সৈয়দ আনোয়ার আবদুল্লাহ: ব্রিটেনে সর্বপ্রথম ১৯৫৬ সালে তাবলীগ জামাত প্রেরণ করেন হযরতজী মাওলানা মোহাম্মদ ইউসুফ রহ। ইউরোপের জগতখ্যাত দা'য়ী হাফেজ আহমদ প্যটেলকে দিয়ে জামাত তৈরি করে নিযামুদ্দীন মার্কাজে হেদায়তি বয়ানে বলেছিলেন, ‘মানুষ মক্কা মদীনাকে এখন ইউরোপ বানানোর প্রতিযোগিতা করছে, আর তোমরা ইউরোপে গিয়ে ঐভাবে হক আদায় করে দাওয়াতের মেহনত করবে যেন ইউরোপ সাহাবাদের যামানার মক্কা-মদীনা হয়ে যায়। তোমরা যদি এ কাজের শতভাগ হক আদায় করে করতে থাকো আগামী একশত বছরের ভিতরে ইউরোপ আবার মুসলমানদের নিয়ন্ত্রনে চলে আসবে ইনশাল্লাহ"
ইউরোপে যখন জামাত পৌছে, সেদিন থাকার মতো এমন মসজিদ খোঁজে পাননি তারা পুরো লন্ডনে। এর পরের সংগ্রামী ইতিহাস আর তাদের আত্মত্যাগের অসংখ্য ঘটনা কমবেশি সবারই জানা। হাফেজ প্যাটেলের বিপ্লবী মেহনত আর ইউরোপে দাওয়াতের মাধ্যমে ইসলামের নব জাগরণ এখন বিশ্বের অন্যতম আলোচিত বিষয়।
গোটা ইউরোপে অর্ধলক্ষ মসজিদ আর শতাধিক তাবলীগ মার্কাজ, অসংখ্য দাওরায়ে হাদীস ও ছোট বড় কওমী মাদরাসা এই দাওয়াতের মেহনতের ফসল। যেভাবে দাওয়াতের মেহনতের মাধ্যমে প্রতি মাসে লক্ষাধিক মানুষ ইউরোপে ইসলাম গ্রহণ করছে, তাতে আমারা আশা করতে পারি আগামী ৪০ বছর অর্থাৎ ২০৫৬ সালের ভেতর ইনশাল্লাহ ইউরোপ মুসলমানদের নিয়ন্ত্রনে থাকবে। হযরতজীর ভবিষৎবাণী ফলে যেতে পারে।
১৯৬৫ সালের পর সেখানে তাবলীগের মেহনত খুব জোরে শোরে শুরু হয়। তাবলীগওয়ালারা অনেক গীর্জা ক্রয় করে মসজিদে রূপান্তিত করে। এমনকি খ্রীষ্টানদের তীর্থস্থান খ্যাত রুমের ভ্যাটিকেন সিটিতে যে তাবলীগ মার্কাজটি তৈরি করা হয়েছে এটা ইউরোপের সর্ববৃহৎ মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার, যেখানে গড়ে প্রতিদিন শতাধিক মানুষ ইসলাম গ্রহণ করে।
[caption id="attachment_6183" align="alignright" width="443"] ডিউজবেরি মার্কাজ মসজিদ[/caption]
এই মেহনতের কারণে বর্তমানে বৃট্রেনেই কেবল দুই হাজারেরও অধিক মসজিদ আছে। সম্প্রতি লন্ডন সিটিতে তাবলীগ সাথীরা একটি বৃহৎ কোম্পানীর পুরো এলাকা ক্রয় করে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ মসজিদ ও মার্কাজ নির্মাণের পরিকল্পনা ও কার্যক্রম হাতে নিয়য়েছেন। যা হবে মুসলমানদের আগামী দিনের ইউরোপ বিজয় ও পরিচালনার সদর দপ্তর বা হেডকোয়ার্টার। শুধু লন্ডনে (বিলাতে) বর্তমানে তাবলীগ জামাতের পাঁচটি বড় বড় মার্কাজ মসজিদ রয়েছে,
১.ডিউজবেরী মার্কাজ
২.গাসর্গে মার্কাজ
৩.লন্ডন মার্কাজ
৪.বার্মিংহাম মার্কাজ
৫.ওয়েস্ট হোম মার্কাজ (মসজিদে ইলিয়াস রহ)
ইউরোপসহ গোটা পৃথিবীর সকল মার্কাজ (ইসলািক সেন্টার) ভারত থেকে দেওবন্দের উলামায়ে কেরাম নিয়ন্ত্রন করেন। দিল্লীর নাজিমুদ্দিনের মার্কাজ সদর দপ্তর বা হেডকোয়ার্টার হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এই মার্কাজ মসজিদ গুলো থেকে সমগ্র ইউরোপে প্রতিদিন অসংখ্য জামাত পাঠানো হয়। যা ইউোপের ইতিহাসে ইসলামের এক নতুন যুগ বির্নিমাণ করে চলছে।
/আরআর