মিনহাজ উদ্দীন : জামালপুরে ইসলামপুরে যমুনার পানি বিপদসীমার ২১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে। ইতিমধ্যেই জামালপুর জেলার ১৬টি ইউনিয়নের ১১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজপাঠক আব্দুল মান্নান জানান, বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে বন্যার পানি যমুনা নদীতে পানি পরিমাপক স্কেলের ১৯.৭১ সেন্টিমিটার পয়েন্টে প্রবাহিত হচ্ছে। যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হচ্ছে।
ইসলামপুরের চিনাডুলি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম জানান, যমুনার প্রবল স্রোতে চিনাডুলি ইউনিয়নের দেওয়ানপাড়া থেকে শিংভাঙ্গা পর্যন্ত এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ভেঙ্গে কমপক্ষে ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। নোয়ারপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বাদল জানান, বন্যার পানির তীব্র স্রোতে শনিবার সকালে উলিয়া বাজারের পাশে যমুনার পূর্বতীর সংরক্ষণ বাঁধ ভেঙ্গে গেছে। ইতিমধ্যেই নোযারপাড়া ইউনিয়নের রাজনগর, করিরতাইর, তাড়তাপাড়া, মাইজবাড়ী, কাজলা, কাঠমা এবং ব্রহ্মত্তর এলাকার প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এবং অধিকাংশ কৃষকদের পাট ও ধানক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব পানিবন্দিদের ঘরে খাদ্য সংকট চলছে।
ইসলামপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নবী নেওয়াজ খান লোহানী বিপুল জানান, যমুনার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করায় ইসলামপুর উপজেলার নোয়ারপাড়া, সাপধরি, চিনাডুলি, বেলগাছা, পাথর্শী, কুলকান্দি ও ইসলামপুর সদর ইউনিয়ন সমূহের কমপক্ষে ৬০টি গ্রাম বন্যা কবলিত হয়ে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ওইসব পানিবন্দি মানুষের মাঝে রান্না করা খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট চলছে। তিনি বন্যা কবলিত এলাকায় ত্রান সামগ্রী পোঁছানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
দেওয়ানগঞ্জের চুকাইবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খান জানান, দেওয়ানগঞ্জের চুকাইবাড়ি ইউনিয়নের ১২টি গ্রামসহ দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভা ও চিকাজানি ইউনিয়ন সমূহের ২০টি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়ে অন্তত ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
মাদারগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ ওবায়দুর রহমান বেলাল জানান, মাদারগঞ্জের চরপাকেরদহ, বালিজুড়ি, জোড়খালি, গুনারীতলা, কড়ইচুড়া ও সিধুলি ইউনিয়ন সমূহের ৩০টি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়ে অন্তত ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তিনি আরও জানান, বন্যায় মাদারগঞ্জের অধিকাংশ কৃষকদের পাট ও ধান ক্ষেত তলিয়ে গেছে এবং রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
সরিষাবাড়ী উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি মোঃ মিজানুর রহমান জানান, সরিষাবাড়ীর পিংনা, সাতপোয়া, পেগলদিঘা ও কামরাবাদ ইউনিয়নের কিছু নিম্ন অঞ্চলে সবেমাত্র বন্যার পানি প্রবেশ করছে।