শাব্বিরুল কারীম : এই প্রথম অন্য দেশের মাটিতে ঈদের নামাজ আদায় করলাম। প্রায় বাইশটা বছর মাতৃভূমি বাংলার মাটিতে ঈদ কাটিয়েছি। দারুল উলুম দেওবন্দে দাওরা হাদিস পড়ার তাগিদে সোনার বাংলা ছেড়ে রমজানের শুরুতেই। বাবা-মা, ভাই-বোনকে ছেড়ে আমার প্রথম ঈদ। শুধু আমার নয়, আমার মতো অনেক সঙ্গীরও। ঈদের দিন আমরা কজন বন্ধুরা কাক ডাকা ভোরেই ব্যস্ত হয়ে পড়ি সেমাই, নুডুস, লাচ্চা, খিচুরী, মাংস পোলাউ ইত্যাদি পাকানোর কাজে।
বিদেশের মাটিতে বিদেশি খাবার থাকলেও বাংলার খাবারের প্রতি ঝোকটাই ছিলো বেশি। অনেক কষ্টে বাংলা খাবারের ব্যবস্হাপনা করে রেখেছিলাম চাঁদ রাতের আগেই।
মায়ের চুলার পাশে বসে পাক দেখা অভিজ্ঞতার আলোকে চেষ্টা করেছি এসব আয়োজনের।
বিদেশ মাটিতে কেমন হবে ঈদের নামাজ! সবকিছুর অবসান ঘটিয়ে সকাল থেকে নজরে আসতে মুসলিমদের আনাগোনা, রাস্তা ছিল ভরপুর শুভ্র জামা ও শেরওয়ানীতে। দেওবন্দের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে যেয়ে তো অবাক! বিশাল ঈদগাহ। লোকে লোকারণ্য। ঢাকার জাতীয় ঈদগাহের মত।
অবাকের বিষয় দেওবন্দের ওলি গলিতে কোন মেয়ে ছেলের আনাগোনা নেই, শুধু দাড়ি টুপির মিছিল। যেন কোন মুসিলম অধ্যুষিত রাষ্ট্রে ঈদ উদযাপন করলাম। আর এটা দারুল উলুম দেওবন্দেরই ফসল।
আমাদের সাথেই থাকেন কাশ্মির, আফ্রিকা সৌদিআরবসহ অনান্য দেশের কিছু শিক্ষার্থী। নামাজের পরে তাদের নিয়ে আমাদের দেশীয় খাবার খাই। তাদের মুখে প্রশংসার বাক্য ঝরে। এত সুস্বাদু খাবার তোমাদের দেশে তৈরি হয়। সাবাই এক বাক্য বলে একবার হলেও বাংলাদেশে সফর করবো।
সবকিছু মিলিয়ে একটি সুন্দর মনোমুগ্ধকর ঈদ উদযাপন করলাম দারুল উলুম দেওবন্দে আমরা ক’জন বাঙ্গালি বন্ধু।
আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর/ওএস