শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ ।। ২৮ চৈত্র ১৪৩১ ।। ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
নিজেকে ইমাম মাহদী দাবি করা মাদরাসা শিক্ষক কারাগারে হারামাইনে আজ জুমার নামাজে ইমামতি করবেন যাঁরা ‘মার্চ ফর গাজা’য় অংশগ্রহণকারীদের জন্য জরুরি ৫ নির্দেশনা তালিবুল ইলমের আবশ্যকীয় পাঁচটি কাজ পাকিস্তানের সব সমস্যার পেছনে ইহুদি ষড়যন্ত্র থাকে: মাওলানা ফজলুর রহমান বাড়িতে বাবার লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিল নাহিদ মানবতার জন্য আপনিও আসুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে: শায়খ আহমাদুল্লাহ ইসরায়েলকে প্রতিহত করতে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ দরকার: বিএনপি মাদরাসাছাত্রদের কর্মসংস্থানের বিষয়ে কাজ করছে এনসিপি : নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী মুসলিম রাষ্ট্রের ওপর এখন সশস্ত্র ল’ড়াই ফরজ: মুফতি তাকি উসমানি

ওমানের বাঙালিদের গল্প

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

  oman 'নাম কী ভাই আপনার?'
'মাইফুল।'
নাম শুনে কিছুটা ধাক্কা মত খেলাম।
'মাইফুল না সাইফুল? নাম ঠিক আছে তো?'
'জ্বী, ঠিক আছে। আমার নাম মাইফুলই।'

    মাইফুল নামের ছেলেটির বাড়ি কুমিল্লার দেবিদ্বারে। ওমানে এসেছে প্রায় তিন বছর হল। তিন লাখ টাকা খরচ করে স্বপ্নের 'বিদেশে' এসে সে হতাশ। দেশ থেকে আনার সময় তাকে বলা হয়েছিল বেতন দিবে বিশ হাজার টাকা। আট ঘন্টা ডিউটি। প্রতিদিন ওভারটাইমের সুবিধা থাকবে। হেসে খেলে পঁচিশ তিরিশ হাজার টাকা দেশে পাঠানো যাবে।

    কিন্তু একমাস কাজ করার পর বেতন হাতে পেয়ে যখন জানল, বেতন মাত্র বারো হাজার টাকা, আকাশ ভেঙ্গে পড়ল তার মাথায়।
'মাত্র বারো হাজার! কেন?'
'বারো হাজারই। বাকিটা আমরা কী জানি? যার মাধ্যমে এসেছ, তাকে জিজ্ঞেস করো!'
মাইফুল অসহায় চোখে আকাশ দেখে। কাকে জিজ্ঞেস করবে? যাদের মাধ্যমে এসেছে তারা এখন ফোনই ধরছে না!

একই হতাশা জিনারুলের কন্ঠেও। উত্তরবঙ্গের ছেলে জিনারুল বলল, 'বড় আশা ছিল জীবনে একটা কিছু করে দেখাব। সে আশার গুড়ে বালি। বাঙালি হয়ে আরেক বাঙালির সঙ্গে দুই নম্বরি!... তিন চার বছর কোনরকম  কাটিয়ে যেতে পারলে ভুলেও আর বিদেশমুখো হব না।'

এই হলো প্রবাসী বাংলাদেশীদের জীবনাচার। দালালদের কথার মারপ্যাঁচে পড়ে ভিটে-বাড়ি বেচে, বড় আশা নিয়ে স্বপ্নের ভেলায় চড়ে বিদেশের মাটিতে পা রাখেন অনেকেই। অধিকাংশেরই আশাগুলো সফলতার মুখ দেখে না। মনের আশা-আকাঙ্খা মনেই গুমরে কাঁদে।  হতাশ হলেও মনোবল হারায় না কেউ কেউ।oman2

"কী আর করব? এসেই যখন পড়েছি, করে তো খেতে হবে"- এই সান্ত্বনায় বুক বাঁধতে হয় শেষ মেষ।

তারপরও। বাঙালি বলে কথা। জীবন থেমে থাকে না তাদের। বলা যায়, থামিয়ে রাখতে চায় না তারা। অবসর পেলেই নিজেদের মধ্যে আনন্দটুকু ভাগাভাগি করে নিতে চেষ্টার ত্রুটি করে না কেউই।

আমার সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল, তখন তাদের ইফতার আয়োজন চলছিল। কেউ তরমুজ কাটছে তো কেউ আপেল। কেউবা আবার শরবত বানাতে ব্যস্ত। কাউকে দেখা গেল দস্তরে ইফতারগুলো সাজাতে।

সবার চোখে মুখেই আনন্দ। ক্লান্তির ছাপ নেই কারো চেহারাতেই। মিলে মিশে হৈচৈ করে ইফতার আয়োজন সম্পন্ন করছে সবাই। দেখে কে বলবে, দেশে থাকা পরিবার-পরিজনের মুখে হাসি ফোটাতে রাতদিন এরা কী অমানসিক পরিশ্রমটাই না করে?

ওদের ভালো থাকা মানে দেশেরই ভালো থাকা। মহান আল্লাহ ওদের ভাল রাখুন সব সময়।

মাহিন মাহমুদ; ওমান থেকে

আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম /আরআর


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ