মো: মিনহাজ উদ্দিন, শেরপুর থেকে: পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় শেরপুর সদর উপজেলার চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী কুলুরচর বেপারি পাড়া গ্রামে ব্যাপক নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। গত তিন দিনে অর্ধশতাধিক বাড়িঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। একই সাথে গত একমাসে প্রায় দুইশতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে।
পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদী তীরবর্তী জামালপুর শহর ঘেঁষা এই গ্রামটি প্রতি বছরই কমবেশি নদী ভাঙনের কবলে পড়ে থাকে। নদী ভাঙ্গনের কারণে এ গ্রামের পাকা প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ শতশত বাড়িঘর গত কয়েক বছরে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এবারও গত একমাস থেকে নদী ভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এ গ্রামে বসবাসকারী মানুষজন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এই নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গত তিন দিনেই কমপক্ষে ৫০টি ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
জানা গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। নদী তীরবর্তী এ গ্রামটিতে প্রায় ৫ হাজার মানুুষের বসবাস। এদের অধিকাংশই খেটে খাওয়া সান্দার। ঘনবসতিপূর্ণ এ গ্রামটিতে নদী ভাঙনের কারণে ভিটেমাটি ও গাছপালা প্রতিমুহূর্তেই বিলীন হচ্ছে। অবিলম্বে ভাঙন প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে শেরপুরের মানচিত্র থেকে বেপারীপাড়া গ্রামটি মুছে যাবে বলে অনেকেই আশংকা করছেন। ভাঙ্গন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগও। অর্থাভাবে চিকিৎসাও পাচ্ছেনা তারা।
শেরপুর সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ ইলিয়াছ উদ্দিন জানান, এ এলাকাটি অনেকদিন ধরে ভাংছে। অথচ এখানকার এমপিসহ কেউ এদের খোজ খবর নিচ্ছেনা। পাচ্ছেনা সাহায্যও। তিনি আরো বলেন, ক্ষতিগ্রস্থদের ভিজিএফ চাল দেয়ার কথা থাকলেও বিদায়ী ইউপি চেয়ারম্যান সাহেব তা দেয়নি। তিনি প্রশ্ন করে বলেন কবে ভাঙ্গনের কবল থেকে রেহাই পাবে এ এলাকার মানুষ ? এ বিষয়ে শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রফিকুল আলম চৌধূরী জানান, বেপারীপাড়ার নদী ভাঙন রোধে ৯ কোটি টাকা ব্যায়ে নদীতে ড্রেজিং এর কাজ চলছে। এই কাজ শেষ হলে নদী ভাঙ্গন রোধ হবে বলে আশা করছি।
জেলা প্রশাসক ডা: এ এম পারভেজ রহিম জানালেন বেপারীপাড়া গ্রামে নদী ভাঙনে সঠিক বিবরণ পাওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনসহ সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হবে।
মানবিক দিক বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বেপারীপাড়া গ্রামটিকে নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষার জন্যে অনতিবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন এমনটিই প্রত্যাশা করছেন বেপারীপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা।
আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম /আরআর