তিনি আরো বলেন, ইসলামী আইন বাস্তবায়ন কমিটি ফটিকছড়ি শাখার উদ্যোগে ঘটনার সার্বিক বিষয় নিয়ে গতকাল বাদ আসর কওমী মাদ্রসার শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এক বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকের সিন্ধান্ত মতে থানায় মামলা দায়ের করা হবে বলে তিনি জানান।
অপরদিকে ইসলামী ফ্রন্ট ফটিকছড়ি উপজেলা দক্ষিন শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজালাল বলেন, আমাদের সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে আলাপ করে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। তিনি আরো বলেন, আমাদের যুব ও ছাত্র সেনার কর্মীরা নাজিরহাটস্থ পূর্বের নির্ধারিত জঙ্গি বিরোধী সমাবেশে আসার পথে পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে।
এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম আওয়ার ইসলামকে বলেন, ঘটনাস্থলের পরিস্থিতি এখন শান্ত। এ ধরনের আর কোনো ঘটনা ঘটনার সম্ভাবনা এখন নেই।
এ ব্যাপারে থানার ওসি মুহাম্মদ আবু ইউসুফ মিয়া বলেন, পরিস্থিতি এখন ভাল, পুলিশি টহল ও অবস্থান রয়েছে। কোন পক্ষই (শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত) মামলা করতে থানায় আসেনি।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার বিকালে ইসলামী ফ্রন্টের যুব ও ছাত্র সেনার সাথে জমিরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক-ছাত্রদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের ২০ জনের অধিক আহত হয়। আহতদের মধ্যে উভয় পক্ষের ৩ জন এখনো চমেক হাসপাতালে ও ২জন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
আগের নিউজ: নানুপুরে বেদাতিদের হামলায় আহত ২৩। যেভাবে ঘটনার সূত্রপাত
আরআর