১৪২২ বঙ্গাব্দের পহেলা বৈশাখের (১৪ এপ্রিল, ২০১৫) বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে নারীদের যৌনহয়রানির মামলাটির তদন্ত শেষ হয়নি পরের বৈশাখে এসেও।
গত বছরের এদিন সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) এলাকায় কয়েকজন নারীকে যৌন হয়রানি করা হয়। যৌন হয়রানির শিকার নারীরা কেউ লোকলজ্জায় মামলা না করায় পুলিশ বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করে।
তদন্তকালে মামলার ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ ও সাক্ষীদের ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে ৮ জনকে শনাক্ত করা হয়। শনাক্ত ৮ আসামির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম, প্রিন্ট মিডিয়া এবং নিউজ পোর্টালে প্রকাশ করা হয়।
তাদের ধরিয়ে দিতে এক লাখ টাকা করে পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়। কিন্তু আসামিদের নাম-ঠিকানা না পাওয়ার অজুহাতে ২০১৫ সালের ২২ ডিসেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। ওই চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণও করে ট্রাইব্যুনাল। পরে শনাক্তকৃত আসামিদের মধ্যে মো. কামাল আটক হলে তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মামলাটি পুনঃতদন্তের আবেদন করা হয়। আটক কামালকে ২ দিনের রিমান্ডেও নেওয়া হয়।
ভিডিও ফুটেজ দেখে ৮ আসামিকে শনাক্ত করার পরেও পুলিশ একমাত্র কামাল ছাড়া অন্য আসামিদের হদিশ করতে পারেনি। এ বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি এ মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার কথা ছিল পিবিআই’র (পুলিশ তদন্ত বিভাগ)। কিন্তু তারা প্রতিবেদন দাখিলে ব্যর্থ হলে ঢাকার ৩ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জয়শ্রী সমাদ্দার মামলাটি ফের তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন।
ওই একই আদেশে বিচারক পুনঃতদন্তের প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১৭ এপ্রিল তারিখ ধার্য করে করেছেন।
২০১৫ সালের পহেলা বৈশাখ (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় কয়েকজন নারীকে যৌন হয়রানি করা হয়। এই ঘটনায় দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। প্রশ্নবিদ্ধ হয়, এসব অনুষ্ঠানে পুলিশের গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থাও।
ওইদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসহ আশপাশের এলাকায় পর্যাপ্ত ভিড় ছিল। এ ভিড়ের মধ্যে সংঘবদ্ধ একদল দুর্বৃত্ত ঘটনাস্থলে কয়েকজন নারীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। দুর্বৃত্তরা ভিড়ের মধ্যে কয়েকজন নারীর শাড়ি ধরেও টান দেয়।