আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে ভেনিজুয়েলায়। কয়েক সপ্তাহ ধরেই দেশটিতে এই অবস্থা চলছে। শুধু গত দুই সপ্তাহে খাদ্যের জন্য ভেনিজুয়েলাজুড়ে ৫০টির বেশি দাঙ্গা ও বিক্ষোভ হয়েছে। এসব ঘটনায় অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছে।
ভেনিজুয়েলায় খাবার পরিবহনকারী ট্রাকে কয়েকবার হামলা হয়েছে। খাদ্যপরিবহন ও বেকারিগুলোর নিরাপত্তা দিচ্ছেন সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষীরা।
সম্প্রতি একদল দাঙ্গাকারী কয়েকটি মুদি, ওষুধ ও মাংসের দোকানে হামলা চালানোর সময় পুলিশ দাঙ্গাকারীদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ছুড়লে এক শিশু নিহত হয়।
ভেনিজুয়েলার অর্থনৈতিক সংকটের কারণে দেশের চাহিদার মেটানোর মতো পর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদন সম্ভব হয়নি। দেশের বাইরে থেকেও প্রয়োজনীয় খাদ্য আমদানিতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। তাই এই তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।
ভেনিজুয়েলার সিমন বলিভার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশটির ৮৭ শতাংশ মানুষের কাছে খাদ্য কেনার মতো যথেষ্ট অর্থ নেই। আবার দেশটির শিক্ষক সংগঠনের এক গবেষণায় জানা গেছে, গড়পড়তা ভেনিজুয়েলার কোনো পরিবারের ৭২ শতাংশ আয়ই খরচ হচ্ছে খাবার কেনায়।
ভেনিজুয়েলার একটি পরিবারের কথা প্রকাশিত হয়েছে সংবাদমাধ্যমে। সেই পরিবারে আছেন শুধু মা আর মেয়ে। মা ক্যানসারের রোগী। মেয়ের ব্রেন টিউমার। অসুস্থ পরিবারটার নিত্য উপার্জন বলতে কিছুই নেই। দেশের সুসময়ে পারিবারিক পুঁজি যা কিছু জমেছিল, সেটুকুতেই মা-মেয়ের শেষ ক’টা দিন কেটে যাওয়া নিশ্চিত ছিল। এখন পরিবারটি আরও ধুঁকছে। রোজ দু’জনের খাবার জোগাড় করা সম্ভব হচ্ছে না। দু’বেলা খাওয়া তো দূরের কথা। এক জনের জন্য একবেলার মতো খাবার কোনওক্রমে জুটছে। এক দিন দুপুরে মা খাচ্ছে না। সে দিন মেয়ের উপোস। পরের দিন মেয়ে খাচ্ছেন। মায়ের উপোস করার পালা। মায়ের বয়স আর কঠিন রোগটার কথা খেয়াল রেখে অবশ্য মেয়ে একটু কৌশলী হয়েছেন। যে দিন দুপুরে খাবারের থালাটা তাঁর টেবিলে আসে, সে দিন খানিকটা খাওয়ার পর মেয়ে আজকাল বলেন, আর খেতে পারছেন না। উঠে যান থালা ছেড়ে। উচ্ছিষ্টটুকু খেয়ে নেন মা।
এরকম কঠিন দুঃসময়ের ভেতর দিয়ে যেতে হচ্ছে ভেনিজুয়েলার মানুষকে।
আওয়ার ইসলাম ২৪ ডটকম / এফএফ