ওমর ফারুক সাহিল। জনপ্রিয় একজন ইসলামি সঙ্গীত শিল্পী। সুর ও সঙ্গীতের প্রতিষ্ঠান ‘ঐশীস্বর’ এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক। তিনি একই সঙ্গে গায়ক, সুরকার ও সঙ্গীত রচয়িতা। গান করেন দেশের প্রায় সকল জেলায়। রেডিও, টিভি প্রোগ্রামেও তার পদচারণা। ইসলামি সঙ্গীতে তার বেড়ে ওঠা ও স্বপ্ন নিয়ে কথা বলেন আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকমের বিশেষ প্রতিনিধি দিদার শফিক
ইসলামি সঙ্গীতাঙ্গনে কীভাবে এলেন?
ওমর ফারুক সাহিল : ছোটকালে আমি যখন মাদ্রাসায় পড়তাম তখন বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপলক্ষে ইসলামি সঙ্গীত পরিবেশন করতাম। গান করে শ্রোতামহল থেকে বাহবা পেতাম। উস্তাদদের থেকে উৎসাহ পেতাম। তারা বলতেন, তুমি তো ভাল গাও।
বড় হয়ে যখন ঢাকায় আসি তখন আমি সংস্কৃতির অঙ্গনে নিজেকে জড়িয়ে নেওয়ার একটা পরিবেশ পাই। এই তো, এভাবেই চলে এলাম সুর ও সঙ্গীতের জগতে।
সুর-সঙ্গীতে প্রেরণা পেলেন কোথায়?
ওমর ফারুক সাহিল : সুর-সঙ্গীতে আমি প্রেরণা পেয়েছি আমার উস্তাদদের কাছে। তারা আমাকে উৎসাহ-অনুপ্রেরণা জোগাতেন। আমার গাওয়া কোন সঙ্গীত শুনলে বলতেন, ‘তুমি ভাল করবে, চর্চাটা ধরে রেখো’। ‘ধরে রেখো’- এর মধ্যেই আমি প্রেরণা পেয়েছি। সুর-ঙ্গীতের অনেকটা ব্যাপারই বলা চলে বংশ পরম্পরায় প্রাপ্ত। আমার বাবা ছিলেন মসজিদের ইমাম। তিনি সঙ্গীতপ্রিয় মানুষ। তিনি নিজেও সঙ্গীত কর
[caption id="attachment_4301" align="alignright" width="296"] ২০০৮ সালে বৈশাখী টিভিতে ‘হৃদয়ে রমজান’ শিরোনামে আমি প্রথম টিভিতে সঙ্গীত পরিবেশন করি। একই বছর এটিএন বাংলা টিভিতেও আমার একটি প্রোগ্রাম ছিল। এ অনুষ্ঠানগুলো খুব উপভোগ্য ও আনন্দের ছিল।[/caption]
তেন। নজরুল সঙ্গীত চর্চা করতেন। বাবার নজরুল সঙ্গীতের সাথে সম্পৃক্ততা আমি সঙ্গীতমুখি হওয়ার পেছনে অনেক বেশি প্রেরণা জুগিয়েছে।
সঙ্গীতে আপনার গুরু কে?
ওমর ফারুক সাহিল : আসলে সঙ্গীতে আমার নির্দিষ্ট কোন গুরু নেই। ইসলামি সঙ্গীতাঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত বড় বড় সব সঙ্গীতজ্ঞই আমার গুরু। আমি তাদের অনুসরণ করি। হাতেকলমে কারো কাছ থেকে শেখা হয়নি। আইনুদ্দিন আল আজাদ রহ. কে আমি আদর্শ হিসেবে মানি।
প্রথম মঞ্চে গাওয়ার অনুভূতি কেমন ছিল?
ওমর ফারুক সাহিল : ২০০৬ সালে ‘মাহে রমজানের গানে গানে’ ব্যানারে আমি আইনুদ্দিন আল আজাদের সঙ্গে মঞ্চে সঙ্গীত পরিবেশন করি। সঙ্গীতাঙ্গনের এক সম্রাটের সঙ্গে এক মঞ্চে গান করতে পারাটা আমার কাছে খুব ভাল লেগেছে। সম্ভবত ২০০৬-ই হবে- আমি উত্তরা এক কনসার্টে সঙ্গীত পরিবেশন করি, তখন শ্রোতাদের মাঝে একটা আগ্রহবোধ লক্ষ করি। আমার গান তারা রেকর্ড করার চেষ্টা করছে। এটা আমাকে খুব নাড়া দিয়েছিল। আমি শ্রোতাদের ভালবাসা পাচ্ছি এ অনুভব তো আনন্দেরই হবে কী বলেন? ২০০৮ সালে বৈশাখী টিভিতে ‘হৃদয়ে রমজান’ শিরোনামে আমি প্রথম টিভিতে সঙ্গীত পরিবেশন করি। একই বছর এটিএন বাংলা টিভিতেও আমার একটি প্রোগ্রাম ছিল। এ অনুষ্ঠানগুলো খুব উপভোগ্য ও আনন্দের ছিল।
আপনার নিজের গাওয়া, সুর করা প্রিয় সঙ্গীত কোনটি?
ওমর ফারুক সাহিল : আমার নিজের গাওয়া, নিজের সুর করা প্রিয় সঙ্গীত ‘হৃদয়ের সব কিছুই তোমার জন্য হে প্রিয় রাসুল’।
কোন ধরনের সঙ্গীত করতে ভালবাসেন?
ওমর ফারুক সাহিল : নজরুল সঙ্গীত। পাশাপাশি হামদ, নাত ও সমসাময়িক বিষয়ে সঙ্গীত করতে আমার ভাললাগে।
‘ঐশিস্বর’ নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
ওমর ফারুক সাহিল : ইসলামি সঙ্গীতের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে ইসলামের শোভা ও সৌন্দর্য পৌঁছে দেওয়া। একটি সুস্থ বিনোদন ক্ষেত্র তৈরি করা। আল্লাহ যদি চান তাহলে সঙ্গীতের মাধ্যমেও আমরা জাতিকে ভাল কিছু দিতে পারবো। রেডিও ও টিভিতে সাপ্তাহিক ধারাবাহিক অনুষ্ঠানকে জোরদার করার চেষ্টা করছি। সময়-সুযোগ সাধ্য সবকিছু মিলিয়ে আল্লাহ মেহেরবান হলে ইসলামি সঙ্গীতকে মূলধারার সুস্থ সঙ্গীতে পরিণত করার চেষ্টা করবো।
আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম /আরআর