মাহিন মাহমুদ; ওমান থেকে : মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ। ইন্ডিয়ান কর্মকর্তা। ওমানে আছেন প্রায় পনের বছর ধরে। তিনি যে মসজিদে তারাবি নামাজ পড়েন সেখানে তাবলিগ জামাত এসেছে। সাথীদের সবাই বাংলাদেশি। আব্দুল্লাহ তাদের জন্য এক ডিশ সুস্বাদু খেজুর নিয়ে এসেছেন। ওমানের সবচেয়ে দামি খেজুর। এর এক কেজির মূল্যই আট রিয়াল। বাংলাদেশি টাকায় পুরো ষোলশ টাকা! কিন্তু আব্দুল্লাহ সেটা কিনেছেন মাত্র দু'শ টাকায়। কারণ কী?
কারণটা জানা গেল তার জবানিতেই- ‘পবিত্র রমজান উপলক্ষে এটা এক বিশেষ ছাড়। রোজাদারদের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষের মূল্য অন্যান্য মাসের চেয়ে অনেক কমিয়ে দেয়া হয়। এটা ওমানের সুলতানেরও নির্দেশ।’ রমজানে ওমানের বাজার ঘুরে আব্দুল্লাহর কথার সত্যতা পাওয়া যায়।
রোজাদারদের জন্য এখানে প্রায় সকল পণ্যেরই বিশেষ ছাড় দেয়া হয়েছে। কেনাকাটা করতে গিয়ে ক্রেতাদের বাড়তি অর্থদণ্ডের মুখে পড়তে হচ্ছে না। ভোগান্তির শিকারও হতে হচ্ছে না কাউকে। স্বাচ্ছ্যন্দেই কেনাকাটা করতে পারছেন সবাই।
কেনাকাটায় বাড়তি অর্থদণ্ড দিতে হচ্ছে না দেখে প্রবাসী বাঙালিরাও খুশি! এমনই একজনের নাম মাহমুদুল হাসান। তিনি শপিংমল থেকে বের হচ্ছিলেন আনন্দিত মুখে। জানতে চাইলাম, 'কী কী কিনলেন আজ? 'এইতো, শসা, টমেটো, মুরগি। ইফতারের জন্য ফলফলাদি, এসব।'
জিনিসপত্রের দাম কেমন?' একেবারেই হাতের নাগালে। রোজার আগে যে টমেটো কিনতাম ৫০০ পয়সা (বাংলাদেশি মুদ্রায় একশো টাকা) কিলো, তা এখন পাচ্ছি মাত্র দুশো পয়সায়! পাঁচ কেজি শসার দাম আগে ছিল এক রিয়াল (বাংলা দুশো টাকা)। এখন সেটা অর্ধেক দামেই মিলছে। শুধু ইলিশ মাছের দামটাই আকাশছোঁযা।'
'কেন? ইলিশের দাম বেশি কেন?' প্রবাসী এই বাঙালি ক্ষোভের সঙ্গেই বললেন, 'কারণ, এইটা যে বাংলাদেশ থেকে আসে!' আক্ষেপ আরেক প্রবাসীর কন্ঠেও, ‘রমজানে বাংলাদেশে নিত্যপণ্যের দাম যে হারে বাড়ে, ওরা যদি বিদেশিদের কাছ থেকে শিক্ষা নিত, তাহলে রোজাদারদের দু'আর বরকতেই লাভবান হয়ে যেতে পারত। আমাদের দেশের ব্যবসায়ীদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে কবে?’
আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম /আরআর