বুধবার, ০৮ জানুয়ারি ২০২৫ ।। ২৪ পৌষ ১৪৩১ ।। ৮ রজব ১৪৪৬


খালেদা জিয়ার বিদেশ যাত্রা, শাহজালাল বিমানবন্দরে কড়া নিরাপত্তা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ছবি: সংগ্রহিত

উন্নত চিকিৎসার জন্য আজ মঙ্গলবার রাতে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে যাত্রা করবেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার এই  বিদেশযাত্রা উপলক্ষে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাকে বিদায় জানানোর সময় জনদুর্ভোগ এড়াতে ঢাকা মহানগর বিএনপি ও এর সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপি।

খালেদা জিয়া মঙ্গলবার ( ৭ জানুয়ারি ) রাত ৮টায় তার গুলশানের বাসা থেকে হযরত শাহ্‌জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রওয়ানা হবে। রাত ৯টায় তিনি বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন। রাত ১০টায় কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তিনি ঢাকা ছেড়ে যাবেন। সাড়ে সাত বছর পর লন্ডনে ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হবে। তবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বাসায় নয়, খালেদা জিয়াকে সরাসরি নেওয়া হবে লন্ডনের হাসপাতালে। তাকে নিতে কাতারের আমিরের পাঠানো এয়ার অ্যাম্বুলেন্স গতকাল সোমবার ঢাকায় এসেছে।

 

সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জন্য কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বিমানবন্দরে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থার সমম্বয়ে বৈঠক করেছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ( বেবিচক )। কর্মকর্তারা জানান, বিএনপির বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর জমায়েতে যাতে নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয়, সে জন্য বিশেষ এই সতর্কাবস্থা।

বিমানবন্দর থানার ওসি তাসলিমা আক্তার জানান, ১০ প্লাটুন পুলিশ থাকবে। এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব, বেবিচকের এ্যাফসেক বাহিনীসহ সোয়াটের মতো স্পেশাল টিমও থাকছে।

বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া জানান, বিমানবন্দরে নিরাপত্তাজনিত কোনো সমস্যা যাতে না হয়, সে লক্ষ্যে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দরে প্রবেশে কড়াকড়ি থাকবে।

 

জনদুর্ভোগ এড়াতে নেতাকর্মীদের প্রতি বিএনপির নির্দেশনা

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জনদুর্ভোগ এড়াতে নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগর (উত্তর ও দক্ষিণ) বিএনপি এবং সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীকে সুশৃঙ্খলভাবে রাস্তার ফুটপাতে দাঁড়িয়ে খালেদা জিয়াকে বিদায় জানানোর জন্য অনুরোধ করা হলো, যাতে রাস্তায় যানবাহন ও পথচারী চলাচলে কোনো বিঘ্ন না ঘটে।

এর আগে বিএনপির নেতারা জানিয়েছেন, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে মঙ্গলবার রাত ১০টায় কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তিনি ঢাকা ছেড়ে যাবেন। যুক্তরাজ্যে পৌঁছানোর পর সরাসরি তাকে লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি করা হবে। সেখানে কিছুদিন চিকিৎসার পর যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় হসপিটালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নেওয়ার কথা রয়েছে।

 

৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, কিডনি সমস্যাসহ নানা স্বাস্থ্য জটিলতায় দীর্ঘদিন ভুগছেন। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে পরের দুই বছর দুই মামলায় দণ্ডিত হয়ে তিনি পুরান ঢাকার পরিত্যক্ত কারাগারে একাকী কাটান। নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত হলেও পরের চার বছরের বেশি সময় হাসপাতালে কাটে নানা রোগে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার। বারবার আবেদনেও আওয়ামী লীগ সরকার চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানোর অনুমতি দেয়নি। ২০১৭ সালের জুলাইয়ে সর্বশেষ তিনি বিদেশ যান।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পরের দিনই তার সাজা মওকুফ করেন রাষ্ট্রপতি। তবে নিজেকে নির্দোষ দাবি করা খালেদা জিয়া আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। এক মামলায় খালাস পেয়েছেন। অন্যটিতে তার সাজা স্থগিত হয়েছে আপিল বিভাগে। এর মাধ্যমে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার যোগ্য হয়েছেন তিনি।

বিনু/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ