শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ ।। ২৮ চৈত্র ১৪৩১ ।। ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
হারামাইনে আজ জুমার নামাজে ইমামতি করবেন যাঁরা ‘মার্চ ফর গাজা’য় অংশগ্রহণকারীদের জন্য জরুরি ৫ নির্দেশনা তালিবুল ইলমের আবশ্যকীয় পাঁচটি কাজ পাকিস্তানের সব সমস্যার পেছনে ইহুদি ষড়যন্ত্র থাকে: মাওলানা ফজলুর রহমান বাড়িতে বাবার লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিল নাহিদ মানবতার জন্য আপনিও আসুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে: শায়খ আহমাদুল্লাহ ইসরায়েলকে প্রতিহত করতে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ দরকার: বিএনপি মাদরাসাছাত্রদের কর্মসংস্থানের বিষয়ে কাজ করছে এনসিপি : নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী মুসলিম রাষ্ট্রের ওপর এখন সশস্ত্র ল’ড়াই ফরজ: মুফতি তাকি উসমানি ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি সফল করার আহ্বান শায়খে চরমোনাই’র

ইন্দোনেশিয়ার ‌‌‌‌‘ইসতিকলাল মসজিদ’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ওয়ালি খান রাজু : দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়া ১৯৪৫ সালে নেদারল্যান্ড থেকে স্বাধীনতা লাভ করে, আর দেশের এই বিশাল অর্জন এর কৃতিত্ব স্বরুপ দেশটি স্বাধীনতা মসজিদ তৈরি করে যা ইসতিকলাল মসজিদ নামে সুপরিচিত। আরবিতে ইসতিকলাল এর বাংলা অর্থ হল স্বাধীনতা।

বিখ্যাত ইসতিকলাল মসজিদ স্থাপনের প্রথম প্রস্তাবটি করেন ইন্দোনেশিয়ার প্রথম ধর্মমন্ত্রী ওয়াহিদ হাশিম এবং আনোয়ার চক্রমেনিতো, এই আনোয়ার পরবর্তীতে ইসতিকলাল মসজিদ ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনীত হন।

এই দুইজন ১৯৫৩ সালে ইন্দোনেশিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট তথা ইন্দোনেশিয়ার প্রথম প্রেসিডেন্ট সুকর্ণকে ইসতিকলাল মসজিদ স্থাপনের প্রস্তাব করেন এবং প্রেসিডেন্ট সুকর্ণ সানন্দে রাজী হন এবং ইসতিকলাল মসজিদ নির্মাণের কাজ অতি দ্রুত শুরু করার নির্দেশ দেন।

প্রেসিডেন্ট সুকর্ণের প্রস্তাবে ইসতিকলাল মসজিদটির স্থান হিসেবে ইন্দোনেশিয়ার বিখ্যাত চার্চ "জাকার্তা ক্যাথেড্রাল " এর নিকটে মারদেকা স্কয়ারে গৃহীত হয়।

মসজিদটি নির্মাণে ১৭ বছর সময় লাগে, অবশেষে ১৯৭৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ইন্দোনেশিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সুহাত্রো ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় মসজিদ হিসেবে ইস্তিকলাল মসজিদের উদ্বোধন করেন।

২০১৩ সালে এই মসজিদটি দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বৃহৎ মসজিদ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। মসজিদটিতে একই সাথে ২ লক্ষ ২০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।

মসজিদটি এক অসাধারণ নির্মাণশৈলিতে নির্মিত। মসজিদটিতে ৭ টি প্রবেশ গেইট রয়েছে যা জান্নাতের ৭ টি প্রবেশের দরজাকে নির্দেশ করে।

মসজিদের প্রধান গম্বুজটি অর্ধচন্দ্র-তারা দ্বারা সুশোভিত, যা ইসলামের প্রতীককে নির্দেশ করে। মসজিদের গম্বুজগুলো ১২ টি স্তম্ভের উপর স্থাপিত আর ১২ দ্বারা হজরত মুহাম্মাদ সা এর জন্মদিবস তথা ১২ রবিউল আউয়ালকে বুঝানো হয়েছে। মসজিদটি ৫ তলা আর ৫ তলা দিয়ে ইসলাম ৫টি স্তম্ভের উপর প্রতিষ্ঠিত তা বুঝানো হয়েছে।

মসজিদের গম্বুজের ব্যাস ৮ মিটার, ৮ মিটার ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতার মাস আগস্ট মাস তথা বছরের ৮ম মাসকে বুঝানো হয়েছে। মসজিদের কিবলার দেয়াল তথা প্রধান দেয়াল আল্লাহ, মুহাম্মাদ আর সুরা ত্বহার ১৪ নং আয়াতের ক্যালিওগ্রাফী দ্বারা সুশোভিত।

মসজিদের একটি মিনার আল্লাহর একত্ববাদকে নির্দেশ করে, মিনারের দৈর্ঘ্য ৬৬.৬৬ মিটার যা পবিত্র কুরআনের ৬৬৬৬ আয়াতকে নির্দেশ করে। মসজিদের নিচতলায় রয়েছে একটি মাদ্রাসা, অনুষ্ঠান হল।

মসজিদের দক্ষিনভাগ ফুল বাগান দ্বারা বেষ্টিত। মসজিদটির পাশে রয়েছে ৪৫ মিটার সুউচ্চ ঝর্ণা। মসজিদটির পুর্ব পাশে সিলিং নদী প্রবাহিত। মসজিদটি পর্যটনের জন্যও বিখ্যাত, ইসতিকলাল মসজিদে এ পর্যন্ত বারাক ওবামা, বিল ক্লিনটন, মাহমুদ আহমাদিনেজাদ, এঞ্জেলা মার্কেল, মুয়াম্মার গাদ্দাফী, চার্লস প্রিন্সসহ বিভিন্ন বিশ্ব নেতারা ঘুরতে এসেছেন।

দেশ বিদেশ থেকে অসংখ্য পর্যটক প্রতিদিন ইসতিকলাল মসজিদের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন। ইসতিকলাল মসজিদ ইন্দোনেশিয়ার অন্যতম ইসলামী স্থাপত্য এবং দেশের স্বাধীনতার প্রতীক।


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ