আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্ব সাহিত্যের ইতিহাসে যে কয়জন মুসলিম মনিষী অবিস্মরণীয় অবদান রেখেছেন তাদের একজন মরমি কবি ও দার্শনিক মাওলানা জালালুদ্দিন রুমী। প্রায় ৮০০ বছর আগে আফগানিস্তানের বালখ প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি। রুমীর বেশিরভাগে জীবনই অবশ্য কেটেছে তুরস্কে। আর তার সবচে বিখ্যাত এবং প্রভাবশালী সাহিত্য ‘মসনভী-ই-মানাভী’ রচিত ফার্সি ভাষায়।
এ কারণেই জালালুদ্দিন রুমীকে নিয়ে টানাটানি শুরু হয়েছে তিন দেশের মধ্যে। আফগানিস্তান, ইরান এবং তুরস্ক- তিন দেশই দাবি করছে, রুমী তাদের সম্পদ। জাতিসংঘের সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো’র ‘মোমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ডে’ নিজেদের সম্পদ হিসেবে রুমীকে অন্তর্ভুক্তির আবেদন জানিয়েছে এই তিন দেশই। গত মে মাসে তাকে নিজেদের যৌথ ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান দিতে জাতিসংঘের প্রতি আবেদন জানিয়েছে তুরস্ক ও ইরান।
বিষয়টি নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে সঙ্কট। এর নিন্দা জানিয়েছে আফগান সরকার। দেশটির তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, আফগানিস্তানের বালখে জন্ম নেয়া এই কবি এবং দার্শনিক আমাদের গর্ব। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হারুন হাকলিমি জানান, এ বিষয়ে ইউনেসকো এখনো তাদের কিছুই জানায়নি। এই দাবিতে আফগানিস্তান আপাতত হেরে গেলেও ওই মহান কবিকে আফগান ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান দিতে ইউনেসকোর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাবেন তারা।
যুক্তরাষ্ট্রে সবচে বেশি বিক্রি হওয়া সাহিত্যের মধ্যে জালালুদ্দিন রুমীর কবিতা অন্যতম। এছাড়া তার সাহিত্য এ পর্যন্ত ২৩টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। আফগানিস্তানে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকেই শুরু হয় রুমীর সাহিত্য পাঠ। সেখানে তার পরিচিতি ‘মাওলানা জালালুদ্দিন বালখ’ বা ‘মাওলানা’ বা ‘বালখি’ নামে।
বেশিরভাগ গবেষকই একমত যে রুমী ১২০৭ সালে আফগানিস্তানের বালখে জন্মগ্রহণ করেছেন। তবে কোনো কোনো গবেষকের মতে, তিনি সীমান্তবর্তী এলাকা বর্তমান তাজিকিস্তানে জন্ম গ্রহণ করেছেন। একসময় ফার্সি সাহিত্যের কেন্দ্র এবং বৌদ্ধদের ধর্মীয় রাজধানী ছিল বালখ। পরে ১২২১ সালে মঙ্গলীয় বংশের প্রতিষ্ঠাতা চেঙ্গিস খান এটি দখল করেন। ওই সময়ে তুরস্কে পালিয়ে যান রুমী। সেখানকার কন্য শহরে ১২৭৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর/ওএস