হাসান তানভীর : আমাদের দেশটা আয়তনে ছোট হলেও জনসংখ্যায় কিন্তু পৃথিবীর অষ্টম বৃহত্তম। খোদ রাজধানী ঢাকার বুকেই বাস করে প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ। ঢাকায় বসবাসকারীদের জন্য গ্যাস পানির অপ্রতুলতার মতো শেষবারের জন্য ঘুমানোর জায়গাও ছিলো খুবই সীমিত।
বলছিলাম ঢাকার কবরস্থানের কথা। বিগত বছরগুলোতে ঢাকায় যে হারে মানুষ বেড়েছে সে অনুপাতে কবরস্থান বাড়েনি। ফলে একমাস যেতে না যেতেই একই কবরে অন্য মুর্দা দাফন করতে হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি এই অবস্থার উন্নতি হয়েছে। রায়ের বাজারে নির্মিত হয়েছে দেশের বৃহত্তম কবরস্থান।
এতোদিন ঢাকার মধ্যে আজিমপুর কবরস্থানই ছিলো সবচেয়ে বড়। কিন্তু রায়ের বাজার বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের পাশের এই কবরস্থানই এখন দেশের বৃহত্তম কবরস্থান। এটা শুধু বাংলাদেশের নয়, দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম কবরস্থানও বটে।
৯৬ দশমিক ২৩ একর এর আয়তন। মুর্দা দাফন করা যাবে এক বারে প্রায় ৮৫ হাজার। এটা শুধু মৃতদের শুয়ে থাকার জায়গাই নয়, এখানে রয়েছে দুটো লেক, দুটো মসজিদ এবং র্যাপিড একশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব-২) কার্যালয়। প্রবেশের জন্য রয়েছে তিনটি সুদৃশ্য গেইট। লোকজন এখানে ভোরে প্রাতভ্রমণের জন্য আসতে পারে। লেকের পাশ দিয়ে হাঁটার জন্য রয়েছে সুদৃশ্য বাঁধানো পথ। লেকের স্বচ্ছ পানি দেখলে এটাকে শুধু কবরস্থানই মনে হবে না, মনে হবে ঢাকা নামক মরুভূমির বুকে একখণ্ড মরুদ্যান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৫২২ কোটি ৬০ লাখ টাকা। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৪ স্বতন্ত্র ইঞ্জিনিয়ার ব্রিগেডের ৫-আর ই ব্যাটালিয়নের তত্ত্বাবধানে এটি নির্মিত হয়েছে। ২০১০ সালের জুলাই মাসে শুরু হয় এর নির্মাণ কাজ। শেষ হয় এ বছরের মার্চ মাসে। কবরস্থানটি উদ্বোধন করা হয় এ বছরের ২২ মার্চ। উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশারফ হোসেন।এরপরই কবরস্থানটি সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হয়।
ইতোমধ্যে কবরস্থানটিতে প্রায় দেড়শো মুর্দা দাফন সম্পন্ন হয়েছে। কবরস্থানটি বর্তমানে তত্ত্বাবধান করছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন।আপনার পরিচিত কিংবা পাশের কোনো মৃতব্যক্তির শেষ শয্যার জন্য উত্তম স্থান হতে পারে এই কবরস্থানটি।
আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম / আহসান